হজের দিনভিত্তিক আমল ও কার্যক্রম

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা

সংরক্ষিত ছবি

ধর্ম

হজের দিনভিত্তিক আমল ও কার্যক্রম

  • প্রকাশিত ১ অগাস্ট, ২০১৮

ড. মাওলানা মুহাম্মাদ শামসুল হক সিদ্দিক

 

প্রথম দিন : ৮ জিলহজ

ইহরাম অবস্থায় (ফরজ) মক্কা থেকে হজের নিয়তে মিনায় রওনা হোন। এ দিনের কাজ দুটি। ১. ইহরাম (ফরজ)  ২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা (সুন্নাত)। জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ৯ তারিখ ফজর সর্বমোট পাঁচ ওয়াক্ত।

দ্বিতীয় দিন : ৯ জিলহজ 

জিলহজ মাসের ৯ তারিখকে ‘ইয়াউমে আরাফা’—আরাফা দিবস বলে। আরাফা দিবস আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিবস। আল্লাহতায়ালা আরাফা দিবসে তাঁর বান্দাদের সবচেয়ে বেশি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। দ্বিতীয় দিন ৯ জিলহজ আরাফায় অবস্থান ফরজ। ফজরের নামাজ মিনায় পড়ে আরাফার ময়দানের দিকে রওনা করতে হয়। প্রয়োজনে ফজরের আগের রাতেও আরাফার উদ্দেশে রওনা হওয়া যায়। সেখানে সূর্য হেলার পর অর্থাৎ ১২টার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করতে হবে। ওয়াক্ত মতো তাঁবুতে বা আরাফার ময়দানে (মসজিদে নামিরায় না গেলে) যেকোনো স্থানে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করুন। উল্লেখ্য, আরাফার ময়দানে মসজিদে নামিরায় জোহর ও আসরের জামাত এক আজান, দুই ইকামতে একত্রে পরপর আদায় করা হয়। ৯ জিলহজ ভোরে ফজরের সালাত মিনায় আদায় করে সূর্যোদয়ের পর ‘তালবিয়া’ পড়া অবস্থায় রওনা হতে হয় আরাফা অভিমুখে। তবে বর্তমানে হজযাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ফজরের পূর্বেই নিয়ে যাওয়া হয় আরাফায়। এটা নিশ্চয়ই সুন্নতের খেলাফ, তবে সমস্যার কারণে এ সুন্নত ছুটে গেলে কোনো সমস্যা হবে না।

উকুফে আরাফার নিয়ম

১. সম্ভব হলে আরাফার ময়দানে প্রবেশের পূর্বে বা পরে গোসল করে নেওয়া। ২. জোহরের সময়ে জোহর-আসর একসঙ্গে, এক আজান ও দুই ইকামতে কাসর করে আদায় করা। আসর ও জোহরের আগে-পরে কোনো সুন্নত নফল সালাত আদায় না করা। সালাতের সময় নারীরা পুরুষের পেছনে একই জামাতে শরিক হতে পারবেন। ৩. সালাত শেষে দোয়া-মোনাজাতে ব্যস্ত হওয়া। ৪. ক্লান্তি চলে এলে সহযাত্রী হাজিদের সঙ্গে কল্যাণকর আলাপচারিতার মাধ্যমে ক্লান্তি দূর করা যেতে পারে। অথবা ভালো কোনো ধর্মীয় বই পড়েও কিছু সময় কাটানো যেতে পারে। ৫. যারা দিনের বেলায় উকুফে আরাফা করবে তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া-জিকির তথা উকুফ চালিয়ে যাবে আর যারা ৯ তারিখ দিবাগত রাতে আরাফার ময়দানে আসবে, সুবেহ সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত সামান্য সময় অবস্থান করলেই উকুফ হয়ে যাবে। ৬. নারীদের পর্দা-পুশিদার ব্যাপারে সজাগ থাকা। ৭. আরাফার ময়দানের ভেতরে উকুফ হচ্ছে কি-না সে ব্যাপারে সজাগ থাকা। কেননা আরাফার বাইরে উকুফ করলে হজ হবে না। ৮. জাবালে আরাফায় ওঠার কোনো বিধান নেই। তাই এ পাহাড়ে ওঠার চেষ্টা করা উচিত নয়। জাবালে আরাফার দিকে মুখ করে দোয়া করাও খেলাফে সুন্নত। ৯. উকুফে আরাফা হজের শ্রেষ্ঠতম আমল। ১০. এ দিবসে বেশি বেশি দান-খয়রাত করা উচিত। ১১. দোয়া করুন।

