বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে চীন। গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় ভবিষ্যৎ সম্পর্ক’ শীর্ষক কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত কসমস সংলাপে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের চীনের রাষ্ট্রদূত জ্যাং ঝ বলেছেন, আমরা আশা করি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ এবং এখানকার রাজনৈতিক দলগুলো এটি করতে পারবে। সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য বাংলাদেশের যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে চীন কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি। তবে রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রশ্নের জবাবে বলেন, চীন সবসময় গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে চায়। সঙ্কট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছি আমরা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ও অংশীদারিত্ব সম্পর্ক আরো বাড়াতে হবে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন সবাইকে নিয়ে উন্নয়ন করতে আগ্রহী। সে কারণেই এই বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংলাপ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (আইএসএএস) প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন। প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন, চীনের সিচুয়ান ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অফ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লি তাও, পিপলস ডেইলির ভারত ব্যুরোর সিনিয়র সাংবাদিক ইয়ন জিরং, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের তথ্য মতে, ২০১৭ সালে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য মূল্য ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়, যা আগের বছরের তুলনায় ৫.৮ শতাংশ বেশি। চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। চলতি বছরের প্রথমার্ধে দুই দেশের বাণিজ্য মূল্য বার্ষিক ১৭.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৯.৩৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও চীনের জনগণের সম্পর্ক প্রাচীন মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ। যদিও দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ১৯৭৫ সালে। তারপর থেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে।