২০২২ সাল পর্যন্ত সরকারের একটি প্ল্যান অব অ্যাকশন আছে। আমাদের দেশে একসময় আইন ছিল না, এখন চমৎকার একটি আইন হয়েছে। এরপরও মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে। এর মানে, কোথাও না কোথাও একটা গ্যাপ আছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি গতকাল রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম আয়োজিত ‘মানব পাচার ও অনিয়মিত অভিবাসন’ পরিস্থিতি নিয়ে মিডিয়া ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মানব পাচারের সবচেয়ে বড় কারণ অজ্ঞতা। অজ্ঞতার কারণেই বিদেশগামী কর্মীরা দালালের দ্বারস্থ হয়, নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয় বেশিরভাগ কর্মী। এই মানব পাচার আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা। দেশে মানব পাচারের চার হাজার মামলার মধ্যে মাত্র একটি মামলার আসামির শাস্তি হয়েছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। মামলা দ্রুত শেষ করার জন্য যা যা দরকার, করতে হবে। দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে, শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, একটি মেকানিজমের মধ্যে মধ্যস্বত্বভোগীদের সরিয়ে দিয়ে সেখানে প্রকৃত শিক্ষিত লোকদের আনা দরকার। কারণ সরকারের পক্ষে এত লোক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এই রিক্রুুটিং এজেন্টগুলো যেমন আমাদের ভুগিয়েছে, আবার এ রিক্রুটিং এজেন্টগুলো মার্কেটও তৈরি করেছে। তাই সঠিক রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো যদি থাকে, এই প্রতারক রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো যদি আউট হয়ে যায়, সঠিকভাবে যদি আমরা একটি মেকানিজম তৈরি করতে পারি, তাহলে মাইগ্রেশন সিস্টেমকে একটি আকারে নিয়ে আসা যাবে। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপের দেশগুলো থেকে আমাদের মানুষদের ফেরত আসা আর দেখতে চাই না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এ জন্য সরকার ও সুশীল সমাজের যারা আছেন তাদের অর্জনগুলো তুলে ধরতে হবে। আমরা সৌদি আরব, ইউরোপসহ অন্যান্য দেশ থেকে ফেরত আসা আর দেখতে চাই না।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার এবং অনিয়মিত অভিবাসন বিষয়ে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে একটি প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়। ব্র্যাকের স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড এম্পাওয়ারমেন্ট কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক আসিফ সালেহ্’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিআইডির স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ও ইন্টেলিজেন্সের ডিআইজি মো. শাহ আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর। উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) মোহাম্মদ শামসুর রহমান, আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) বাংলাদেশের চিফ অব মিশন জর্জি গিগরি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের হেড অব কো-অপারেশন মারিও রনকনিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি অভিবাসন সংস্থার প্রতিনিধিরা।