মুজদালিফার পথে রওনা

৯ জিলহজ সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর রওনা হতে হয় আরাফা থেকে মুজদালিফার উদ্দেশে। মাগরিবের সালাত আরাফার ময়দানে না পড়েই রওনা হতে হয়, কেননা মুজদালিফায় গিয়ে এশার সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে মাগরিবের সালাত। রওনা হতে হয় ধীরে-সুস্থে শান্তভাবে।

মুজদালিফায় করণীয়

মুজদালিফায় পৌঁছার পর প্রথম কাজ হলো মাগরিব ও এশা একসঙ্গে আদায় করা। মাগরিব ও এশা উভয়টা এক আজান ও দুই ইকামতে আদায় করতে হবে। আজান দেওয়ার পর ইকামত দিয়ে প্রথমে মাগরিবের তিন রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। এরপর সুন্নত নফল না পড়েই এশার নামাজের উদ্দেশে একামত দিয়ে এশার দু’রাকাত কসর সালাত আদায় করতে হবে। ফরজ আদায়ের পর বেতরের সালাতও আদায় করতে হবে। মাগরিবের সালাত মুজদালিফায় পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গেই আদায় করা উচিত। গাড়ি থেকে মাল-সামানা নামানোর প্রয়োজন হলে মাগরিবের সালাত আদায় করে তারপর গিয়ে নামাবেন।

যেহেতু ১০ জিলহজ হাজি সাহেবকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে, তাই রসুলুল্লাহ (সা.) মুজদালিফার রাতে আরাম করার বিধান রেখেছেন। এক ফাঁকে কঙ্কর কুড়িয়ে নিতে পারেন। কেননা মিনায় গিয়ে কঙ্কর খুঁজে পাওয়া রীতিমতো কষ্টের ব্যাপার। তবে মুজদালিফা থেকেই কঙ্কর নিতে হবে এ ধারণা ঠিক নয়। মটরশুঁটির আকারের কঙ্কর নেবেন, যা আঙুল দিয়ে নিক্ষেপ করা যায়। ৭০টি কঙ্কর কুড়াবেন। কঙ্কর পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। মুজদালিফায় থাকাবস্থায় সুবেহ সাদিক উদিত হলে আওয়াল ওয়াক্তে ফজরের সালাত আদায় করে কেবলামুখী হয়ে হাত উঠিয়ে দোয়ায় মশগুল হবেন।

তৃতীয় দিন : ১০ জিলহজ 

১০ জিলহজ। হজের বড় দিন। রসুলুল্লাহ (সা.) এই দিন সাহাবিদের প্রশ্ন করে বলেছিলেন, ‘এটা কোন দিন?’ উত্তরে তাঁরা বলেছিলেন, এটা য়াইমুন্নাহর—কোরবানির দিন। রসুলুল্লাহ বললেন, ‘এটি হজের বড় দিন’ বছরের সর্বোত্তম দিবস। এদিনের আমলসমূহ হলো—

কঙ্কর নিক্ষেপ, কঙ্কর নিক্ষেপের সময়সীমা

রসুলুল্লাহ (সা.) সূর্য ওঠার প্রায় দেড়-দুই ঘণ্টা পর কঙ্কর মেরেছিলেন। সে হিসাবে এ সময়টাতেই ১০ তারিখে কঙ্কর নিক্ষেপ করা সুন্নত। সূর্য ঢলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এ-সুন্নত সময় চলতে থাকে। সূর্য ঢলে যাওয়া থেকে শুরু করে ১১ তারিখের সুবেহ সাদিকের আগ পর্যন্ত জায়েজ। ১০ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে শুরু করে ১১ জিলহজ সুবেহ সাদিক উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত কঙ্কর মারা যায়।

হাদি জবেহ করা

বড় জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ শেষ করে হাদি জবেহ বিষয়ে মনোনিবেশ করুন। তামাত্তু ও কেরান হজ পালনকারীর জন্য হাদি জবেহ করা ওয়াজিব। ইফরাদ হজকারীর জন্য মুস্তাহাব। উট-গরু-বকরি-মেষ হাদি হিসেবে জবেহ করা যায়। উট হলে পাঁচ বছর বয়সের, গরু হলে দুই বছর বয়সের ও মেষ হলে এক বছর বয়সের হতে হবে। উট ও গরু হলে একটাতে সাতজন অংশ নিতে পারবেন।

