এই প্রজন্মের সংগীতশিল্পীদের মধ্যে নিজের সুরেলা কণ্ঠ ও অনবদ্য গায়কী দিয়ে যিনি নিজের আলাদা একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন তিনি জিনিয়া জাফরিন লুইপা। ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ’-তে চতুর্থ স্থান অধিকার করে একটু একটু করে নিজের গায়কী দিয়ে এই প্রজন্মের একজন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীতে নিজেকে পরিণত করেছেন। অবশ্য ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ’ পেশাগতভাবে সংগীতকে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বড় একটি প্ল্যাটফর্ম হলেও ছোটবেলা থেকেই সংগীতে তার অধ্যবসায় শুরু। যে কারণে সেই প্ল্যাটফর্মে চ্যাম্পিয়ন না হলেও লুইপা নিজের মেধা, তার সুরেলা কণ্ঠ, গায়কী আর বিনয়ী ব্যবহার দিয়ে নিজের অবস্থান এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যে অবস্থানে শ্রোতা দর্শক তাকে নিয়ে ভাবেন, খ্যাতিমান সংগীত পরিচালকরা তাকে নিয়ে কাজ করতে চান।
দেখতে দেখতে সংগীতে পেশাগতভাবে পথচলার এক দশকে পা রেখেছেন লুইপা। নিজের বর্তমান অবস্থান নিয়ে ভীষণ সন্তুষ্ট তিনি। লুইপা তার পেশাগত জীবন, ব্যক্তিজীবন দুদিকেই পরিপূর্ণ একজন মানুষ, একজন পূর্ণাঙ্গ নারী। তার স্বামী আলমগীর হোসেন এ দেশের একজন খ্যাতিমান যন্ত্র সংগীতশিল্পী। এই দম্পতির একমাত্র সন্তান পায়রা, যাকে সংস্কৃতি অঙ্গনের সবাই ছোট্ট এই বয়সেই একনামে চেনে।
লুইপা তার সংগীত জীবনের সাফল্যের এক দশকে পদার্পণ উপলক্ষে বলেন, প্রথমে আমি আসলে আমি আমার নিজের জন্য, আমার বাবার জন্য গান করতাম। পরবর্তী সময়ে সেরাকণ্ঠের মধ্যদিয়ে পেশাগতভাবে সংগীতে আমার পথচলা শুরু। প্রায় এক দশকে আমি অনেক গুণী ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে এসেছি, অনেক কিছু শিখেছি। আমি বিশেষত চ্যানেল আই পরিবার, শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা ম্যাডাম, সাবিনা ইয়াসমিন ম্যাডাম, ইমন সাহা দাদার কাছে শুরুতেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, কারণ তারা শুরুতেই আমাকে এতদূর আসতে পারার জন্য প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করে দিয়েছেন। তখন থেকে আজ পর্যন্ত যে যাত্রা অনেককেই পাশে পেয়েছি, অনেক বরেণ্য সংগীতশিল্পীর সঙ্গে গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, অনেক স্বনামধন্য গীতিকবি, সুরকার, সংগীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। যারা আমাকে যোগ্য মনে করে আমাকে তাদের কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন তাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের প্রতি। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা।
লুইপা বিশ্বাস করেন আগামী এক দশক কিংবা তার পরবর্তী সময়ে সংগীত চর্চাকে নিয়মিত রেখে আরো ভালো ভালো গান শ্রোতা দর্শককে উপহার দেবেন এবং যা হবে তার ভালোর জন্যই হবে। লুইপা অল্প সময়ে যে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন সেটাকে সবার ভালোবাসা হিসেবেই ধরে নেন। একবারেই ছোট্টবেলায় যার কোলে চড়ে লুইপা গানে গানে বড় হয়েছেন তিনি প্রয়াত আবদুল মজিদ। পরবর্তী সময়ে ওস্তাদ এস এম বেলাল হোসেন, মো. রেজওয়ানুল ইসলামের কাছে গান শিখেছেন। তবে বগুড়া থেকে ঢাকায় এসে লুইপাকে যিনি আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তিনি প্রিয়াংকা গোপ।
লুইপার কণ্ঠে জনপ্রিয়তা পাওয়া গানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- বেগম আখতারের ‘জোছনা করেছে আঁড়ি’ নজরুল সংগীত ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে’জন’, ‘জেন্টলম্যান’, ‘ঘুরে ফিরে ফিরে ঘুরে’, ‘আমার চোখের জলের মাঝে’, ‘অপরূপ বাংলাদেশ’ ইত্যাদি।