বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস আজ বৃহস্পতিবার। ১৯৮৭ সাল থেকে প্রতিবছর ৩১ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এর সহযোগী সংস্থাসমূহের উদ্যোগে তামাকের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ তুলে ধরে তামাক ব্যবহার প্রতিরোধে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে ‘বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘তামাক ও হৃদরোগ’।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী প্রদান করেছেন। এ উপলক্ষে তামাক বিরোধী বিভিন্ন সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, হৃদরোগজনিত মৃত্যুর প্রায় ১২ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক ব্যবহার এবং পরোক্ষ ধূমপান।
হৃদরোগের কারণ হিসেবে উচ্চ রক্তচাপের পরেই তামাক ব্যবহারের অবস্থান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন ২০১৭ এর তথ্য মতে, ২০০৯ থেকে ২০১৬ সময়কালে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৪১.৩ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দ্য ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই)-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০১৬ সময়ে বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর কারণের তালিকায় হৃদরোগ সপ্তম স্থান থেকে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে এবং এই পরিবর্তনের হার ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ। আর এই মৃত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে তামাকের অবস্থান ৪র্থ।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো মনে করে, বিগত দিনে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ ক্ষেত্রে এফসিটিসি স্বাক্ষর ও অনুস্বাক্ষর, আইন ও বিধিমালা প্রনয়ন এবং আইন সংশোধন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক অর্জন রয়েছে। জনস্বার্থে দেশেআইন ও বিধিমালা প্রণীত হলেও কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন আরো অগ্রগতি। তামাক নিয়ন্ত্রণে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি পদক্ষেপে মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ। এ সকল চ্যলেঞ্জ মোকাবেলা করণীয় নির্ধারণ করে পদক্ষেপ গ্রহন করা অত্যন্ত জরুরী ।
‘ইউনাইটেড ফোরাম এগেইন্সট টোবাকো’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও ‘ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ’ এর অধ্যাপক ডা, সোহেল রেজা চৌধুরী একটি গবেষণা প্রতিবেদন উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশে ৪৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৪ কোটি ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করেন, যার মধ্যে ২৩ভাগ (২ কোটি ১৯ লাখ) ধূমপানের মাধ্যমে তামাক ব্যবহার করেন এবং ২৭.২ভাগ (২ কোটি ৫৯ লাখ) ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন।
তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের হার নারীদের মধ্যে অনেক বেশি। বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ৭ভাগ (পরিসংখ্যান, ২০১৩) কিশোর-কিশোরী তামাক ব্যবহার করে। এছাড়াও তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ( ২০১৩) মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, তামাকখাত থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায় তামাক ব্যবহারের কারণে অসুস্থ রোগীর চিকিৎসায় সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে তার দ্বিগুণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। তামাকজনিত মোট ক্ষয়ক্ষতি হিসেব করলে তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৩ শতাংশ।





