মাঝারি বাজেটে স্মার্টফোন কিনতে চান, এমন ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি হুয়াওয়ে বাজারে এনেছে ওয়াই ৭ প্রো ২০১৯। স্মার্টফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন চিপসেট। এরই মাঝে বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছে স্মার্টফোনটি। নতুন ক্রেতাদের জন্য ফোনটির বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
ডিসপ্লে : হুয়াওয়ের নতুন এ স্মার্টফোনটিতে আছে ৬ দশমিক ২৬ ইঞ্চির আইপিএস এলসিডি ডিউড্রপ স্ক্রিন। এতে ফুল এইচডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। ফোনটির ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন ৭২০ পিক্সেল বাই ১৫২০ পিক্সেল এবং অ্যাসপেক্ট রেশিও ১৯:৯। স্ক্রিন টু বডি রেশিও প্রায় ৮৭ শতাংশ। ফোনটির স্ক্রিনের ওপরের অংশে ছোট্ট ডিউড্রপ নচে বসানো আছে ফ্রন্ট ক্যামেরা।
চিপসেট : ফোনটিতে সিপিইউ হিসেবে আছে স্ন্যাপড্রাগন ৪৫০ অক্টাকোর চিপসেট এবং গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট বা জিপিইউ হিসেবে আছে অ্যাড্রেনো ৫০৬। এর সিপিউ অক্টাকোর ১ দশমিক ৮ গিগাহার্টজ কর্টেক্স এ৫৩।
স্টোরেজ : হ্যান্ডসেটটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩ জিবি র্যাম এবং ৩২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। এতে রয়েছে সর্বোচ্চ ৫১২ পর্যন্ত মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করার সুবিধা। তবে এতে কোনো ডেডিকেটেড মেমোরি কার্ড স্লট ব্যবহার করা হয়নি।
অপারেটিং সিস্টেম : অ্যান্ড্রয়েড ওরিও ৮.১ নির্ভর হুয়াওয়ের নিজস্ব ইএমইউআই ৮.২ অপারেটিং সিস্টেম সমৃদ্ধ এই মোবাইল হ্যান্ডসেটটিতে নিরাপত্তা সুবিধায় হুয়াওয়ের ফেস আনলকের দ্বিতীয় ভার্সনটি যুক্ত করা হয়েছে। তবে থাকছে না কোনো ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
ক্যামেরা : সেলফির যুগে তরুণদের কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো দরকার ক্যামেরা। এ ফোনটির মূল আকর্ষণই ক্যামেরা। হুয়াওয়ে ওয়াই ৭ প্রোতে মূল ক্যামেরা হিসেবে দেওয়া আছে ১৩ ও ২ মেগাপিক্সেলের ডুয়েল এআই ক্যামেরা সেটআপ। প্রত্যেকটি ছবিই রিয়েল টাইমে অপটিমাইজড হয়ে আসে। সামনের দিকে অর্থাৎ ফ্রন্ট ক্যামেরা হিসেবে আছে ১৬ মেগাপিক্সেলের শক্তিশালী সেন্সর। যার কারণে সব সেলফিই হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিটাচ করা। আলাদাভাবে এডিট করার কোনো প্রয়োজন হবে না।
ব্যাটারি : দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহারের সুবিধা দিতে স্মার্টফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৪ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ারের শক্তিশালী ব্যাটারি। সাধারণ ব্যবহারে অনায়াসেই দুই দিন পার করে দেওয়া যাবে। যারা নিয়মিত গেম খেলেন এবং ভিডিও দেখেন তারাও একদিনের বেশি ব্যবহার করতে পারবেন একবার চার্জ দিয়ে। চার্জ সংরক্ষণে থাকছে এআই পাওয়ার সেভিংস টেকনোলজি। ফলে দীর্ঘসময় চালিয়েও ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ পাবেন গ্রাহকরা।
ভোল্টি সুবিধা : এতে ভয়েস ওভার এলটিই (ভোল্টি) প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে। এ ফোনটি দিয়ে ভোল্টি সেবার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা এইচডি (হাই ডেফিনিশন) ভয়েস কল উপভোগের পাশাপাশি দ্রুততর কল সংযোগের সুবিধা পাবেন। ভোল্টি প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকরা ভয়েস ও ডেটা উভয় সেবাই উপভোগ করতে পারবেন। এলটিই ডাটা নেটওয়ার্কে আলাদাভাবে ভয়েস সেবাকেও কার্যকর রাখে ভোল্টি প্রযুক্তি। হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমো ইত্যাদি ওভার দ্য টপ (ওটিটি) সেবার চেয়ে ভোল্টি সেবায় ব্যাটারি লাইফ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি পাবে গ্রাহকরা।
অন্যান্য সুবিধা : ব্যবহারকারীর শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা মাথায় রেখে হ্যান্ডসেটটিতে রাখা হয়েছে ইজি মোড। যা চালু করলে ফন্ট এবং আইকনগুলো সাধারণ আকারের চেয়ে বড় দেখা যাবে এবং লাউড স্পিকারের শব্দও বৃদ্ধি পাবে। হ্যান্ডসেটটিতে ডুয়েল ফোরজি সুবিধা থাকায় একসঙ্গে দুটো ফোরজি সিম কার্যকর থাকবে। এ ছাড়া রয়েছে ভয়েস ওভার এলটিই, ব্লুটুথ ভার্সন ৪.২ এবং ২.৪ গিগাহার্টজে ওয়াইফাই সংযোগ সুবিধা। ইউএসবিতে দেওয়া হয়েছে টাইপ ২ সংযোগ সুবিধা।
সকল শ্রেণির ক্রেতার কথা চিন্তা করে প্রতিষ্ঠানটি অরোরা ব্লু, কোরাল রেড এবং মিডনাইট ব্ল্যাক এই তিনটি রঙে হুয়াওয়ে ওয়াই ৭ প্রো ২০১৯ ভার্সনটি পাওয়া যাচ্ছে।
দাম : বাংলাদেশের বাজারে হুয়াওয়ে ওয়াই ৭ প্রো ২০১৯ ভার্সনটি পাওয়া যাচ্ছে ১৬ হাজার ৯৯৯ টাকায়।