বিপুল পরিমাণ ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি হয়ে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দেশে চাপের মধ্যে আছে ফেসবুক। এরই মধ্যে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তার বিষয়ে নতুন একটি আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গ্রাহকদের তথ্য নিরাপত্তায় জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশন (জিডিপিআর) নামে একটি বিশেষ আইন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগে ফেসবুকের ইউরোপ সদর দফতর থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো এমন প্রায় ১৫০ কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়টি এখন নিয়ন্ত্রণ করা হবে ফেসবুকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কার্যালয় থেকে। এর ফলে ইউরোপ অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের তথ্যের গোপনীয়তায় যে কঠোর আইন হচ্ছে, তার আওতাভুক্ত হবেন না এই বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী।
তবে ফেসবুক জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী আরো সুস্পষ্ট গোপনীয়তা নীতির অংশ এটি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর মাধ্যমে ফেসবুকের ৭০ শতাংশ ব্যবহারকারীই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ফেসবুক গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ২৩ কোটি ৯০ লাখ এবং ইউরোপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩৭ কোটি। এর বাইরে এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকান গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৫০ কোটি। নীতিমালার পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এসব ব্যবহারকারীই।
ফেসবুকের ডেপুটি চিফ গ্লোবাল প্রাইভেসি অফিসার স্টিফেন ডেডম্যান বিবিসিকে বলেন, ‘নীতিমালার বিষয়ে জিডিপিআর এবং ইইউ কনজ্যুমার আইন কিছু বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছে যা আমরা ইইউ অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের জন্য চালু করেছি। আমরা সব সময় স্পষ্ট করে বলেছি যে, ব্যবহারকারীরা যেখানেই বাস করুক না কেন, সবার জন্যই ফেসবুকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, নিয়ন্ত্রণ এবং সেটিংস একই রাখা হয়েছে।’
তবে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অডিট প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির ডিজিটাল প্রাইভেসি বিশেষজ্ঞ সিলভিয়া কিংসমিল মনে করেন ফেসবুক উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে ‘কোনোভাবে বেরিয়ে আসার’ জন্য এ কাজটি করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা যখন তাদের বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে তখন তাদের প্রত্যাশা থাকে এসব তথ্য নিরাপদ থাকবে। তবে আমি মনে করি ফেসবুকের এমন পদক্ষেপ এ ধরনের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও একই কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’