টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবি : সংগৃহীত

ফিচার

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জনে ৪৫ নারী

  • প্রকাশিত ২১ এপ্রিল, ২০১৮

২০১৮ সালে বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত ‘টাইম’ ম্যাগাজিন। প্রতিবছরই জরিপের ভিত্তিতে এই তালিকাটি তৈরি করে টাইম। এবার জরিপে এগিয়ে থাকা প্রভাবশালী ১০০ জনের মধ্যে ৪৫ জনই নারী। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাদের একজন। প্রভাবশালী নারীদের নিয়েই আজকের আয়োজন-

শেখ হাসিনা

বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ২০১৮ সালের এই তালিকায় রাজনৈতিক নেতাদের ক্যাটাগরিতে স্থান করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

নেতাদের তালিকার প্রথমে রয়েছেন- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের নাম। আছেন ব্রিটিশ রাজপুত্র হ্যারি ও তার হবু স্ত্রী মেগান মার্কেলও। মোট পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বকে তুলে আনা হয়েছে টাইমের তালিকায়। বাকি চারটি ক্যাটাগরি হলো- পাইওনিয়ার্স, আর্টিস্টস, আইকনস এবং টাইটানস।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে টাইমসে একটি নোট লিখেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশীয় পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি। তিনি লিখেছেন, ’৯০-এর দশকে প্রথম শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়। যখন তিনি সামরিক শাসনের অবসানের জন্য আন্দোলন করছিলেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালে আমাদের দেখা হয়। তখন তিনি আবারো সেনাসমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলেন। এরপর নির্বাচনে তিনি বিপুলভাবে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন।

তিনি আরো বলেন, তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার মেয়ে হিসেবে শেখ হাসিনা কখনো লড়াই-সংগ্রামে ভীত হননি। গত আগস্ট থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। শেখ হাসিনা তাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক চ্যালেঞ্জকে মেনে নিয়েছেন। এজন্য তিনি প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। যদিও বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে।

দীপিকা পাড়ুকোন

সৌন্দর্য আর অভিনয় দিয়ে সারা বিশ্বকে মাতাচ্ছেন বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। দিন দিন তিনি যেন নিজেকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। বলিউড জয়ের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তার জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। কিছুদিন আগেই বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নারীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন দীপিকা। এবার বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায়ও নাম লেখালেন এই নায়িকা।

টাইম জরিপে ২০১৮ সালের ১০০ জন প্রভাবশালীর তালিকায় রয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন। এবার তিনিই একমাত্র ভারতীয় অভিনেত্রী, যিনি টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ জন  প্রভাবশালীর তালিকায় জায়গা করে নিলেন।

দীপিকার এমন অর্জনে বলিউডে আনন্দের বন্যা বইছে। সবাই তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। প্রেমিক রনবীর সিং থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনপ্রিয় আরেক বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কাও সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন দীপিকার জন্য। ১৯৮৬ সালে ডেনমার্কেও কোপেনহ্যাগেনে জন্ম নিলেও বেড়ে উঠেছেন ভারতের বেঙ্গালুরুতে।

বন্দুকবিরোধী তরুণ-তরুণীরা

২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ড স্টনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে ঢুকে একদল বন্দুকধারী এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। তাতে নিহত হয় ১৭ জন ছাত্রছাত্রী। বেঁচে যাওয়া পাঁচজন ছাত্রছাত্রী ক্যামরুন ক্যাসকি, জ্যাকলিন করিন, ডেভিড হগ, এমা গঞ্জালেস, অ্যালেক্স উইন্ড পরে একটি সংগঠন খোলেন। এই সংগঠনের উদ্দেশ্য বন্দুকবিরোধী আন্দোলনে সবাইকে সচেতন করা। পাঁচ বন্ধু এবার স্থান পেয়েছেন টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায়। তাদের দলে দু’জন মেয়েও আছেন। তাদের নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে লিখেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামা লিখেছেন, তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রতিচ্ছবি। পুরনো ভুলগুলো শুধরে দিয়ে তারা জাতিকে নতুন কিছু উপহার দেবে।

