ট্রাকে ট্রাকে ঢুকছে ভোগ্যপণ্যের চালান, আবার গুদাম থেকে পণ্য চলে যাচ্ছে নগরীর বাইরে। বেচাকেনার হিসাব মেলাতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। রমজান ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে এখন পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। এক কথায় জমজমাট।
পাইকারি ব্যবসার আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। রমজান শুরুর আগেই দেশের নানা অঞ্চল থেকে চনাবুট, রকমারি ডাল, খেজুর, কিশমিশ, পেঁয়াজ, চিনিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য চলে আসে খাতুনগঞ্জের গুদামে। তারপর এখান থেকেই ব্যবসায়ীরা তা কিনে নিয়ে বিক্রি করেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এবারো এর ব্যত্যয় হয়নি। রোজার আগে থেকেই জমজমাট হয়ে উঠেছে এ বাণিজ্যকেন্দ্র।
খাতুনগঞ্জকে কেন্দ্র করে আশপাশের বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পণ্যের অনেক বাজার। এর মধ্যে চালের জন্য বিখ্যাত চাক্তাই, পেঁয়াজ-রসুন-আদা ও তরিতরকারির জন্য হামিদুল্লাহ মিয়ার বাজার, স্টিল সামগ্রী, ঢেউটিন ও শুঁটকির বাজার হিসেবে আছদগঞ্জ বিখ্যাত। এ ছাড়া ডাল, চিনি, চনাবুট, খেজুর, কিশমিশ, মশলার জন্য রয়েছে খাতুনগঞ্জের মূল বাজার।
সরেজমিন দেখা যায়, বকশির হাট থেকে শুরু করে চাক্তাই পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে খাতুনগঞ্জ কেন্দ্রিক জমজমাট বেচাকেনা। সারি সারি ট্রাক দাঁড়ানো সেখানে। কুলিরাও ব্যস্ত ট্রাকে পণ্য তুলতে ও নামাতে। ট্রাকের পাশাপাশি শত শত ঠেলাগাড়িও সেখানে নিয়োজিত পণ্য পরিবহনে।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের যুগ্ম সম্পাদক জামাল হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছে এখনো খাতুনগঞ্জই ভোগ্যপণ্যের প্রধান পাইকারি বাজার হিসেবে বিবেচিত। সারা বছরই তারা এখান থেকে পণ্য নিয়ে যান বিক্রির জন্য। তবে রমজান মাসের চিত্রটা অন্য সময়ের তুলনায় ভিন্ন। এখানকার ব্যবসায়ীরাও রমজানকে ভোগ্যপণ্য বিক্রির প্রধান মৌসুম বলে বিবেচনা করে থাকেন। প্রায় ১৫ রমজান পর্যন্ত চাক্তাই খাতুনগঞ্জে বেচাকেনা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি হয়। পরে সপ্তাহখানেক ব্যস্ততা কিছুটা কম থাকলেও ঈদ সামনে রেখে আবারো খাতুনগঞ্জ জমে ওঠে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নূরুল করিম জানান, এক সময় ঢাকার মৌলভীবাজার, নয়াবাজার, আরমানিটোলা থেকে শুরু করে কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ খুলনা, যশোরের ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনতে আসতেন খাতুনগঞ্জে। সড়ক ও নৌপথে এসব পণ্য নিয়ে যেতেন। কালের পরিক্রমায় এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা ছড়িয়ে গেছে। তারপরও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের সমস্ত ভোগ্যপণ্য এখনো খাতুনগঞ্জই জোগান দেয়। বিশেষ করে রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় সৃষ্টি হয় অন্যরকম আমেজ।