রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে প্রতারণা

রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে প্রতারণা

সংরক্ষিত ছবি

যোগাযোগ

যাত্রী কল্যাণ সমিতির জরিপ

রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে প্রতারণা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ মে, ২০১৮

রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের নামে ৯৬ শতাংশ বাস-মিনিবাস দরজা বন্ধ করে রাস্তায় চলাচল করছে। আর ৯৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা চুক্তিতে চলাচল করছে। ৯৮ শতাংশ অটোরিকশা মিটারের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিশ দাবি করছে। এ ছাড়া যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না ৯০ শতাংশ অটোরিকশা। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। রমজানে নগরীতে যাতায়াতকারী যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি নিয়ে সমিতির পরিচালিত এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির জরিপ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, রমজানের শুরু থেকে পরিবর্তিত অফিস সময় অনুযায়ী যাতায়াতে নগরীর যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। রাজধানীর শনিরআখড়া, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, শাহবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর-১০, মহাখালী, আগারগাঁও, ধানমন্ডি, বনানী, বারিধারাসহ নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ট্যাক্সি ক্যাবের দেখা মেলে না। এ অবস্থায় পাঠাও, উবারসহ অ্যাপসভিত্তিক পরিবহনগুলো অসহায় যাত্রীদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে পাশে দাঁড়াচ্ছে।

এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক যাত্রীছাউনি না থাকায় বা যাত্রীছাউনিগুলো বেদখলে থাকায় বৃষ্টিতে নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ছে নগরীর যাত্রীসাধারণ। বিশেষত নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীরা এ পরিস্থিতিতে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

যাত্রীসাধারণের অফিসযাত্রা এবং ছুটি শেষে ইফতারকে কেন্দ্র করে ঘরে ফেরাকে টার্গেট করে নগরীতে চলাচলকারী বেসরকারি সব কয়টি বাস এখন রাতারাতি সিটিং সার্ভিস বনে গেছে। এসব বাস বিশেষত ইফতারের সময় যাত্রীদের ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দ্রুত চলে যায়। একমাত্র বিআরটিসি বাস ও হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানির বাস মাঝপথের যাত্রীদের বাদুরঝোলা হয়ে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে।

গণপরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপকমিটির ৫টি টিম গত ৬ দিন নগরীর উল্লিখিত স্থানগুলোতে যাত্রী ভোগান্তি ও ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ করে। পর্যবেক্ষণকালে ৩১০টি বাস ও ৫৫৭ জন বাসযাত্রী, ২১৪টি অটোরিকশা, ১৮৫ অটোরিকশার যাত্রী, ৫৬ ট্যাক্সিক্যাব যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ জরিপ পরিচালনা করে।

পর্যবেক্ষণে ৮২ শতাংশ যাত্রী রমজানে গণপরিবহন ব্যবস্থার এমন কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ৯২ শতাংশ যাত্রী জানান, তারা প্রতিদিন যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হন। ৯৮ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার হন। ৬২ শতাংশ যাত্রী চলন্ত বাসে ওঠানামা করতে বাধ্য হন। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ২৮ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন। হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয়, জানেন না ৯৩ শতাংশ যাত্রী। তবে ৮৮ শতাংশ যাত্রী মনে করেন অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, নগরীতে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৯৪ শতাংশ চুক্তিতে চলাচল করছে। ৯৮ শতাংশ অটোরিকশা মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিশ দাবি করছে। আগে ১০ টাকা বকশিশ চাইলেও রমজানে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বকশিশ দাবি করা হচ্ছে। যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না ৯০ শতাংশ অটোরিকশা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads