মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর নিজ কক্ষপথে পৌঁছানোর পর শুরু হওয়া ইন অরবিট টেস্ট (আইওটি) সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রকল্প পরিচালক মো. মেসবাহউজ্জামান। সেপ্টেম্বরের পর স্যাটেলাইট ব্যবহার শুরু করা যাবে বলে জানান তিনি।
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশের খবরকে বিষয়টি নিশ্চিত করে মেসবাহউজ্জামান বলেন, ১১ মে মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ তার নিজ কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর পর শুরু হয় ইন অরবিট টেস্ট। যেটি তিন সপ্তাহের মতো চলার পর গত সপ্তাহেই তার আইওটি টেস্টসহ আরো কিছু পরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা স্যাটেলাইটটিকে গ্রহণ করেছি। তবে আরো কিছু কাজ বাকি আছে এখনো। এই টেস্টেই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে স্যাটেলাইটটি বাণিজ্যিক সেবা দেওয়ার জন্য ঠিকঠাক মতো কাজ করছে কি না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের স্যাটেলাইটটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগে চূড়ান্তভাবে নেটওয়ার্ক এক্সেপ্টনেস টেস্টসহ সেকেন্ড ফেজের কিছু পরীক্ষা আছে। এগুলো শেষ করতে আরো দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে। সেপ্টেম্বর নাগাদ এই নেটওয়ার্ক এক্সেপ্টনেসের কাজগুলো শেষ হলে আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারব। যেহেতু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ একটু দেরিতে হয়েছে, তাই এই কাজগুলোও পিছিয়ে গিয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
মো. মেসবাহউজ্জামান আরো বলেন, আইওটি হওয়ার পরই গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশনে স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রণ আসার কাজ শুরু হয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত এটি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর নির্মাণ করা কোম্পানি থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেসের তিন গ্রাউন্ড স্টেশনে রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে অবস্থিত দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নিয়ে তিনি বলেন, এগুলো নির্মাণকাজ শেষ। এখন এখানেও পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। কারণ ধীরে ধীরে এখান থেকে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরের কাজ শুরু হবে। যদিও থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেসের স্যাটেলাইট ইঞ্জিনিয়াররাই গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশনের সব কাজ দেখভাল করছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারদেরও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গ্রাউন্ড স্টেশন বুঝিয়ে নিতে হলেও মোটামুটি কিছু সময় লাগবে। আরো কিছু পরীক্ষার শেষ হলেই এগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তবে আরো কিছু আনুষ্ঠানিকতার জন্য এই প্রকল্পের সময়কাল আমাদের বাড়িয়ে নিতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সব কিছু শেষ করে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে সেবা পেতে সব মিলে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। তবে এর মধ্যে তাদের বাণিজ্যিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে রাখা হবে।
এদিকে দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের জন্য ফ্রান্সের কোম্পানি থ্যালাস এরই মধ্যে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। আর দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সকল কাজে অর্থায়ন করতেও নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে ফ্রান্স সরকার।