পরীক্ষায় এদিক-ওদিক তাকানোর অপরাধে শিক্ষকের লাথিতে দোতলার সিঁড়ি থেকে পড়ে অসুস্থ পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মোস্তাকিম (১০) এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। অগত্যা গত ৩ মে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন মহলে লিখিত অভিযোগ করেন নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা। আর গতকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হন তিনি।
মোস্তাকিমের বাবা মোহনগঞ্জ পৌর শহরের টেঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা রফিকুল আলম সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৫ এপ্রিল মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম সাময়িকের ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থী মোস্তাকিম এদিক-ওদিক তাকাচ্ছিল। বিষয়টি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এটিএম আশরাফুজ্জামান ওরফে শাহানের নজরে পড়লে তিনি মোস্তাকিমের পরীক্ষার খাতা নিয়ে নেন। সে খাতা ফেরত পেতে ওই শিক্ষকের পা ধরে কান্নাকাটি করে। এতে শিক্ষক তার প্রতি আরো ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে তিনি মোস্তাকিমের চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে পরীক্ষার হল থেকে বের করে লাথি মেরে দোতলার সিঁড়ি থেকে নিচে ফেলে দেন। এতে সে গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে আমরা বিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।
তিনি আরো বলেন, অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে আমি আজ ১২ দিন ধরে হাসপাতালে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো শিক্ষকই তাকে দেখতে আসেননি। এ ছাড়া ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোহনগঞ্জের জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহান এ ব্যাপারে বলেন, তিনি মোস্তাকিমকে লাথি মারেননি। পরীক্ষায় নকল করায় শুধু তার খাতা জব্দ করেছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিনয় চন্দ্র শর্মা অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি সোমবার বিকালেই ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে দেখে এসেছি এবং তার মা-বাবার সঙ্গেও কথা বলেছি। বিষয়টি আমি নিজেই তদন্ত করব এবং অভিযোগ সত্য হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী মাহমুদ আকন্দ বলেন, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।