পদ হারানোর চাপ আর সমালোচনার মধ্যেই কর্মীদের জন্য স্বস্তির খবর দিয়েছেন টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক। গত রোববার কর্মীদের পাঠানো এক ইমেইল বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, তাদের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান টেসলা লাভের খুবই কাছাকাছি রয়েছে।
মাস্ক বলেন, কর্মীরা যদি রোববারের চাপ সামলাতে পারেন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় টেসলা দারুণ সফলতা পেতে পারে। তিনি বলেন, সব প্রত্যাশা ছাড়িয়ে জয় আনতে হবে, টেসলাকে রোববারের উৎপাদনে সবটা দিতে হবে।
এর আগে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) পক্ষ থেকে টুইটার পোস্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ফেডারেল আদালতে মামলা করা হয় মাস্কের বিরুদ্ধে। ৪২০ মার্কিন ডলার শেয়ার মূল্যে টেসলাকে ব্যক্তিগত মালিকানায় নেওয়ার ব্যাপারে টুইট করায় মামলা হয় মাস্কের বিরুদ্ধে। ওই টুইটে মাস্ক বলেন, ৪২০ মার্কিন ডলার শেয়ার মূল্যে টেসলাকে প্রাইভেট করা হচ্ছে এবং এ জন্য তহবিল সংগ্রহ হয়েছে। এসইসির দাবি এই টুইটের কোনো ভিত্তি নেই এবং এতে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে।
তারপর গত ২৮ সেপ্টেম্বরও কর্মীদের একটি ইমেইল পাঠিয়েছিলেন ইলন মাস্ক। তাতে তিনি কর্মীদের বিভ্রান্তি এড়ানোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দাবি করেন, সমালোচকদের মিথ্যা প্রমাণের খুব কাছে রয়েছে তার প্রতিষ্ঠান।
তবে গত শনিবার সেই মামলা মীমাংসা করতে শনিবার টেসলা চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে রাজি হন মাস্ক। সেই সঙ্গে দুই কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতেও সম্মত হন তিনি। ওই দিনই মাস্কের বিরুদ্ধে করা মামলার সিদ্ধান্ত জানায় এসইসি। তাতে বলা হয়, টেসলা চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে ৪৫ দিন সময় পাচ্ছেন তিনি। আর এই সময়ের মধ্যে তাকে জরিমানা হিসেবে গুনতে হবে প্রায় দুই কোটি মার্কিন ডলার। তবে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী প্রধানের পদে থাকতে তাকে আর কোনো বাধার মুখে পড়তে হবে না।
রায়ে কমিশন বলেছে, একজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান ও দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে টেসলাকে। এ ছাড়া মাস্কের যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করতে একটি বোর্ড কমিটিও গঠন করতে বলা হয়েছে।
মাস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সময় তাকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ থেকে সরানোর দাবি করেছিল এসইসি। অনেক বিনিয়োগকারী এই সিদ্ধান্তকে প্রতিষ্ঠানের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে মনে করায় পরে এই দাবি থেকে সরে আসে সংস্থাটি।
এসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, মাস্ক-এর টুইটে যেসব তথ্য দেওয়া হবে তা প্রাতিষ্ঠানিকে নথিতে অবশ্যই থাকবে কি না বা এই টুইটগুলোয় সম্পূর্ণ ও সঠিক তথ্য থাকে কি না তা যাচাই করার কোনো পথ প্রতিষ্ঠানটির হাতে নেই।
শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, এর আগে এসইসির সঙ্গে একটি মীমাংসার শেষ মুহূর্তে মাস্ক সরে আসেন। ওই মীমাংসায় তাকে দুই বছর প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ কিছু দায়িত্ব থেকে সরে যেতে ও নামমাত্র জরিমানা পরিশোধ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আদালতে লড়াইয়ের জন্য তৈরি ছিলেন।