রাজশাহীতে টাকার খেলা

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে ব্যয়সীমা মানছেন না প্রার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন

নিশ্চুপ নির্বাচন কমিশন

রাজশাহীতে টাকার খেলা

  • নাজমুল আহসান রাজু
  • প্রকাশিত ২৮ জুলাই, ২০১৮

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে ব্যয়সীমা মানছেন না প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশন মেয়র প্রার্থীদের ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ব্যয়সীমা নির্ধারণ করলেও তা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো প্রার্থী কোটি টাকা ব্যয় করেছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও জনসংযোগ কাজে- এমন অভিযোগও রয়েছে। তবে আর্থিক এ ব্যয়সীমা তদারকিতে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের তেমন নজরদারি নেই। অভিযোগ রয়েছে, কমিশন ব্যয়সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে নিশ্চুপ থাকে, সঠিকভাবে তা তদারকি করে না।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) তথ্য মতে, সিটি নির্বাচনে অনুমোদিত নির্বাচনী ব্যয়ের তুলনায় ন্যূনতম তিন থেকে সর্বোচ্চ একুশ গুণ বেশি অর্থ ব্যয় করেন প্রার্থীরা। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দৃঢ় ভূমিকার অভাব রয়েছে। ২০১৫ সালের ১৮ মে টিআইবি সিটি নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানায়। রাজশাহীতে অভিযোগের তীরটা প্রথমে এসেছে বিএনপিদলীয় মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কাছ থেকে। তার অভিযোগ, নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। এ অর্থ ব্যয় হয়েছে লক্ষাধিক পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন তৈরিতে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও পাল্টা অভিযোগে বলা হয়েছে, বিএনপিদলীয় মেয়র প্রার্থী ১০ কোটি টাকা ভোটারদের মধ্যে বিলি করতে সংগ্রহ করেছেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থীরা ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নির্বাচনী ব্যয় করতে পারবেন; ব্যক্তিগত খরচ ৭৫ হাজার টাকা। আর এ সিটিতে দলীয় প্রার্থীর জন্য দল ব্যয় করতে পারবে পাঁচ লাখ টাকা।

গত বৃহস্পতিবার বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করেন নির্বাচনী হলফনামায় উল্লিখিত ব্যয়ের চেয়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নৌকা প্রতীকে লক্ষাধিক পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন টানানো হয়েছে। ওইদিন নগরীর সাহেববাজার সংলগ্ন নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। একই দিনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বুধবার রাতে তাদের কাছে খবর আসে যে একটি গাড়িতে নগদ ১০ কোটি টাকা আছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা এ টাকা বস্তি এলাকায় বিলি করবেন।

রাসিক নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ব্যয়সীমা কেউ লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা আমার জানা নেই। আর্থিক ব্যয় তদারকিতে বিচারিক হাকিমদের নিয়ে একটি কমিটি রয়েছে। তাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী অভিযোগ করেননি।

২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬, এর প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। এ বিধিমালার ২৭ ধারায় নির্বাচন ব্যয়সীমা সংক্রান্ত বাধা-শিরোনামে বলা হয়েছে ‘কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্ধারিত নির্বাচনী ব্যয়সীমা কোনো অবস্থাতেই অতিক্রম করতে পারবেন না।

যদি এই ব্যয়সীমা অতিক্রম করেন, তা একই বিধিমালার ৩১ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিধিমালার ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads