শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উজ্জীবিত পুলিশ : ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া

ছবি : ইন্টারনেট

জাতীয়

আজ থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উজ্জীবিত পুলিশ : ডিএমপি কমিশনার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৫ অগাস্ট, ২০১৮

সড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক কার্যক্রম পুলিশকে নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস জুগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। এতে উজ্জীবিত হয়ে আজ রোববার থেকে সারা দেশে ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার ডিএমপি সদর দফতরে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপির ৫০ থানার ওসি ও ডিসি ট্রাফিকদের উপস্থিতিতে কমিশনার বলেন, ‘এখন কাউকে আর কোনো ছাড় নয়। হোক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা বা ভিআইপি অথবা সিআইপি। ট্রাফিক সিগন্যাল ভায়োলেট করেছে মামলা হবে, উল্টো পথে গাড়ি, কাগজপত্র নেই মামলা হবে। ট্রাফিক সার্জেন্ট ও পুলিশ সদস্যরা যে পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করবেন, প্রতিটি পয়েন্টে সততার সঙ্গে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাফিক সপ্তাহে লাইন্সেস ছাড়া ফিটনেসবিহীন গাড়ি, হেলপার দিয়ে ড্রাইভিংসহ ট্রাফিক আইনের কোনো ব্যত্যয় হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর আন্দোলনে নামে ছাত্রছাত্রীরা। সড়কে চালকের ও গাড়ির ‘লাইসেন্স পরীক্ষায়’ পুলিশের কাজে নেমে যায় তারা। তাদের ‘পরীক্ষায়’ অনেক পুলিশ কর্মকর্তাসহ মন্ত্রী-এমপিরাও আটকা পড়েন। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সাধারণ ছাত্রদের আমরা স্যালুট করি। যে কাজটি আমাদের আরো আগে করার কথা ছিল, নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে আমরা তা পারিনি। আজকে শিক্ষার্থীরা আমাদের নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতিপক্ষ নয়, তারা আমাদের পরিপূরক। ভবিষ্যতে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করে ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করতে আমরা নৈতিক ভিত্তি পেয়েছি, আইন প্রয়োগ করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সাহস পেয়েছি।’

ট্রাফিক আইন যুগোপযোগী করার জন্য ‘গণপরিবহন ও ট্রাফিক আইন’ নামে নতুন একটি আইন আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপিত হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ছদ্মবেশে অনেকে ঢুকে পড়েছে। স্কুল ড্রেস বানানোর হিড়িক লেগেছে। টেইলার্সে অর্ডার দিয়ে স্কুল-কলেজের ড্রেস বানানো হচ্ছে। কারা বানাচ্ছে এসব খবর আমাদের কাছে আছে এবং এ নিয়ে গোয়েন্দারা কাজ করছে। স্কুল ড্রেস পরে শিক্ষার্থীদের মাঝে ঢুকে যৌক্তিক আন্দোলনকে অন্য খাতে প্রবাহিত করে ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে ওই চক্রটি। এ কারণে আমরা ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’ কমিশনার বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে দেখেছি ও অনেককে শনাক্ত করেছি।’

পুলিশের কাজ শিক্ষার্থীরা করায় ‘জনদুর্ভোগ’ সৃষ্টি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামতে ভয় পাচ্ছে। যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে। জনদুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। মহানগরে এমন জনদুর্ভোগ দীর্ঘদিন চলতে পারে না।’ এ সময় শিক্ষার্থীদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads