বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঘোষিত তিন বিভাগের অনেক আসনে একাধিক প্রার্থী রাখা হয়েছে। অন্য বিভাগের আসনগুলোর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা না হলেও বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকজন সিনিয়র নেতা তাদের মনোনয়নের চিঠি নিয়ে গেছেন। আজ মঙ্গলবার বাকি সব আসনের প্রার্থীদের হাতে চিঠি দেওয়া হবে। গতকাল বেলা সাড়ে ৩টায় দলের চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা শুরু করে বিএনপি।
দলের প্রার্থীদের প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হবে এমন খবরে সকাল থেকেই মনোনয়নপ্রত্যাশীরা গুলশান কার্যালয়ে নিজ সমর্থক নেতাকর্মীদের নিয়ে ভিড় করেন। প্রত্যয়নপত্র পাওয়ার পর প্রার্থী ও তার সমর্থকদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। গুলশান কার্যালয়ের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা যে প্রত্যয়নপত্র প্রস্তুত করে দিচ্ছেন সেটি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা প্রার্থীদের কাছে তুলে দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে রংপুর, বরিশাল, রাজশাহীর পাশাপাশি অন্য বিভাগের কয়েকজন প্রার্থীকে তাদের প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। যেগুলো বাকি থাকবে সেগুলো আগামীকাল (মঙ্গলবার) দেওয়া হবে।
শুরুতেই দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনের জন্য প্রত্যয়নপত্র দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়ার প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান লালু।
বিকালে বরিশাল বিভাগের প্রত্যয়নপত্র বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়। সন্ধ্যায় রংপুর বিভাগ এবং রাতে রাজশাহী বিভাগের দলের মনোনীত প্রার্থীদের হাতে প্রত্যয়নপত্র তুলে দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর করেছেন তিনি নিজেই। তিন বিভাগের সংসদীয় অনেক আসনে ৩ জন পর্যন্ত প্রার্থীর নাম রাখা হয়েছে। একাধিক প্রার্থীর নাম রাখার কারণ হিসেবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনি বা যেকোনো কারণে একজন নির্বাচন করতে না পারলে যাতে আরেকজন করতে পারেন সেজন্যই একাধিক প্রার্থী রাখা হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করবে না। তবে যারা প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন—
বরিশাল বিভাগ : বরগুনা-১ আসনে মতিউর রহমান তালুকদার, নজরুল ইসলাম মোল্লা, বরগুনা-২ নূরুল ইসলাম মণি, পটুয়াখালী-১ আলতাফ হোসেন চৌধুরী/তার স্ত্রী সুরাইয়া আখতার চৌধুরী, পটুয়াখালী-২ শহীদুল আলম তালুকদার/সালমা আলম, পটুয়াখালী-৩ হাসান মামুন/মো. শাহজাহান ও আওয়ামী লীগ থেকে যোগ দেওয়া গোলাম মাওলা রনি, পটুয়াখালী-৪ এবিএম মোশাররফ হোসেন ও মনিরুজ্জামান মুনির। ঝালকাঠি-১ শাহজাহান ওমর, ঝালকাঠি-২ রফিকুল ইসলাম জামাল/ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো, জেবা খান, পিরোজপুর-৩ রুহুল আমিন দুলাল, শাহজাহান মিয়া, বরিশাল-১ আসনে জহিরউদ্দিন স্বপন, আবদুস সোবহান, বরিশাল-২ সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু, শহিদুল হক জামাল, বরিশাল-৩ জয়নুল আবেদীন, সেলিমা রহমান, বরিশাল-৪ মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, রাজীব আহসান, বরিশাল-৫ মজিবর রহমান সারোয়ার, এবাদুল হক চান, বরিশাল-৬ আসনে আবুল হোসেন খান, রশিদ খান, ভোলা-২ হাফিজ ইব্রাহিম, রফিকুল ইসলাম মণি, ভোলা-৩ হাফিজউদ্দিন আহমেদ/কামাল হোসেন, ভোলা-৪ নাজিমউদ্দিন আলম, মো. নূরুল ইসলাম।
এদিকে নিজ আসনে আরেক প্রার্থীর নাম দেখে বরিশাল-২ আসনের মনোনয়নপ্রাপ্ত সারফুদ্দীন আহমেদ সান্টু তার প্রত্যয়নপত্র প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে। প্রত্যয়নপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরনোদের প্রাধান্য দিয়েছে বিএনপি। এক্ষেত্রে ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।