সারা দেশে অবৈধ প্রায় ১৫ লাখ মোটরযান

প্রায় ১৫ লাখ মোটরযানের বৈধ নিবন্ধন ও চলাচলের অনুমতি নেই

সংরক্ষিত ছবি

যোগাযোগ

সারা দেশে অবৈধ প্রায় ১৫ লাখ মোটরযান

নিয়ন্ত্রকদের পকেটে যাচ্ছে বিপুল অর্থ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৫ অগাস্ট, ২০১৮

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে চলছে প্রায় ৪৫ লাখ মোটরযান। এগুলোর মধ্যে বৈধ নিবন্ধন পাওয়া যানবাহন সাড়ে ৩১ লাখ। বাকি প্রায় ১৫ লাখ মোটরযানের বৈধ নিবন্ধন ও চলাচলের অনুমতি নেই। বেসরকারি সংস্থা যাত্রী কল্যাণ সমিতি ও ওয়ার্ল্ড ফর বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের পৃথক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া যায়। অন্যদিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণকারী সংখ্যা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবে, সাড়ে ৩১ লাখ নিবন্ধিত মোটরযানের বিপরীতে রয়েছে ২১ লাখ বৈধ চালক। সেই হিসাবে যানবাহন প্রতি একজন চালক ধরলেও বৈধ ১০ লাখ যানবাহন চালাচ্ছে সমসংখ্যক লাইসেন্সবিহীন চালক। আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরো প্রায় ১৫ লাখ অনিবন্ধিত ও বৈধ মোটরযান। বাংলাদেশে চলাচলের অনুমোদন না থাকা করিমন, নসিমন, ভটভটির মতো প্রায় ৩ লাখ মোটরযান বাদ দিলে ১২ লাখেরও বেশি যানবাহন চলছে স্থানীয় রাজনীতিক, গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রশাসনের মদতে। আর নিবন্ধন না করায় এসব গাড়ির থেকে আনুমানিক সাড়ে তিন থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে রাষ্ট্র।

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মালিক-শ্রমিক ইউনিয়ন, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, বিআরটিএ’র কতিপয় কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালী রাজনীতিকদের সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে এসব অবৈধ যানবাহন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটটি অবৈধ যানবাহনের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ করছে অননুমোদিত রুট, লাইসেন্সবিহীন চালক ও ‘লাইনম্যান’, ‘স্টার্টার’ চাঁদাবাজিও।

রাজধানীর মতিঝিল থেকে সাভার আশুলিয়া রুটে চলাচলকারী ওয়েলকাম পরিবহনে চালক শহিদুল বাংলাদেশের খবরকে বলেন, আমি যে গাড়ি চালাই সেটার মালিকের মাত্র দুটো বাস। এখানে অনেক মালিকের বাস রয়েছে। কোম্পানি চালায় নেতারা। নেতাদের মাসে মাসে টাকা দেয় মালিক। পুলিশ, মোবাইল কোর্ট সব কিছু নেতারাই ম্যানেজ করেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাপরিচালক মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সারা দেশে মোট কতগুলো অবৈধ যানবাহন আছে তার প্রকৃত সংখ্যা কখনোই জানা সম্ভব নয়। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় গবেষণা চালিয়ে আমরা অনুমান করছি সারা দেশে কমপক্ষে ১৫ লাখ অনিবন্ধিত ও অবৈধ যানবাহন আছে। এগুলো রাজনীতিক নেতা, পুলিশ ও বিআরটিএ’র ছত্রছায়ায় চলাচল করছে। আর যে ৩১ লাখ বৈধ যানবাহন আছে তারও ৪০ শতাংশ ফিটনেসবিহীন।

বাংলাদেশে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মোসলেহ উদ্দিন হাসান বলেন, বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের আলাদা আলাদা গবেষণায় সারা দেশে অনিবন্ধিত গাড়ির বিভিন্ন সংখ্যা পাওয়া গেছে। তবে আনুমানিক প্রায় সাড়ে ১২ লাখ অনিবন্ধিত যানবাহন সারা দেশে চলাচল করছে। এসব যানবাহন যদি নিবন্ধন করা হতো তাহলে সরকার আয় করতে পারত সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা।

তিনি বলেন, সরকার এই অর্থ থেকে বঞ্চিত হলেও তা চলে যাচ্ছে একটা সিন্ডিকেটের পকেটে। এটা আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে, কারা গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ করছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads