বায়তুল মোকাররম চত্বরে গড়ে উঠেছে ইসলামী বইয়ের মার্কেট। বায়তুল মোকাররম আদর্শ পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতি সদস্যদের মাধ্যমে এই মার্কেটে বিভিন্ন ইসলামী বই বিক্রি হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসলামী বইয়ের আলাদা মার্কেটের জন্য আবেদন করে আসছেন এ সমিতির সদস্যরা। বহু চেষ্টা ও আবেদনের পর নামমাত্র কয়েকজনকে একটি স্থানে দোকান দেওয়া হয়েছে। বাকিরা রাস্তার পাশে বসে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে ব্যবসা করছেন। এ প্রসঙ্গে কথা হয় বায়তুল মোকাররম আদর্শ পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এম মুজিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১৯৯৫ সালে সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর দীর্ঘ ২৪ বছরে দোকান বরাদ্দের নামে বিভিন্নভাবে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। দুই ফুট বাই চার ফুট আকারে আমাদের সমিতির ৪০ সদস্যকে মাত্র ২০টি দোকান দেওয়া হয়। এভাবে এত ছোট আকারে এবং এক দোকানকে দুই মালিকানায় বরাদ্দ দেওয়ার ইতিহাস কোনো দেশে নেই। বিভিন্ন সময় দোকানের আকার বৃদ্ধিকরণ ও সমিতির সদস্যদের মালিকানা পৃথকীকরণের প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ প্রদান করেছেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনোটি বাস্তবায়ন হয়নি।’ একই সমিতির সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ সিরাজুল হক বলেন, ‘জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসলামী বইয়ের মার্কেটে দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রে বায়তুল মোকাররম আদর্শ পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের অগ্রাধিকার ও তুলনামূলক বেশি সুযোগ প্রদান করা উচিত। কারণ এই সমিতির সদস্যদের দাবি ও আন্দোলনের ভিত্তিতেই জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে আলাদা স্থানে ইসলামী বইয়ের আলাদা মার্কেট তৈরির ধারণা সৃষ্টি হয়।’ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসলামী বইয়ের দোকান বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে বায়তুল মোকাররম আদর্শ পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের বঞ্চিত না করার জন্য এ সমিতির সদস্যদের পক্ষ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও ধর্মমন্ত্রী বরাবর জোর দাবি জানানো হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট্ট জায়গায় ব্যবসা করা বা ভালো মানের বিভিন্ন বই রাখা সত্যিই মুশকিল। একজনের টুল অন্যজনের দোকানের ভেতর চলে যায়। বই কিনতে আসা ক্রেতাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। এক দোকানে দাঁড়ালে অন্য দোকানে পা চলে যায়। জাতীয় মসজিদ কমপ্লেক্সে ইসলামী বইয়ের মার্কেটের এহেন দৈন্যদশা মুসলমান হিসেবে আমাদের জন্য অবশ্যই লজ্জার। এ বিষয়ে কথা হয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে আলাদা একটি ইসলামী বইয়ের মার্কেট হোক— এটা আমাদের সবার প্রাণের দাবি। ইসলামী বইয়ের বড় বড় প্রকাশনীসহ সবাইকে নিয়ে একটি সমৃদ্ধ ইসলামী বইয়ের মার্কেট করার লক্ষ্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা কাজ করছি।
সম্প্রতি পূর্ব পাশে ইসলামী পুস্তক মার্কেট সংযোজনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে খুব শিগগির দোকান বরাদ্দ করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে সরকারি এবং ইফা প্রবর্তিত নীতিমালার আলোকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে।’