মনোনয়ন ইশতেহার নির্বাচনী কমিটি নিয়ে ব্যস্ত আ.লীগ

লোগো আ.লীগ

নির্বাচন

মনোনয়ন ইশতেহার নির্বাচনী কমিটি নিয়ে ব্যস্ত আ.লীগ

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ২৪ অক্টোবর, ২০১৮

নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্তকরণ, প্রার্থী মনোনয়ন ও প্রতিটি সংসদীয় আসনে নির্বাচনী কমিটি গঠন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে আওয়ামী লীগ। এসব কাজে আপাতত বেশি গুরুত্ব দিয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার চেষ্টা করছে দলের শীর্ষ পর্যায়। আগামী নির্বাচনে ২০০ সংসদীয় আসনে দলের প্রার্থীদের বিজয়ের টার্গেট করে নির্বাচনী কর্মকৌশল চূড়ান্ত করেছে দলটি। সব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিকে চূড়ান্ত পরিণতি দেওয়ার অপেক্ষায় আছে ক্ষমতাসীন দলটি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন

মনোনয়ন ইশতেহার নির্বাচনী কমিটি নিয়ে ব্যস্ত আ.লীগ

 মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং এর আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ‘লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ‘সংশয়’ প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে রাজনীতিতে আলোচনা-সমালোচনাও চলছে। যদিও ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আওয়ামী লীগের নেতারাও মনে করেন, নির্ধারিত সময়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এ লক্ষ্যেই তারা প্রস্তুত।

‘নভেম্বর মাসের যেকোনো দিন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা’- ইসির দেওয়া এ বক্তব্য ও ধারণাকে সামনে রেখে পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও এক বক্তব্যে এমন কথা জানালেন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই মন্ত্রিসভার আকার ছোট হয়ে যাবে। ১৫ থেকে ২০ দিন পরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। এরপর নির্বাচনী ব্যস্ততা শুরু হবে।’

দলের নীতিনির্ধারণী সূত্র জানায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কর্মকৌশল নির্ধারিত হয় গত ১৫ সেপ্টেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে। দলটি ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে দলের মনোনয়ন প্রার্থীদের তালিকা। দলটির ইশতেহার তৈরির প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইশতেহার ঘোষণার ক্ষেত্রেও অন্য সব দলের চেয়ে এগিয়ে থাকতে চায় দলটি। নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ও মনোনয়নকেন্দ্রিক কোন্দল নিরসনে প্রতি সংসদীয় এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী কমিটি গঠন চলছে।

চলতি মাসের মধ্যে সারা দেশে এ কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে নির্দেশ আছে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে। নির্বাচন পরিচালনা করতে দলটির গঠিত ১৪০ সদস্যের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও সারা দেশে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূলের নেতারাও নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে সরব দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরে গণভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন দেশের প্রতি ভোটকেন্দ্র ও সংসদীয় এলাকাভিত্তিক দলীয় কমিটি গঠন করার। অক্টোবর মাসের মধ্যে সারা দেশে এসব কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে চূড়ান্ত নির্দেশও দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে দেওয়া হয়। দলের মনোনয়ন না পেলেও কেউ যেন তার সমর্থকদের নিয়ে দলের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী মাঠে থাকেন, সে লক্ষ্যেই এসব কমিটি গঠিত হচ্ছে। কমিটিতে জেলা, থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের রাখা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে যেকোনোভাবে হোক তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করে একক প্রার্থীর বিজয় চূড়ান্ত করাই দলটির লক্ষ্য।

জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অধীনে পাঁচ সদস্যের ১৩টি উপকমিটি গঠন করেছে দলটি। নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ২৬ নেতাকে উপকমিটিগুলোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ৬৪ জেলা দল গঠন করা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে ১২ লাখ পোলিং এজেন্টের প্রশিক্ষণের কাজও চলছে।

নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, টানা প্রায় দুই বছর দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজন ও গবেষকদের গবেষণা, গভীর পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শের মাধ্যমে প্রস্তুত হয়েছে আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনের ইশতেহার। দলের সভাপতির নির্দেশে দলের প্রবীণ, অভিজ্ঞ তরুণ ও শীর্ষ কয়েক নেতা শুরু থেকেই জড়িত আছেন ইশতেহার প্রণয়নের কাজে।

২০০৮ ও ২০১৪ সালের ইশতেহারের মতো যেন চমক সৃষ্টি করতে পারে, দীর্ঘ সময় নিয়ে এমন ইশতেহার ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। প্রায় সব শ্রেণির মানুষের চাহিদা ও মতামত সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে সেসবের আলোকে তৈরি হয়েছে ইশতেহার। গত কয়েকবারের সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার কিছুটা আগে ইশতেহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরিকল্পনাও দলের আছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইশতেহার জাতির কাছে তুলে ধরার কথা রয়েছে।

ইশতেহার প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মানুষের চাহিদা ও মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এবারের ইশতেহারে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই মনোনয়ন কারা পাচ্ছেন, তা জানা যাবে। আমরা নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’

সূত্র জানায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে প্রার্থীর নাম প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। তবে চূড়ান্ত সব প্রার্থীকেই দল থেকে সেপ্টেম্বর মাসেই ‘সবুজ সঙ্কেত’ দেওয়া হয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads