যুক্তরাষ্ট্রকে সিরিয়া ছাড়তে হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) দখল করা ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা হবে বলেও তিনি জানান। রুশ সংবাদ মাধ্যম রাশিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বিবিসি।
সাক্ষাৎকারে বাশার জানান, এসডিএফের সঙ্গে আলোচনার নতুন দরজা খুলেছে সিরিয়া। এটাই তাদের জন্য প্রথম ও শেষ সুযোগ। যদি এতে কাজ না হয় তাহলে শক্তি প্রয়োগ করে ওই অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধার করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রকে এখান থেকে যেতেই হবে। যেকোনো উপায়েই তাদেরকে বিতাড়িত করা হবে। তার মতে, ইরাকের শিক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সিরিয়া থেকে চলে যাওয়া।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে পশু হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হলে বাশার বলেন, এর মাধ্যমে তিনি নিজের চরিত্র তুলে ধরেছেন। এটি তাকেই প্রতিনিধিত্ব করে। আমি মনে করি এক্ষেত্রে একটি মূলতত্ত্ব রয়েছে। আপনি নিজে যে চরিত্রের অধিকারী সেটি দিয়েই অন্যকে যাচাই করবেন।
ট্রাম্পকে এরকম কোনো উপাধি দিতে চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এ ধরনের কথা বলি না। এটি তার (ট্রাম্পের) ভাষা। তিনি নিজে যা তা দিয়েই আমাকে বোঝাতে চেয়েছেন এবং এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এ ধরনের ভাষা ও বাক্য প্রয়োগ করে বাস্তবতাকে আড়াল করা যায় না।
গত মাসে এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে রাসায়নিক হামলার জন্য রাশিয়া ও ইরানকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, বাশারের পৃষ্ঠপোষক রাশিয়া ও ইরানকে চড়া মূল্য দিতে হবে। ট্রাম্পের ওই মন্তব্য নিয়ে এই প্রথম সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট তার প্রতিক্রিয়া জানালেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে রাসায়নিক হামলায় বেশকিছু লোক মারা যায়। এর জবাবে সিরিয়ায় একযোগে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। সিরিয়া সরকার এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও ঘৌতার ওই রাসায়নিক হামলার কথা আবারো অস্বীকার করেন বাশার। তিনি বলেন, তাদের কাছে কোনো রাসায়নিক অস্ত্র নেই। আমরা এ হামলা চালাইনি এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের হামলার কোনো ইচ্ছা নেই।
উল্লেখ্য, এসডিএফ হচ্ছে কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলের যোদ্ধা। উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের বেশকিছু এলাকা এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে। এখানেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের ঘাঁটি। সিরিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা অবৈধভাবে ইরাকে এসেছিল, দেখুন সেখানে কী ঘটেছে। এর থেকে তাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। ইরাক যেমন ব্যতিক্রম নয়, সিরিয়াও তেমনি ব্যতিক্রম নয়। এই অঞ্চলের মানুষ আর বিদেশিদের সহ্য করবে না। সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর সরকারবিরোধীরা যেসব অঞ্চলের দখল নিয়েছিল বাশার সরকার তার খানিকটাই উদ্ধার করেছে। তবে এখনো ইরাক, তুরস্ক ও জর্ডান সীমান্তে বেশকিছু এলাকা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।