নীলফামারী ডিমলা উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত একযোগে ওই তিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভোট গণনা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ডিমলা উপজেলা পরিষদ হলরুম থেকে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে একটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত, একটিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী এবং একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফজলুল করিম জানান, উপজেলার টেপাখড়ি বাড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ময়নুল হক। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ৯৬৭টি ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতীদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম সাহিন আনারস প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৮৯৩টি ভোট পান।
অপর দিকে গয়াবাড়ি ইউনিয়নে বেসরকারি ফলাফলে চেয়াম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী সামসুল হক। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ২৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতীদ্বন্দ্বি ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৫৬৮ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। এছাড়াও এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী রোকনুজ্জামান মটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৬৪৫টি ভোট পান।
এদিকে খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে বেসরকারি ভাবে পূনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রবিউল ইসলাম লিথন। তিনি চশমা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৪২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতীদ্বন্দ্বি ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ৮১৮ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।
এছাড়াও এখানে বিএনপি প্রার্থী আতিকুজ্জামান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৪৩৫ ভোট এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাকারিয়া হোসেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৬৭৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।
টেপাখাড়ি বাড়ি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ডিমলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায়।
অপর দিকে খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদেও নির্বাচনী ফলাফল ঘোষনা করেন নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ডিমলা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা রাজিউর রহমান।
ফজলুল করিম আরো জানান, ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা হলেও সীমান জটিলতা দেখা দেওয়া টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি এবং গয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসীল স্থগিত করা হয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের চারটি ছিটমল বিলুপ্ত হলে ইউনিয়ন তিনটিতে সীমানা জটিলতার মামলা দায়ের হয় উচ্চ আদালতে। সে মামলার কারণে ২০১৬ সালের ঘোষিত তফশীল স্থগিত হয়েছিল। ওই জটিলতার নিস্পত্তি হওয়ায় চলতি বছরের গত ২০ সেপ্টেম্বর নূতন কওে ওই তিন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২১ অক্টোবর রোববার ওই তিন ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল আটটা থেকে বিকাল চাটা পর্যন্ত একযোগে তিন ইউনিয়নের ২৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সুষ্ঠ্য ও শান্তি পূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করায় সকাল থেকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ভোটাররা উৎসব মূখর পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে বিলুপ্ত তিনটি ছিটমহলের নাগরিকরা এই প্রথম বার মতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তিনটি ইউনিয়নের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১২জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৩১জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৯০জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিন ইউনিয়নে মোট ভোটার ছিলেন ৪৪ হাজার ৪ জন ভোটার।