 

রুথ ডেভিডসন

একটা সময় স্কটিশ কনজারভেটিভ দল মরে যাচ্ছিল। ১৯৯৭ সালেও তারা কোনো আসন পায়নি সংসদে। এরপর একজন নারী এসে দলের হাল ধরলেন। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে ২০১৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলটি ৩১টি আসন জয় করে। স্কটিশ কনজারভেটিভ দলকে নতুন করে যিনি প্রাণ দিয়েছেন তিনি রুথ ডেভিডসন। ১৯৭৮ সালে এডিনবার্গে জন্ম নেন রুথ ডেডিভসন। পেশাগত জীবনে প্রথম ছিলেন সাংবাদিক। ২০০৯ সাল থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র পর তাকেই ধরা হয় ব্রিটেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নারী নেত্রী। হয়তো থেরেসা মে’র জায়গায় তাকে একদিন দেখা যেতে পারে বলেও আশা করছেন অনেকে।

 

কিশা

মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী। মাত্র ১৮ বছর বয়সে প্রথম অ্যালবাম বাজারে ছেড়ে বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্রেই এ পর্যন্ত তার রেকর্ড বিক্রি হয়েছে প্রায় ৫৯ মিলিয়ন কপি। বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৭৮ মিলিয়ন কপি। হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলনে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তিনি আন্তর্জাতিকভাবে আরো খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। নারী অধিকার আন্দোলনে তিনি একজন সোচ্চার কর্মী। হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলনের সময় তিনি রেইনবো গানটি বাজারে ছাড়েন, এক গানে তুলে ধরেন নারীদের সমস্ত গোপন বেদনা।

 

ম্যাক্সিন উর্টেস

 

যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক সার্ভিসে ম্যাক্সিন উর্টেস ৪১ বছর ধরে কর্মরত আছেন। ১৯৭৬ সালে তিনি প্রথম ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাসেম্বলিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে।  নারী কংগ্রেসম্যানদের মধ্যে তিনি এখন সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ। জন্ম ১৫ আগস্ট ১৯৩৮। এখনো তিনি নারী-অধিকার ও সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সবচেয়ে সোচ্চার কণ্ঠস্বর। ইরাক যুদ্ধের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাকে বলা হয় ভবিষ্যৎ-প্রজন্মের পথিকৃৎ। এখনো তিনি নাতির বয়সী মেয়েদের সঙ্গে বসে সমানতালে কাজ করেন। প্রভাবশালী নারীর এ উপাধি তার জন্য নতুন নয়, এ তার সব সময়ই প্রাপ্য বলে মনে করা হয়।

জেসমিন ওয়ার্ড

জেসমিন ওয়ার্ড আমেরিকান লেখিকা ও তুলান বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক। ১৯৭৭ সালে জন্ম নেওয়া এই লেখকের ছোটবেলা কেটেছে মিসিসিপির  প্রত্যন্ত গ্রামে। তিনি তার লেখার মাধ্যমে আফ্রিকানদের দুঃখ, দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেছেন। টাইম ম্যাগাজিন প্রকাশিত বিশ্বের প্রভাবশালী মানুষদের তালিকায় পাইওনিয়র বিভাগে রয়েছেন এই লেখিকা।

 

ইসসা রায়

জনপ্রিয় লেখক, অভিনেত্রী, পরিচালক, প্রযোজক ও ওয়েব সিরিজ পরিচালক ইসসা রায়। তিনি ১৯৮৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলসে জন্ম নেন। কলেজে থাকার সময় মিউজিক ভিডিও বানানোর মাধ্যমে হাতেখড়ি তার। এই সময় তিনি নাটক লেখা ও নির্দেশনায় পটু হয়ে ওঠেন। কলেজ শেষে তিনি দ্য পাবলিক থিয়েটার থেকে ফেলো সমপূর্ণ করেন। ওয়ার্ড ব্ল্যাক গার্ল নামে ইউটিউব ভিত্তিক একটি জনপ্রিয় সিরিজ ঝড় তোলে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। পাইনিয়র

 

প্যাগি হুইটসন

মার্কিন বায়োকেমিস্ট গবেষক, নভোচারী এবং নাসার সাবেক নভোচারী প্রধান প্যাগি হুইটসন। মহাকাশে তিনটি মিশনে ৬৬৫ দিন ২২ ঘণ্টা ২২ মিনিট কাটিয়েছেন তিনি। ১৯৬০ সালে জন্ম নেওয়া এই নারী বড় হয়েছেন রিংগোল্ড কাউন্টিতে। লেখাপড়া শেষ করে জনসন সেপস সেন্টারে কাজ করেছেন কিছুদিন। ১৯৮৯ সালে যোগ দেন নাসায়। ১৯৯৬ সালে নভোচারী হিসেবে নির্বাচিত হন হুইটসন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে মহাকাশে একটানা ২৯০ দিন কাটিয়ে ফেরত আসেন পৃথিবীর বুকে। পাইনিয়র

জন রডার

যুক্তরাষ্ট্রের হানিংটনের অগ্নিনির্বাপক দলের প্রধান জন রডার। রিডার দেশজুড়ে মাদক উদ্ধার ও মহামারীতে আক্রান্তদের জন্য কাজ করেছেন। তিনি ২০ বছরের অধিক সময় ধরে এই পেশায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন। পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ইতিহাসে অগ্নিনির্বাপক বিভাগের মতো একটি বিভাগের তিনিই প্রথম নারীপ্রধান। পাইনিয়র

নাইস নাইলান্টি লেঙ্গেট্টে

কেনিয়ার মাসাই জনগোষ্ঠীর একজন নাইস নাইলান্টি লেঙ্গেট্টে। মাসাইদের ঐতিহ্য অনুযায়ী, মেয়েরা কর্মক্ষেত্রে সুযোগ পায় না এবং বাল্যবিয়ের শিকার হয়। কিন্তু নাইস এই প্রথাটাকে ভাঙতে সক্ষম হন। তিনি মাসাই নেতাদের ব বোঝানোর চেষ্টা করেন সুন্দর সমাজ গড়ার জন্য নারীদের কর্মক্ষেত্রে সুযোগ দিতে হবে। তিনি কেনিয়ার প্রায় ১৫ হাজার বাল্যবিয়ে রোধ করতে সক্ষম হন। আফ্রিকান তরুণীদের জন্য অনন্য পথপ্রদর্শক নাইস। পাইনিয়ার

 

কার্ডি বি

কার্ডি বি একজন আমেরিকান র্যাপার। ১১ অক্টোবর ১৯৯২ সালে আমেরিকার ব্রুনেক্সে জন্ম নেওয়া কার্ডির বেড়ে ওঠা নিউইয়র্কে। কার্ডির শুরু হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের হাত ধরে। ২০১৫ সালে সঙ্গীতে পথচলার শুরু কার্ডির। ২০১৭ সালে তার বোদাক ইয়োলো গানটি শ্রেষ্ঠ র্যাপ সঙ্গীতের মর্যাদা পায়। টাইম ম্যাগাজিন অনুযায়ী বিশ্বের প্রভাবশালী নারীদের মধ্যে অন্যতম কার্ডি বি।

 

টিফানি হাডিশ

জনপ্রিয় কমিডিয়ান এবং আমেরিকান অভিনেত্রী টফানি হাডিশ। জীবনের প্রথম দিকে অনেক সংগ্রাম করেছেন হাডিশ। তিনি একটি কমেডি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবার নজরে আসেন। প্রথমে অতিথি অভিনেতা হিসেবে পথচলার শুরু হলেও রিয়াল হাজব্যান্ড অব হলিউড সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে কাজ শুরু করেন টিফানি হাডিশ। অপারাহ উইনফ্রে নেটওয়ার্ক ব্যানারে নির্মিত ইফ লাভিং ইউ ইজ রঙ সিরিজেও কাজ করছেন হাডিশ।

 

জ্যানেট মোক

জ্যানেট মোক একজন আমেরিকান লেখিকা, উপস্থাপিকা এবং তৃতীয় লিঙ্গ অধিকারকর্মী। তার বই রিডিফাইনিং রিয়ালনেস প্রকাশিত হওয়ার পরপরই নিউইয়র্ক টাইমস বেস্ট সেলার নির্বাচিত হয়। ১৯৮৩ সালের ১০ মার্চ হনুলুলুতে জন্ম নেওয়া লেখক টাইম ম্যাগাজিন প্রকাশিত বিশ্বের প্রভাবশালীদের একজন।

ক্রিস্টিনা জিমেঞ্জ

কিশোর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ইকুয়েডর থেকে যুক্তরাষ্ট্র আসেন ক্রিস্টিনা জিমেঞ্জ। কয়েক বছর পর জিমেঞ্জ ‘ইউনাইটেড উই ড্রিম’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠন থেকে তারা অভিবাসীদের বৈধতা ও তাদের কাজের ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন শুরু করেন।

টাইম ম্যাগাজিনে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সেলেনা গোমেজ তার সম্পর্কে লিখেন, ক্রিস্টিনা প্রায় ৭ লাখ কাগজ-পত্রহীন শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন।

জোডি ক্যান্টর

মার্কিন সাংবাদিক জোডি ক্যান্টর বিশ্বখ্যাত নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি এই পত্রিকাটির ‘আর্টস অ্যান্ড ল্যাইজার’র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তিনি দু’টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাভার করেছেন। ‘দ্য ওবামাস’ নামে একটি বহুল বিক্রীত বইয়ের লেখক তিনি। ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটিতে তার জন্ম।

 

ম্যাগান টোহি

নিউইয়র্ক টাইমসের নামকরা একজন সাংবাদিক ম্যাগান টোহি। এ ছাড়া রয়টার্স, শিকাগো ট্রিবিউন পত্রিকায়ও তিনি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। ডাক্তারদের সেবা শোষণ, ধর্ষণ সিন্ডিকেট এবং পরিত্যাক্ত শিশুদের নিয়ে তার প্রতিবেদনগুলো বেশ সাড়া ফেলেছে। সাংবাদিকতায় তিনি পুলিৎজার পুরস্কারও জয় করেছেন। এ ছাড়া ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক, নারী কেলেঙ্কারি ও কর প্রদান স্বচ্ছতা নিয়ে অনুসন্ধান করেছেন। তার বাবা-মা দুজনই সাংবাদিক।

 

সাভান্নাহ গুথরি

অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম হলেও তিনি নামকরা একজন মার্কিন টিভি সাংবাদিক। এবিসি নিউজের আলোচিত সকালের অনুষ্ঠান ‘টুডে’র প্রধান উপস্থাপিকা তিনি। ২০০৭ সালে তিনি এনবিসিতে যোগদান করেন। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি হোয়াইট হাউজের সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় ‘আইকন’ ক্যাটাগরিতে রয়েছেন তিনি।

 

হোডা কটবি

মার্কিন সাংবাদিক, লেখক এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব হোডা কটবি বর্তমানে এনবিসি নিউজের সঙ্গে জড়িত। এবিসির মর্নিং শো ‘টুডে’তে তিনি উপস্থাপনার দায়িত্বও পালন করছেন। ওকলাহামায় জন্ম নেওয়া কটবি পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় বেড়ে উঠেছেন। কটবির বাবা-মা মিসরীয়। ১০০ প্রভাবশালীর মধ্যে আইকন ক্যাটাগরিতে আছেন তিনিও।

জাসিন্দা আরদের্ন

নিউজিল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। বয়স মাত্র ৩৮। জন্মেছিলেন ১৯৮০ সালের ২৬ জুলাই। ২০০৮ সালে যখন প্রথম সংসদে প্রবেশ করেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৩০। নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে তরুণ সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। খুব অল্প বয়সেই তিনি তার পেশাগত দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। ২০১১ সালে গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের গবেষক হিসেবে কাজ করেন। তারপর যুক্তরাজ্যের প্রধানন্ত্রী টনি ব্লেয়ারেরও নীতিনির্ধারক উপদেষ্টা ছিলেন কিছুদিন। ২০০৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্কলাসটিক ইয়থ সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে তিনি নিউজিল্যান্ডের লেবার পার্টির নেতৃত্ব দেন। কেউ কল্পনা করেনি লেভার পার্টি ক্ষমতায় যাবে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে নিজের প্রচণ্ড কর্মদক্ষতার জোরেই জাসিন্দা দলকে জিতিয়ে নিলেন। এ বছর তিনি প্রথমবারের মতো মা হতে যাচ্ছেন।

 

ন্যানসি পেলোসি

যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের মাইনরিটি লিডার। তিনি ইতালিয়ান-আমেরিকান। জন্ম ইতালিতে ১৯৪০ সালে। ২০১১ সাল থেকে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানফ্রান্সিসকোতে প্রতিনিধি হিসেবে আছেন। এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৫২তম হাউজ স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতালিয়ান-আমেরিকান হিসেবে তিনিই প্রথম নারী যিনি কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ছাড়াও একজন সমাজকর্মী হিসেবে তিনি প্রচুর সুনাম কুড়িয়েছেন। নারী, সন্তানপ্রসব ও স্বাস্থ্যসচেতনার পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। তার সম্পর্কে বলা হয়, তিনি সব সময় পর্দার আড়াল থেকে কাজ করেন। আড়াল থেকে কাজ করলেও তার প্রভাব এবার সামনে এল। ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পাওয়াতে তার অনুসারীরা বলেছেন, যোগ্যতম নারী যোগ্যতম তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

মেগান মার্কেল

মেগান মার্কেল পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন অভিনেত্রী ও মডেল হিসেবে। এখন তিনি ব্রিটিশ রাজবধূ। রাজপুত্র হ্যারির বাগদত্তা স্ত্রী। ২০১৭ সালে তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে তারা ছিলেন কেবল গোপন আলোচনার বিষয়। হ্যারির সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পরই মেগান বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন। বিয়ের পর মেগান অভিনয়জীবন ত্যাগ করেন এবং সারাজীবনের জন্য নিজেকে মানবিক সেবায় নিয়োজিত করবেন বলে ঘোষণা দেন।

প্রথমে তিনি প্রচণ্ড সমালোচনার পাত্রী হলেও এখন তিনি নিজের ভুবনজয়ী হাসি ও ব্যবহার দিয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছেন। এমনকি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথেরও। ১৯৮১ সালের ৪ আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলসে তার জন্ম। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হয়তো একদিন শাশুড়ি ডায়ানার স্থানটি অর্জন করবেন, সৌন্দর্য ও মানবিকসেবায়।

নিকোল কিডম্যান

হলিউডের চলচ্চিত্র সম্পর্কে যাদের ন্যূনতম ধারণা আছে, তারা তাকে এক নামেই চেনেন। ১৯৮৯ সালে যখন তার ডেডকাম ছবিটি বিশ্বনন্দিত হয় তারপর থেকে তিনি আর চোখের আড়াল হননি। এরপর একের পর এক ভুবনখ্যাত ছবিতে আবির্ভূত হয়েছেন আর নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন। ২০০২ সালে দ্য আওয়ার্স ছবিতে বিখ্যাত লেখিকা ভার্জিনিয়া উলফের চরিত্রে রূপদান করে জয় করেছিলেন অস্কার পুরস্কার। অস্ট্রেলীয় এ অভিনেত্রী এখন যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসী। যদিও দু’দেশেরই নাগরিকত্ব আছে তার। বাপ-দাদার বাড়ি অস্ট্রেলিয়ায় হলেও তিনি জন্মেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপের হনুলুতে, ১৯৬৭ সালের ২০ জুন। প্রথম বৈবাহিক জীবন সুখের ছিল না। প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর ১৯৯০ সালে বিয়ে করেছিলেন আরেক বিখ্যাত অভিনেতা টম ক্রুজকে। সে বিয়েও ২০০১ সালে ভেঙে যায়। এখন একাই আছেন।

ক্লো কিম

মার্কিনি স্নোবোর্ডার ক্লো কিম ২০১৮ শীতকালীন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয় করেন। এক্স গেমস চারবারের স্বর্ণপদক বিজয়ী এবং ইয়থ অলিম্পিক গেমসের ‘স্নোবোর্ডিং’ ইভেন্টে তিনিই প্রথম স্বর্ণপদক বিজয়ী নারী। ২০১৮ সালে তিনি সবচেয়ে কনিষ্ঠ নারী হিসেবে অলিম্পিকে স্নোবোর্ডিংয়ে পদক বিজয়ী হন।

ক্লো কিমের জন্ম ২৩ এপ্রিল ২০০০ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লং বিচ শহরে। তার বাবা-মা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এ শহরে বসবাস শুরু করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। কিমের বাবা ক্যালিফোর্নিয়া মাউন্টেন হাইয়ে তাদের স্থানীয় রিসোর্টে মাত্র ৪ বছর বয়সে তার হাতে স্নোবোর্ড তুলে দেন। ক্লো কিমন মাত্র ৬ বছর বয়সে টিম মাউন্টেন হাই দলের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ছোটবেলা থেকেই ক্লো কিম শুনে আসছেন তিনি একদিন পৃথিবীর বিখ্যাত স্নোবোর্ডার হবেন।

জেনিফার লোপেজ

জেনিফার লিন লোপেজ একজন মার্কিন অভিনেত্রী, সঙ্গীতশিল্পী, বিনোদন তারকা, ব্যবসায়িক উদ্যোক্তা ও প্রযোজক। ১৯৮৬ সালে মাই লিটল গার্ল নামক ছবিতে ছোট্ট একটি চরিত্রের মাধ্যমে বিনোদন জগতে প্রবেশ করেন তিনি। ১৯৯১ সালে ‘ইন লিভিং কালার’ নামক অনুষ্ঠানে নাচের মাধ্যমে তিনি বিনোদন জগতে নিয়মিত হন। ১৯৯৭ সালে সেলেনা নামক একটি চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তার পরের বছরই ‘আউট অব সাইট’ সিনেমায় অভিনয় করে লোপেজ লাতিন আমেরিকার প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে দশ লাখ ডলার পারিশ্রমিক পান। ১৯৯৯ সালে তার প্রথম গানের অ্যালবাম ‘অন দ্য সিক্স’ বের হওয়ার পর তিনি অভিনয় জীবন থেকে সঙ্গীত জগতে সার্থকভাবে পদার্পণ করেন। বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন শ্রেষ্ঠ ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ‘আইকন’ ক্যাটাগরির প্রথমেই রেখেছে ৪৯ বছরের লোপেজকে। ১৯৬৯ সালের ২৪ জুলাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন।

 

অপরাহ উইনফ্রে

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন অপরাহ উইনফ্রে। তিনি সারা বিশ্বেই টকশো রানি হিসেবে খ্যাত। খুব সাধারণ অবস্থা থেকে নিরন্তর লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন। বিশ্বের প্রভাবশালীদের মধ্যে নিজের অবস্থান রাখা অপরাহর জন্য নতুন কিছু নয়। টাইম ম্যাগাজিনে এ বছরের প্রভাবশালীদের মধ্যেও তিনি স্বমহিমায় উজ্জ্বল। ১৯৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপিতে জন্ম নেওয়া অপরাহ একজন জনপ্রিয় মার্কিন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। টকশো উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে তিনি ১৯৮০’র দশকে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। একই সঙ্গে তিনি একজন মানবহিতৈষী ও গণমাধ্যম ধনকুবের। আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃত টকশো ‘দ্য ওপরা উইনফ্রে শো’ তাকে একাধিক এমি পুরস্কার এনে দিয়েছে। এই শো টেলিভিশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রচারিত বলে গণ্য।

গ্যাল গ্যাডট

গ্যাল গ্যাডটের মুচকি হাসি, মন ভোলানো চাহনি দেখে পাগল হয়েছে সারা বিশ্ব। সারা জাগানো চলচ্চিত্র ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’র মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী। তার অসাধারণ অভিনয় এবং দুর্দান্ত অ্যাকশন দর্শকদের নতুন করে আগ্রহী করে তুলেছে কমিকের ওয়ান্ডার ওম্যানের ব্যাপারে। শুধু তাই নয়, এই কৃতিত্ব ৩২ বছরের গ্যাডটকে পৌঁছে দিয়েছে টাইমের শীর্ষ ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায়।

১৯৮৫ সালের ৩০ এপ্রিল গাল গ্যাডটের জন্ম ইসরাইলে। বেড়ে উঠেছেন সেখানেই। ২০০৪ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি ‘মিস ইসরাইল’ খেতাব জিতেন। দুই বছর তিনি ইসরাইলের সেনাবাহিনীতে যুদ্ধ প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ ম্যুভির মাধ্যমে তিনি প্রথমবারের মতো সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন। বিবাহিত গ্যাডট দুই সন্তানের জননী। তার বাবা বর্তমান ইসরাইলের ৬ষ্ঠ প্রজন্ম। একসময় ইউরোপে ছিলেন মায়ের পূর্বপুরুষরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তারা কুখ্যাত কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন।

 

রিহানা

একজন বার্বাডিয়ান গায়িকা, গীতিকার এবং অভিনেত্রী। ১৯৮৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বার্বাডোসের সেন্ট মাইকেলে জন্ম রিহানার। বেড়ে উঠেছেন ব্রিজটাউন-এ। তিনি প্রথম সঙ্গীত জগতে প্রবেশ করেন ২০০৩ সালে। ক্যারিয়ারের পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়গুলোতে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বেশ সোচ্চার। সম্প্রতি এ সম্পর্কিত করণীয় নিয়ে তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গে শুভেচ্ছা সাক্ষাৎ করেন।

নিজেকে ইতোমধ্যে কিংবদন্তিরূপে প্রকাশ করছেন হলিউড পপ সেনসেশন রিহানা। কেউ কেউ বলেন হাল ফ্যাশনের প্রতিভূ এই কৃষ্ণসুন্দরী একটি নিজস্ব ফ্যাশন ধারার প্রবর্তন করে ফেলেছেন। সমকালীন রক-পপ সঙ্গীতাঙ্গনে খুব অল্প বয়সে যারা অসাধারণ সাফল্য ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তাদের অন্যতম রিহানা। পুরো নাম রবেন রিহানা ফেন্টি।

‘গুড গার্ল গন ব্যাড’ শিরোনামে তার তৃতীয় অ্যালবামটি সারা বিশ্বেই আলোড়ন তোলে। নয়টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয় এই অ্যালবাম। সাফল্য তাকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকাতেও।

ক্যারমেন ইউলিন ক্রুজ

বিশ্বের ক্ষমতাধর ১০০ ব্যক্তির মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন সান জোয়ানের বর্তমান মেয়র ক্যারমেন ইউলিন ক্রুজ। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই রাজনীতিবিদের জন্ম ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৩ সালে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে হ্যারিকেন ম্যারিনার আঘাতে বিধ্বস্ত দ্বীপগুলোর মানুষ যখন প্রয়োজনীয় সাহায্য না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিল তখন তিনিই তাদের সহযোগিতা চেয়ে প্রথম আওয়াজ তোলেন।

জুডি শিকাকো

শিকাগোতে জন্মগ্রহণকারী ৭৮ বছর বয়সী জুডি একজন নারীবাদী চিত্রশিল্পী। তার সকল সৃষ্টি ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে নারীর ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দেয়। জুডির সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজগুলোর একটি হলো ‘দ্য ডিনার পার্টি’। যা ব্রকলিন জাদুঘরে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। তার লেখা বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দ্য বার্থ প্রজেক্ট, বিয়ন্ড দ্য ফ্লাওয়ার। টাইমের তালিকায় আর্টিস্ট ক্যাটাগরিতে রয়েছেন তিনিও।

