দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ম্যাচ হচ্ছে মিরপুরে। শেরেবাংলার উইকেট মানে রানের খনি। সেটার প্রমাণ মিলেছে পঞ্চম রাউন্ডে পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের ম্যাচে। মঙ্গলবার প্রথম দিনটা ভালোই কাটিয়েছিল উত্তরাঞ্চল। বৃষ্টির কারণে পুরো সময় খেলা না হলেও ৫ উইকেটে ২০৪ রানে প্রথম দিন শেষ করে উত্তরাঞ্চল। গতকাল দ্বিতীয় দিন সেই সংগ্রহ আরো বাড়িয়ে নেয় তারা। জহুরুল ইসলাম ও আরিফুল হকের সেঞ্চুরিতে ৪১৫ রানে প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় উত্তরাঞ্চল। নিজেদের প্রথম ইনিংসের শুরুটা বেশ ভালো করেছে পূর্বাঞ্চলও। দ্বিতীয় দিন শেষে তাদের সংগ্রহ বিনা উইকেট ১১০ রান। সব মিলিয়ে প্রথম ইনিংসে ৩০৫ রানে পিছিয়ে আছে পূর্বাঞ্চল।
এদিকে রাজশাহীতে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬১ রানে পিছিয়ে আছে দক্ষিণাঞ্চল।
মিরপুরে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৫ উইকেটে ২০৪ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামেন জহুরুল ইসলাম ও আরিফুল হক। প্রথম দিনের ৪৩ রানকে শতকের কোটায় নিয়ে যান জহুরুল। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার ১৩তম সেঞ্চুরি। ১১৩ রান করে মুমিনুল হকের শিকার হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এর ফলে ১৮৪ রানের লম্বা জুটি। এরপর সেঞ্চুরি পূরণ করেন তরুণ ব্যাটসম্যান আরিফুল হক। আগের দিনের ১৭ রান নিয়ে ব্যাট করতে নেমে এদিন ১০১ রানে আউট হন তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এটি আরিফুলের সপ্তম শতক। এরপর আর কেউ সুবিধা করতে না পারায় ৪১৫ রানে অলআউট হয় উত্তরাঞ্চল। শেষ দিকে তাইজুল ইসলামের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান। পূর্বাঞ্চলের পক্ষে অফ স্পিনার সোহাগ গাজী ৪টি ও মোহাম্মদ আশরাফুল ২টি উইকেট নেন।
জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালো করেছে পূর্বাঞ্চলের দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও তাসামুল ইসলাম। উত্তরাঞ্চলের অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম পাঁচ বোলার ব্যবহার করেও ভাঙন ধরাতে পারেননি তাদের উদ্বোধনী জুটি। দিন শেষে ওপেনিং জুটিতে ১১০ রান তুলেছেন তারা। ক্যারিয়ারের ২০তম হাফসেঞ্চুরি তুলে ৫২ রানে অপরাজিত আছেন লিটন। আর ব্যক্তিগত ৪৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিন লিটনের সঙ্গে ব্যাট করতে নামবেন তাসামুল।
রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে বেশ ভালো অবস্থানে আছে মধ্যাঞ্চল। দক্ষিণাঞ্চলকে ১৯১ রানে গুটিয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংসে ৩০২ রানে অলআউট হয়েছে তারা। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন মধ্যাঞ্চলের ওপেনার সাদমান ইসলাম। ১৭৬ বল খেলে ১২টি বাউন্ডারিতে ব্যক্তিগত ৯৩ রানে আবদুর রাজ্জাকের শিকার হন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। দল পিছিয়ে থাকলেও বল হাতে দারুণ করেন রাজ্জাক। জাতীয় দলে ব্রাত্য হয়ে পড়া বাঁহাতি এই স্পিনার ১০৬ রানে নেন ৬ উইকেট।
আগের দিনের ২ উইকেটে ১৫৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে মধ্যাঞ্চল। সাদমান দারুণ ব্যাটিং করলেও একটা সময় ২২২ রান তুলতে ছয় উইকেট হারায় তারা। জাতীয় দলের তারকা ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আউট হন ১৫ রান করে। সেখান থেকে মধ্যাঞ্চলের তিনশ’ রানের কোটা পার করান সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা ইরফান শুক্কুর। ৭০ বলে ১১টি চারের সাহায্যে ৫৪ রান করে তিনিও রাজ্জাকের শিকার হন। রাজ্জারের ঘূর্ণি জাদুর দিনে বল হাতে ভালো করেছেন তরুণ নাঈম হাসানও। তিনি ৮৩ রানে নেন ৩ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩৭ রানে ওপেনার ফজলে মাহমুদের উইকেট হারায় দক্ষিণাঞ্চল। এরপর দিনের বাকি সময় পার করেন এনামুল হক বিজয় ও ইমরুল কায়েস। দিন শেষে বিজয় ৩১ ও ইমরুল ১০ রানে অপরাজিত আছেন।
চার রাউন্ড শেষে শীর্ষে আছে উত্তরাঞ্চল। এক জয় আর তিন ড্রতে তাদের সংগ্রহ ৪১ পয়েন্ট। দুইয়ে থাকা পূর্বাঞ্চল চার ড্রতে তুলেছে ৩৯ পয়েন্ট। আর চার ড্র নিয়ে ৩৮ পয়েন্টে তৃতীয়তে আছে দক্ষিণাঞ্চল। আর তিন ড্র ও এক হারে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে আছে মধ্যাঞ্চল।