কোথায় পাবেন হাদি : মিনায় হাদি বিক্রির হাট বসে। মক্কায়ও কোথাও কোথাও বসে। ব্যাংকের মাধ্যমে হাদি জবেহ করার ব্যবস্থা করা। নন ব্যালটি হাজিগণ বিভিন্ন কাফেলার আওতায় থাকেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাফেলার লিডাররা হাদি জবেহ করার দায়িত্ব নেন। এ ছাড়া মক্কায় কারো বিশ্বস্ত আত্মীয়-স্বজন কর্মরত থাকলে তাদের মাধ্যমেও হাদি জবেহ করা যেতে পারে।

মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা

হাদি জবেহ হয়েছে বলে নিশ্চিত হলে মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করুন। তবে মুণ্ডন করাই উত্তম। পবিত্র কোরআনে মুণ্ডন করার কথা আগে এসেছে, ছোট করার কথা পরে।

তাওয়াফে জিয়ারত

১০ জিলহজের চতুর্থ আমল হলো তাওয়াফে জিয়ারত। তাওয়াফে জিয়ারত ১০ তারিখেই সেরে নেওয়া ভালো। কঙ্কর নিক্ষেপ, হাদি জবেহ, ক্ষৌর কার্য এ-তিনটি আমল শেষ করে গোসল করে, সুগন্ধি মেখে সেলাইযুক্ত কাপড় পরে পবিত্র কাবার দিকে রওনা হবেন। শুরুতে ওমরা আদায়ের সময় যে নিয়মে তাওয়াফ করেছেন ঠিক সে নিয়মে তাওয়াফ করবেন। এ তাওয়াফটি হলো হজের ফরজ তাওয়াফ। তাওয়াফের পর, ওমরা অধ্যায়ে বর্ণিত পদ্ধতিতে সাফা মারওয়ার সাঈ করবেন। ১৩ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে তাওয়াফে জিয়ারত করে নেওয়া উত্তম। তবে এরপরও করা যেতে পারে এবং এর জন্য কোনো দম দিতে হবে না।

হাজরে আসওয়াদে চুমু

সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদকে চুমু খান বা হাতে স্পর্শ করে হাতে চুমু খাবেন নতুবা বুক বরাবর দুই হাত উঠিয়ে দুই হাতের তালু দিয়ে হাজরে আসওয়াদের প্রতি ইশারা করুন।

মিনায় রাত্রিযাপন

তাওয়াফ-সাঈ শেষ করে মিনায় ফিরে আসতে হবে। ১০ তারিখ দিবাগত রাত ও ১১ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় যাপন করতে হবে। ১২ তারিখ যদি মিনায় থাকা অবস্থায় সূর্য ডুবে যায়, তাহলে ১২ তারিখ দিবাগত রাতও মিনায় যাপন করতে হবে। ১৩ তারিখ কঙ্কর মেরে তারপর মিনা ত্যাগ করতে হবে। মিনায় রাত্রিযাপন গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।

১১, ১২, ও ১৩ জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপ প্রসঙ্গ

কঙ্কর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। কঙ্কর নিক্ষেপের দিন চারটি। ১০, ১১, ১২, ১৩ জিলহজ। ১০ জিলহজ কেবল বড় জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়। অন্যান্য দিন (১১, ১২, ১৩ তারিখ) তিন জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হয়। এ দিনগুলোয় কঙ্কর নিক্ষেপের প্রথম ওয়াক্ত শুরু হয় দুপুরে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর থেকে, চলতে থাকে দিবাগত রাতে সুবেহ সাদিক উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত। ১১ জিলহজ সূর্য ঢলে যাওয়ার পর তিন জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। প্রথমে ছোট জামরায় ৭টি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। কাবা শরিফ বাম দিকে ও মিনা ডান দিকে রেখে দাঁড়াবেন। খুশুখুজুর সঙ্গে আল্লাহর শিআর —নিদর্শনের— যথাযথ তাজিম বুকে নিয়ে একটি একটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। ‘আল্লাহ আকবার’ বলে প্রতিটি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। ছোট জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ শেষ হলে একটু সামনের এগিয়ে যাবেন। কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াবেন ও হাত উঠিয়ে দীর্ঘ মোনাজাত করবেন। এরপর মধ্য জামরায় যাবেন। এখানেও ৭টি কঙ্কর একই কায়দায় নিক্ষেপ করবেন। নিক্ষেপের পর সামান্য এগিয়ে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে আবারো দীর্ঘ মোনাজাত করবেন। এরপর বড় জামরায় কঙ্কর মারতে যাবেন। নিয়ম মতো এখানেও ৭টি কঙ্কর মারবেন, তবে এবার আর দোয়া করতে হবে না। কঙ্কর মারা শেষ হলে তাঁবুতে ফিরে আসবেন।

১২ তারিখের কঙ্কর নিক্ষেপ

১২ জিলহজ সূর্য ঢলে যাওয়ার পর থেকে কঙ্কর নিক্ষেপের সময় শুরু হয়। চলতে থাকে দিবাগত রাতে সুবেহ সাদিক উদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত। ১১ তারিখের মতো ১২ তারিখেও তিন জামরাতে, একই নিয়মে, কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন।

১৩ তারিখ কঙ্কর নিক্ষেপ

১২ জিলহজ মিনায় থাকা অবস্থায় সূর্য ডুবে গেলে মিনাতেই রাত কাটাতে হবে এবং ১৩ তারিখ সূর্য ঢলে গেলে তিন জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে মিনা ত্যাগ করতে হবে।  

মক্কায় ফিরে যাওয়া

কঙ্কর নিক্ষেপ-পর্ব শেষ করে মক্কায় ফিরে যাবেন। দেশে ফেরা অথবা মদিনা গমনের আগ পর্যন্ত মক্কায় অবস্থান করবেন। এ সময় পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সঙ্গে আদায় ও দোয়া জিকিরে মশগুল থাকবেন। এ সুযোগে দেশে নিয়ে আসার জন্য জমজমের পানি সংগ্রহ করে নেওয়া যায়। স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের জন্য সাধ্যমতো হাদিয়া-তোহফা যেমন জায়নামাজ, বোরকা, কোরআন তিলাওয়াতের ক্যাসেট ইত্যাদি ক্রয় করতে পারেন।

বিদায়ী তাওয়াফ

মক্কা ত্যাগের পূর্বে বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করে নেবেন। রসুলুল্লাহ (সা.) বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করেছেন ও বলেছেন, বায়তুল্লাহর সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ না করে তোমাদের কেউ যেন না যায়। 

মদিনার পথে...

মক্কার ন্যায় মদিনাও পবিত্র নগরী। মসজিদে নববি জিয়ারতের নিয়ত করে আপনি মদিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। মদিনায় গিয়ে যাতে আপনার দ্বারা কোনো বেয়াদবি না হয়, কোনো গুনাহ-পাপে লিপ্ত না হন, সে জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন। মদিনায় আপনার হোটেল বা বাসায় গিয়ে মালপত্র রেখে সামান্য বিশ্রাম করে নিন। এরপর মসজিদে নববিতে চলে যান। মসজিদে নববিতে যাওয়ার জন্য কোনো ইহরাম তালবিয়া নেই। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ ও সালাত পড়ে পড়ে যেতে হবে, এ ব্যাপারেও কোনো হাদিস নেই।

রসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর দুই সাথীর কবর জিয়ারতের আদব : ১. রসুলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র কবরের সামনে এলে আদবের সঙ্গে দাঁড়ান। দাঁড়ানোর সুযোগ না পেলে চলমান অবস্থাতেই রসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি সালাম পেশ করুন, বলনু [আসসালামু আলাইকা ইয়া আইয়ূহান নাবী]- ‘আপনার ওপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকতসমূহ বর্ষিত হোক হে আল্লাহর নবী’, রসুলুল্লাহর (সা.) গুণাবলির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ আরো কিছু শব্দ বাড়িয়ে দেওয়া যাবে।  ২. এরপর সামনের দিকে এক গজ পরিমাণ এগিয়ে যান। এখানে আবুবকর সিদ্দিক  (রা.)-এর প্রতি সালাম পেশ করুন। ৩. এরপর আরেক গজ সামনে আগান। এখানে ওমর  (রা.)-এর প্রতি সালাম পেশ করুন। এরপর বাইরে চলে আসুন। কেবলামুখী হয়ে বা কবরের দিকে মুখ করে দোয়া করবেন না।

রসুলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র কবর জিয়ারতের সময় নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ : রসুলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র কবর হুজরা শরিফের অভ্যন্তরে অবস্থিত। তাই কবরের দেয়াল ছুঁয়ে বরকত নেওয়ার জজবা অনেকের মধ্যে থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। আসলে এ ধরনের জজবা-বাসনা থাকাই উচিত না। কেননা কবরের চারপাশে তাওয়াফ, কবর ছুঁয়ে বরকত নেওয়া ইত্যাদি শরিয়তে অনুমোদিত নয়। রসুলুল্লাহ (সা.) কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন যে, তার কবরকে যেন মূর্তি পূজায় রূপান্তরিত করা না হয়। আর স্পর্শ ও চুম্বন করার বিধান তো কেবল হাজরে আসওয়াদের বৈশিষ্ট্য। বিপদমুক্তি অথবা কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে প্রার্থনা করা যাবে না।

লেখক : শিক্ষক, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads