আইপিএল

চেন্নাইয়ের জয়

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১২ এপ্রিল, ২০১৮

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দ্বিতীয় ম্যাচেই হারের কবলে পড়ল কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। মঙ্গলবার রাতে চেন্নাই সুপার কিংসের সামনে ২০৩ রানের টার্গেট খাড়া করেও ৫ উইকেটে হারতে হলো নাইটদের। রাসেল ঝড়েও কাজ হলো না কলকাতার। স্যাম বিলিংসের পাল্টা ঝড়ে দারুণ এক জয় পায় চেন্নাই।

প্রশ্ন উঠছে, বিনয় কুমারের মতো বোলারকে কি দলে রাখা হয়েছে বিপক্ষকে ম্যাচ ‘উপহার’ দেওয়ার জন্য? গত ম্যাচেও ভালো বল না করা সত্ত্বেও কেন তাকে দলে রাখা হয়েছিল? এর পরেও কি কমলেশ নাগারকোটির মতো তরুণ পেসাররা সুযোগ পাবেন না? একই সঙ্গে দীনেশ কার্তিকের নেতৃত্বগুণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ১৭ রান। বিনয় কুমারের প্রথম ডেলিভারি কোমরের ওপরে থাকায় নো বল হয়। তাতে অবশ্য ছক্কা হাঁকাতে ভোলেননি ডোয়াইন ব্রাভো। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম বলে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চেন্নাইকে জয় এনে দেন রবীন্দ্র জাদেজা। দুজনেই ১১ রানে অপরাজিত থাকেন। সিএসকের জয়ের আসল কারিগর কিন্তু স্যাম বিলিংস। ২৩ বলে তার ঝড়ো ৫৬ রানের ইনিংসই কলকাতার জয়ের আশায় পানি ঢেলে দেয়।

টার্গেট কঠিন হলেও চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার শেন ওয়াটসন ও অম্বাতি রাইডু দ্রুতগতিতে রান তোলার চেষ্টা করেন। ৫ ওভারে ৬৩ রানে পৌঁছে যায় চেন্নাই। বিনয় কুমার প্রথম ওভারেই দেন ১৬ রান। স্পিনার পীযূষ চাওলাও সুবিধা করতে পারেননি। শুরুতে বেশ চাপে ছিল কলকাতা। টম কুরান কলকাতাকে প্রথম সাফল্যটি এনে দেন। তার বলে তুলে মারতে গিয়ে ওয়াটসন ৪২ রানে আউট হন। অষ্টম ওভারে রান চেক দেন সুনীল নারিন। পরের ওভারে কুলদীপের বলে আউট হন অম্বাতি রাইডু (৩৯)। ফলে চেন্নাইয়ের আস্কিং রেট আরো বেড়ে যায়। মহেন্দ্র সিং ধোনিও ব্যাটে-বলে ঠিকমতো সংযোগ ঘটাতে পারছিলেন না। তার মধ্যে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান রায়না। শেষ পর্যন্ত ১২ বলে ১৪ রান করে নারিনের বলে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন রায়না।

প্রথম দিকে বেশ ঢিমেতালেই ব্যাট করছিলেন ধোনি। চাপের মুখে তিনিও চালিয়ে খেলতে বাধ্য হন। হঠাৎ তিনি জ্বলে ওঠায় ম্যাচে ফেরে চেন্নাই। দুরন্ত ব্যাটিং করেন স্যাম বিলিংস। শেষ চার ওভারে জয়ের জন্য চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ৫১ রান। কিন্তু ১৭তম ওভারে চাওলার বলে ধোনির ক্যাচ ধরেন উইকেটরক্ষক দীনেশ কার্তিক। ২৮ বলে ২৫ রান করে মাঠ ছাড়েন ধোনি।

অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ম্যাচটা কলকাতার হাতের মুঠোয়। কিন্তু স্যাম বিলিংস বিধ্বংসী ব্যাটিং করে কলকাতাকে পাল্টা চাপে ফেলে দেন। তিনি ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ৯ বলে যখন ১৯ রান দরকার, তখন ছক্কা মারতে গিয়ে বিলিংস আউট হন। তিনি ২৩ বলে ৫৬ রান করেন। বিলিংসের ইনিংসে রয়েছে পাঁচটি ছক্কা ও দুটি চার।

এর আগে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেন চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক ধোনি। ইডেনে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করেন নারিন। প্রথম ওভারে চাহারের শেষ দুটি ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকান তিনি। কলকাতা ওই ওভারে তোলে ১৮ রান। যদিও পরের ওভারে হরভজন সিংকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে ১২ রানে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন নারিন। ২২ রানে আউট হন ক্রিস লিন। আট ওভারে কলকাতা ৮০ রান তুলে ফেলেছিল। কারণ, ঝড়ো ব্যাটিং করছিলেন রবীন উথাপ্পা। তিনটি বিশাল ছক্কা হাঁকান তিনি। ২৯ করে উথাপ্পা রান আউট হতেই কলকাতার রানের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। তার আগেই অবশ্য মাঠ ছাড়েন নীতিন রানা (১৬)। দীনেশ কার্তিক উইকেটে টিকে থেকে দলকে ভালো জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে যোগ্য সঙ্গত দেন ক্যারিবিয়ান তারকা অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। তারা যোগ করেন ৭৬ রান। গ্যালারিতে বসে গলা ফাটান কলকাতার অন্যতম মালিক শাহরুখ খান। মিডল অর্ডারে কলকাতা কিছুটা চাপে পড়ে যাওয়ার পর আন্দ্রে রাসেল ছক্কা হাঁকিয়ে ২৬ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। ১৯তম ওভারে ডোয়েন ব্রাভোর পর পর তিনটি বলে ছক্কা হাঁকিয়ে রাসেল বুঝিয়ে দিলেন তিনি এখনো গেম চেঞ্জার। ইনিংসটার রঙ একাই বদলে দেন তিনি। পঞ্চাশ পেরোনোর পর তার ব্যাটে যেন ঝড় ওঠে। ১১টি ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু কুরান দু’টি বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি। পঞ্চম বলে কোনোরকমে সিঙ্গলস নেন কুরান। শেষ বলে ফের ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটান রাসেল। ৩৬ বলে ৮৮ রানে অপরাজিত থাকেন রাসেল। ৬ উইকেটে কলকাতা নাইট রাইডার্স তোলে ২০২ রান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads