হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে বালুচর

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে বালুচর

  • জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল, কুষ্টিয়া
  • প্রকাশিত ৫ এপ্রিল, ২০২১

পদ্মায় পানি কমে যাওয়ায় এর প্রধান শাখা নদী গড়াই শুকিয়ে গেছে। গড়াই নদীর ওপর দিয়ে মানুষ হেঁটে পার হচ্ছেন। অন্যদিকে দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের পাম্প বন্ধ থাকার পর আবার চালু হয়েছে। পাঁচ বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম পানি বইছে পদ্মা নদীতে। যৌথ নদী কমিশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মার্চের শেষের দিকে কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে মাত্র ২৩ হাজার কিউসেকের মতো পানি প্রবাহ রয়েছে। যৌথ নদী কমিশনের হিসাবে, এর আগে ২০১৬ সালে মার্চের শেষে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল ২১ হাজার ৭১০ কিউসেক। এরপর এখানে পানির প্রবাহ কখনো ৩০ হাজার কিউসেকের নিচে নামেনি। পদ্মায় পানি কমে যাওয়ায় এর প্রধান শাখা নদী গড়াই শুকিয়ে গেছে।

১৯৯৬ সালে সই হওয়া গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ১১ থেকে ২০ মার্চ, ১ থেকে ১০ এপ্রিল এবং ২১ থেকে ৩০ এপ্রিল গ্যারান্টিযুক্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাবে। বাকি সময়ে ভারত পাবে গ্যারান্টিযুক্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি। সে অনুযায়ী, এখন অর্থাৎ ২১ থেকে ৩১ মার্চ চলছে ভারতের প্রাপ্যতার সময়। বাংলাদেশ এখন পাচ্ছে অবশিষ্ট পানি।

যৌথ নদী কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগের ১০ দিনে (১১-২০মার্চ) যখন বাংলাদেশ গ্যারান্টিযুক্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পেয়েছে, তখন ভারত পেয়েছিল অবশিষ্ট ২৪ হাজার ৫২২ কিউসেক। গঙ্গা নদী পদ্মা নামে বাংলাদেশে প্রবেশের পর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয়।

গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচপ্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম যৌথ নদী কমিশনের সূত্র উল্লেখ করে জানান, মার্চের শেষে এসে পদ্মায় পানি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২৩ হাজার কিউসেকের মতো। যে কারণে পানি ৪.১ মিটার রিডিউসড লেভেলে (আরএল) নেমে আসায় গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যার পর থেকে বন্ধ রাখা হয়। পদ্মার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় তিনদিন ধরে আবার পাম্প চালু হয়েছে।

পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল করীম বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে মরুকরণ থেকে বাঁচাতে হলে পদ্মায় পানি লাগবে। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মার পানি ধরে রাখতে গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের যে পরিকল্পনা ছিল সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। বর্ষা মৌসুমে ব্যারেজে পানি ধরে রেখে শুষ্ক মৌসুমে সহজেই ব্যবহার করা যেতে পারে।

এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী কুষ্টিয়ার গড়াই। এটি পদ্মার প্রধান শাখা নদী। কুষ্টিয়া, মাগুরা, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, যশোর ও খুলনা হয়ে বিভিন্ন নামে এই নদী সুন্দরবনে গিয়ে সমুদ্রে মিশেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, পরিকল্পিত খননে এবার নদীতে পানিপ্রবাহ বেশি আছে। আর এ কারণে সুন্দরবনসহ সমুদ্র উপকূলে কমছে লবণাক্ততার মাত্রা। এ বছর শুষ্ক মৌসুমেও কুষ্টিয়া শহরের কাছে গড়াইয়ে কিছুটা পানিপ্রবাহ আছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম জহুরুল হক জানান, নাব্যতা ধরে রাখতে টানা খনন চলছে গড়াইয়ে। সাতটি ড্রেজার দিয়ে উৎসমুখ কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া থেকে কুমারখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার খনন হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads