ছবি : সংগৃহীত

আবহমান

১লা বৈশাখে ইলিশ নিয়ে বাঙালির বিভক্তি

  • প্রকাশিত ১৫ এপ্রিল, ২০১৮

কয়েক বছর ধরে পহেলা বৈশাখে ইলিশ-বিরোধী একটি জনমত গড়ে উঠেছে। তারা মনে করে, পহেলা বৈশাখ উদযাপনে ইলিশ মাছের রসনা-বিলাস বাঙালির ঐতিহ্য নয়। আর এ সময় ইলিশ খাওয়াও দুরূহ। দাম বেড়ে যায়, জাটকা ইলিশ ধরা পড়ে। তাতেও যে বছরের প্রথম দিনে বাঙালির ইলিশ খাওয়া বন্ধ আছে তা নয়। অনেকে আগেই কিনে ফ্রিজে রেখে দেয়। যারা না পারে তারা অন্তত জাটকা ইলিশ হলেও কেনে। লুকিয়ে কিনে ইলিশ-বিরোধী স্লোগানও দেয় অনেকে। ইলিশ নিয়ে বাঙালি আজ দু’ভাগে বিভক্ত।

একদল বলে একদিন ইলিশ না খেলে কী হয়। আরেক দল বলে, পয়লা বৈশাখের দিন খাব না তো কোন দিন খাব! এদিন ইলিশ ছাড়া জমে! না খেলে কী হয় এ কথা বলে লাভ নাই। পয়লা বৈশাখ পালন না করলেই-বা কী হয়! পয়লা বৈশাখ যেমন বাঙালির সংস্কৃতি, ইলিশ এখন সংস্কৃতির অংশ। বিরোধী দল পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলে, ইলিশ কোনোদিনই বাঙালি সংস্কৃতির অংশ ছিল না। পয়লা বৈশাখে ইলিশ আসছে এই সেদিন। ইলিশপক্ষ পাল্টা যুক্তি দেয়, সংস্কৃতি কোনো বদ্ধমূল ধারণা না, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংস্কৃতি বদলায়। এখন যেহেতু ইলিশের সংস্কৃতি, ইলিশ খাবই। ঈদ যেমন সেমাই ছাড়া হয় না, পয়লা বৈশাখও ইলিশ ছাড়া হয় না।

বরফ দিয়ে রাখলেও ইলিশের গা থেকে বেরোচ্ছে আগুন! এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে দু’বছর ধরে। পয়লা বৈশাখের আগে ফেসবুকে ইলিশের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়। বাজারে এর মধ্যেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মাঝারি মাপের ইলিশের দাম বেড়ে গেছে কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার থেকে বেড়ে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ পর্যন্ত হয়েছে। আরেকটু বড় হলে ইলিশের গায়ে হাত দেওয়া যায় না। বরফ দিয়ে রাখলেও গা থেকে যেন আগুন ঝরে। সেগুলো আর কেজি দরে না, বাতাসের ওপর দাম ওঠায় ক্রেতারা, আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার। জাটকা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে। নিম্নআয়ের লোকজন সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। অনেক প্রচারণা সত্ত্বেও জাটকা ধরা ঠেকানো যাচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চাঁদপুর, মেঘনা, পদ্মায় চলছে জাটকা নিধনের মহোৎসব। ৫ থেকে ১০ ইঞ্চি মাপের জাটকায় ভরে গেছে বাজার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads