উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে রেখে ২৯ মার্চ থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া সারা দেশে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সব ধরনের কোচিং সেন্টারই বেআইনি। আমরা হয়ত আইন প্রয়োগ করে নিজেরা বন্ধ করতে পারি না, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (কোচিং সেন্টার) বন্ধ করে। কোনো ধরনের কোচিং সেন্টারই আইনগত অ্যালাউড না।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
কোচিং সেন্টার বন্ধ করার ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় আছে কোচিং সেন্টার, গাইড বই, নোট বই- এগুলো বেআইনি। কিন্তু তার পরেও আমাদের দেশে অনেক অপরাধ হচ্ছে, বেআইনি কাজ হচ্ছে। ইচ্ছে করলেই সব বন্ধ করে দেওয়া যায় না। তারপরেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের হাতে আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা বা শক্তি নাই, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট আছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কিছু সঙ্কট আমরা মোকোবেলা করছি। আগের থেকে আরো বেশি কঠোর অবস্থান নিয়েছি, অনেক বেশি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, অনেক বেশি পদ্ধতি আমরা অ্যাপ্লাই করছি। এবং অনেক বেশি কৌশল অবলম্বন করছি। সেদিক থেকে আমরা আশা করতে পারি…।’ মূলত উনি প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত করেন।
গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ধারাবাহিকতায় এবার এসএসসিতে প্রায় সব বিষয়ের প্রশ্ন পরীক্ষার আগের রাতে বা পরীক্ষার দিন সকালে ফাঁস হয়ে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে এইচএসসিতে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে লটারির মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের সেট নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া এসএসসির মতো এইচএসসিতেও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষার হলে বসতে হবে। পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা ডিজিটাল ডিভাইস বহনে নিষেধাজ্ঞাও আগের মতোই বহাল থাকছে।
এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসএসসিতে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিবেচনা করে পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এসএসসিতে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ৫২টি মামলায় ১৫৭ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে যেসব শিক্ষক রয়েছেন, তাদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান মন্ত্রী।