শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় তিন মাস বয়সী শিশু সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে রূপা আক্তার নামে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে । শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার মধ্য ছয়গাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিশুটি ঐ এলাকার চাঁনমিয়া সরদারের মেয়ে। খবর পেয়ে রোববার দুপুরে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে ভেদরগঞ্জ থানা পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মধ্য ছয়গাঁও গ্রামের চাঁনমিয়ার স্ত্রী রূপা আক্তার বিয়ের পর হঠাৎ করেই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। এতে তাদের সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই রূপা তার মা শোভনা বেগমের সঙ্গে থাকতেন। গত তিন মাস পূর্বে রূপা রাত্রী ও আদিত্য নামে দুই যমজ সন্তানের জম্ম দেয়। শনিবার দিবাগত রাতে হঠাৎ করে চাঁনমিয়ার পরিবারের কাছে খবর আসে, রাত্রী নামে কন্যা শিশুটি মারা গেছে। এ ঘটনার পর শিশুটির বাবা চাঁনমিয়া অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে তার মনসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রী রূপা আক্তার।
নিহত রাত্রীর দাদি জাহানারা বেগম বলেন, রূপা ভারসাম্যহীন হওয়ায় রাত্রী আর আদিত্য জম্ম নেওয়ার পর বাঁচ্চা দুটিকে আমাদের কাছে দিয়ে দিতে বলেছিলাম। কিন্তু রূপার মা শোভনা বেগম আমাদের কাছে বাঁচ্চাদের দেয়নি। সে সেদিন বাঁচ্চাদের কে আমাদের দিয়ে দিলে আজকে এ ঘটনা ঘটতো না। এদিকে বিষয়টির খবর পেয়ে রোববার সকালে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রূপা আক্তার এবং তার মা শোভনা বেগমকে ওই বাড়িতে পায়নি। তাদের এক প্রতিবেশী মিজানুর রহমান জানান, রাতে তারা শিশুটির কান্নার আওয়াজ পেয়েছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর তারা দেখেন শিশুটি মারা গেছে বলে খবর পেয়ে বাবাসহ অন্য স্বজনরা এসেছেন। এরপর সুযোগ বুঝে শিশুটির মা ও নানি সটকে পড়ে।
নিহতের ফুফু তাহমিনা বেগম বলেন, আমার ভাবি বাচ্চাদের রেখে বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় আমরা ধারণা করছি, শিশুটিকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। তবে সুরতহালে শিশুটির শরীরে কোন রকম আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে বলা যাবে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।