রাজধানীর প্রধান সড়কে বাস চলবে : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা

সংগৃহীত ছবি

নির্বাচন

সুন্দর নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন

রাজধানীর প্রধান সড়কে বাস চলবে : সিইসি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও উত্তরের সম্প্রসারিত ৩৬টি ওয়ার্ডে ভোটের প্রস্তুতি তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাহী ও জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব পর্যবেক্ষক থাকবে। বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের টিম টহলে থাকবে। এ ছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

ইসি সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এসব কথা বলেন।

মো. নূরুল হুদা বলেন, এজেন্টরা যাতে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ভোট গণনা না হওয়া পর্যন্ত এবং প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ফলাফল ঘোষণার একটি শিট না নেওয়া পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করেন। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও অবাধ নির্বাচন। তিনি বলেন, ভোটগ্রহণের সঙ্গে সম্পৃক্ত যেকোনো কর্মকর্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে সেই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যান চলাচল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচন উপলক্ষে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে প্রধান প্রধান সড়কে বাস চলাচলের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র দেখিয়ে প্রাইভেট কার ব্যবহার করতে পারলেও অহেতুক ঘোরাফেরার জন্য এই যান ব্যবহার করা যাবে না। 

সিইসি বলেন, ঢাকা শহরে অনেক জরুরি বিষয় আছে। এয়ারপোর্টে একজন যাত্রী যাবে, তার জন্য কি বন্ধ থাকবে, অ্যাম্বুলেন্স যাবে, এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের জিনিসগুলো যাবে, এ রকম জিনিসগুলো বিবেচনা করে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে, যাতে এভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্যাপকভাবে সব বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। বাস চলতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেইন রোডে চলবে। প্রাইভেট ভেহিকল আছে প্রচুর, এগুলো চলাচলের ওপর আপনার নির্দেশনা কী-এ প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘না, প্রাইভেট ভেহিকল নির্ধারিত কোনো কাজ ছাড়া চলাচল করতে পারবে না। ঘোরাফেরা করার জন্য তো আর চলবে না। এটা নিয়ে বেশি আলোচনা করার দরকার নেই। এটা ঢাকা শহর তো অনেক ধরনের জরুরি বিষয় থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য যারা থাকবেন, তারা এগুলো বুঝবেন।’ 

এ সময় যান চলাচলের ক্ষেত্রে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘প্রধান প্রধান সড়কে যানবাহন চলবে। আর জরুরি প্রয়োজনে যারা যান (প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল) ব্যবহার করবে, তারা আমাদের কাছ থেকে স্টিকার সংগ্রহ করবে। এ ছাড়া পুলিশকে যদি কেউ তার প্রয়োজনের কথা বলে, তারাও কিন্তু তাদের অনুমতি দেবে। সাধারণ ছুটির বিষয়ে সচিব বলেন, ‘ঢাকা শহর পুরোটায়ই ছুটি থাকবে এটা আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েও জানিয়েছি। স্কুল-কলেজ ও সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।’ 

৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনের পর এই নির্বাচনেও অনেক দল অংশগ্রহণ করছে না, এটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে তারা অংশ নেয়নি। একটা কারণ হলো-মাত্র এক বছর মেয়াদে তারা নির্বাচিত হবেন। এরপর আবার নির্বাচন হবে। সে কারণে ভোটার ও প্রার্থীদের আগ্রহ কম থাকতে পারে। আর সব দল অংশগ্রহণ করেনি, এতে আমাদের কিছু করার নেই। এটা তো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমরা তো সবাইকে আহ্বান করেছিলাম, যেহেতু তারা আসেনি, আমাদের কিছু করার নেই। 

বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, আমাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই। সঠিক নির্বাচন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছি। তারা রাজনৈতিক মাঠে না গেলে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে, এটা তো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করলে তো হবে না। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের প্রতি অনাস্থা নয়, দলগুলো অংশগ্রহণ করলে আমরা খুশি হতাম, না করাটা আমাদের জন্য একটা অস্বস্তিকর অবস্থা। 

ডিএনসিসির মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ ওয়ার্ডে ১১৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। ডিএসসিসির সাধারণ ওয়ার্ডে ১২৫ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪৫ প্রার্থী রয়েছেন। ঢাকা উত্তরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ৯ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads