• রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫ | ১৬ চৈত্র ১৪৩১ | ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬
‘সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া শুভঙ্করের ফাঁকি’

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন

সংরক্ষিত ছবি

আইন-আদালত

‘সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া শুভঙ্করের ফাঁকি’

সন্তুষ্ট পরিবহন মালিকরা

  • রেজাউল করিম লাবলু
  • প্রকাশিত ৭ অগাস্ট, ২০১৮

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর খসড়াকে শুভঙ্করের ফাঁকি বলে আখ্যায়িত করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেছেন, খসড়া আইন প্রণয়নের আগে তাদের সঙ্গে বসার কথা থাকলেও সরকারের কেউ তাদেরকে ডাকেননি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর আইনের কথা বললেও তা রক্ষা হয়নি খসড়া আইনে। বরাবরের মতো মালিক-শ্রমিক ও সরকারের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই আইন করা হয়েছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে ৯ দফা দাবি জানিয়েছিল তার প্রথম দাবিই হচ্ছে ‘বেপরোয়া চালককে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।’ কিন্তু খসড়া আইনে কৌশলে তা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। 

তবে খসড়া আইন নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বাংলাদেশের খবরকে বলেন, খসড়ায় যা বলেছে তার সঙ্গে তারা সম্পূর্ণ একমত। এ নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি রহিম বক্স দুদু বাংলাদেশের খবরকে বলেন, এই খসড়া আইন নিয়ে তারা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে তারা সরকারের সঙ্গে বসবে। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ও হানিফ পরিবহনের মালিক কফিল উদ্দিন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সড়ক পরিবহন আইন যা মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়েছে তাতে শাস্তি তিন বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর হলেও তাদের আপত্তি নেই। একই সঙ্গে সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গাড়ির ফিটনেস ঠিক করতে উদ্যোগী হওয়া বাস মালিকরা সরকারের কাছে এক মাস সময় চেয়েছেন। সরকারের কাছে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করা হবে।

অনুমোদিত সড়ক পরিবহন আইনে যাত্রীস্বার্থ রক্ষা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। গতকাল সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত নতুন আইনে যাত্রীস্বার্থ উপেক্ষা করে অর্থাৎ যাত্রীর প্রতিনিধিত্ব আইনে অন্তর্ভুক্ত না করে পূর্বের ন্যায় মালিক-শ্রমিক-সরকার মিলেমিশে গণপরিবহন পরিচালনা, বাসভাড়া নির্ধারণ, আঞ্চলিক পরিবহন পরিচালনা কমিটি, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল, সড়ক পরিবহন উপদেষ্টাসহ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সব ক্ষেত্রে যাত্রীর প্রতিনিধিত্ব উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাখা হয়নি।

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালকের সর্বোচ্চ সাজা ৫ বছর রাখা হয়েছে। অথচ হাইকোর্টের নির্দেশনা ছিল ৭ বছর। আর তারা চেয়েছিলেন ১০ বছর। খসড়ায় সর্বোচ্চ শাস্তির কথা বলা হলেও সর্বনিম্ন শাস্তির কথা বলা হয়নি। বিষয়টি শুভঙ্করের ফাঁকি। এটাও পরিষ্কার করতে হবে। ক্ষতিপূরণের জন্য যে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হবে সেখানে সরকার, চালক ও মালিকের প্রতিনিধি থাকলেই চলবে না, সেখানে থাকতে হবে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের প্রতিনিধি।

তিনি বলেন, যে শিরোনামে আইনটি করা হয়েছে তা নিয়েও তাদের আপত্তি আছে। তারা সড়ক নিরাপত্তা ও সড়ক পরিবহন আইন শিরোনামে আইনটি চেয়েছিলেন। কারণ তারা মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালক, মালিকের জেল জরিমানাতে সমাধান নয়। দুর্ঘটনার কারণ জানার পর তা লাঘবে প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ, ত্রুটি সংশোধন ও চালককে দক্ষ করে গড়ে তুলতে ইনস্টিটিউশন গড়ে তুলতে প্রয়োজন পরিকল্পনা ও বাজেটের, যা সড়ক নিরাপত্তার মাধ্যমেই সম্ভব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads