দীর্ঘ ২০ বছর পরে অবশেষে ইজারা দেওয়া হলো নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত। আড়তটি ৯ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছেন মাহাবুব হোসেন নামে স্থানীয় এক আড়ত মালিক। এখন থেকে লিচু বাগান মালিকদের আর কোনো কমিশনের টাকা দিতে হবে না। তবে যারা লিচু ক্রয় করবেন-তাদেরকে প্লাস্টিকের ক্যারেট প্রতি পাঁচ টাকা, বড় ঝুঁড়ি ২০টাকা এবং ছোট ঝুঁড়ি প্রতি ১০টাকা ইজারা দিতে হবে। এর ফলে ক্রেতা-বিক্রেতা যেমন দফায় দফায় কমিশন এবং চাঁদাবাজি মুক্ত হবে, অন্যদিকে প্রতিবছর সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু রাসেল।
এর আগে রোববার নাটোরে গুরুদাসপুরে নিরাপদ লিচু উৎপাদন এবং বাজারজাত করা নিয়ে স্থানীয় বেড়গঙ্গারামপুর একটি লিচু বাগানে লিচু ব্যবসায়ী, আড়তদারসহ জড়িত সবার সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। এসময় লিচু বাগান মালিকরা জানান, বাগানে লিচু পেকে যাওয়ার কারণে বেশিরভাগ মালিক এখন লিচু সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়তে নিয়ে আসে। এখানে মোট ১৬টি আড়ত রয়েছে। এখানে গড়ে ৫০লাখ টাকার লিচু ক্রয়-বিক্রয় হয়। কিন্তু সমিতি কমিশনের নামে প্রত্যেক বাগান মালিকের কাছ থেকে একশ লিচু বিক্রি করলে ১৭টাকা কমিশন দিতে হয়। ফলে কৃষকের লাভের টাকা যায় মধ্যস্থকারীর পকেটে।
জানা গেছে, গুরুদাসপুরে উৎপাদিত লিচু নিয়ে গত ২০বছর ধরে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত পরিচালনা হয়ে আসছে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানার জায়গা ওপর আড়ত প্রতিষ্ঠিত এমন দাবি তোলায় এতদিন উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিতে পারেনি। এই সুযোগে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত মালিক সমিতি কমিশনের নামে ১০০লিচু বিক্রয়ের ওপর বাগান মালিকদের কাছ থেকে আট টাকা, পাইকারি ক্রেতাদের কাছ থেকে চার টাকা এবং এক ঝাঁকা লিচুর ওপর আরো পাঁচ টাকা কমিশন আদায় করে আসছিল। এতে করে কৃষকের লাভের টাকা পকেটে ঢুকতো আড়ত মালিকদের পকেটে। বিষয়টি নজরে আনার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অবশেষে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত এলাকায় অনুসন্ধান করে খাস জায়গা বের করে হাটবাজার ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী গতকাল সোমবার দুপুরে উন্মুক্ত ইজারা ঘোষণা করেন গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার আবু রাসেল। এসময় আগামী দুই মাসের জন্য সাত লাখ ৬০টাকায় লীজ গ্রহণ করেন স্থানীয় মাহাবুব হোসেন নামের এক আড়ত মালিক। এছাড়া ২০ শতাংশ ভ্যাট ধরে মোট ৯লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়।