রোজান বার

গোল্ডেন গ্লোব এবং এমি অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পাওয়া রোজান বার একাধারে একজন অভিনেত্রী, কমেডিয়ান, লেখিকা এবং প্রযোজক। ৬৫ বছর বয়সী রোজান বারের জন্ম ১৯৫২ সালের ৩ নভেম্বর।

মাইলি ববি ব্রাউন

২০১৮ সালের প্রভাবশালী ১০০ জনের তালিকায় স্থান পেয়েছে মাত্র ১৪ বছরের মাইলি ববি ব্রাউন। টাইমের এ বছরের প্রকাশিত ১০০ জনের তালিকায় সর্বকনিষ্ঠ সে। জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন টিভি অনুষ্ঠানের চরিত্র ‘ইলিভেন’-এর মধ্য দিয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা তার। টাইম ম্যাগাজিনে এমি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জন পল এই কিশোরীর সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাতের কথা লিখতে গিয়ে বলেন, ‘বয়স ১২ বছর হলেও তার মানসিক পরিপক্বতা এবং একাগ্রতা বয়সের তুলনায় অনেক এগিয়ে। তার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, আমি ভবিষ্যৎ কোনো অভিজ্ঞ মেনটরের সঙ্গে কথা বলছি।’

 

হুইটনি উলফ হার্দ

হুইটনি উলফ হার্দ বিশ্বের সফল নারী উদ্যোক্তাদের একজন। ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের ক্ষমতাশালী ৩০ নারীর তালিকায় তিনি আছেন। ফোর্বসের প্রচ্ছদেও তিনি স্থান পান নারী উদ্যোক্তা হিসেবে বিশেষ অবদানের জন্য। তিনি ‘বাম্বল’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। ফোর্বর্সের দেওয়া তথ্য মতে, তার প্রতিষ্ঠানের মূল্যমান প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের চেয়েও বেশি।

 

সিন্ডি হল্যান্ড

সিন্ডি হল্যান্ড মার্কিন বিনোদনধর্মী প্রতিষ্ঠান নেটফ্লিক্সের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক। ২০১২ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শুধু নেটফ্লিক্সই নয়, যেন হলিউডেই বিরাট একটি পরিবর্তন চলে আসে। ২০১৩ সাল থেকে নেটফ্লিক্স হাউজ অব কার্ডস ধারাবাহিক নাটকটি প্রচার করতে শুরু করে। যেখানে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের মধ্যে একটা যুগান্তকারী সমন্বয় প্রতিষ্ঠিত হয়। সিন্ডি শিল্পী ও শিল্পের দারুণ সমন্বয় প্রতিষ্ঠিত করেন। সিন্ডি শুধু বিনোদন দেননি, একটি যুগকে পাল্টে দিয়েছেন।

এলিজাবেথ ডিল্লার

এলিজাবেথ ডিল্লার একজন স্বনামধন্য তরুণ মার্কিন আর্কিটেক্ট। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বার্কলে আর্ট মিউজিয়াম এবং প্যাসিফিক ফিল্ম আর্কাইভ তার ডিজাইন করা। এজন্য তিনি ন্যাশনাল একাডেমি অব ডিজাইন থেকে আজীবনের সম্মাননা অর্জন করেছেন। বলা হচ্ছে, তিনি জড় বস্তুর মধ্যেও প্রাণ দিতে পারেন। তার নকশা করা জাদুঘরটি একটি যুগান্তকারী নিদর্শন হয়ে থাকবে।

 

তারানা বার্ক

আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এই আমেরিকান ২০০৬ সাল থেকে শুরু করেন যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে নারী সচেতনতার প্রোগ্রাম হ্যাশ ট্যাগ মি-টু। প্রোগ্রামটি ২০১৭ সালে একটি আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনে অবদানের জন্য ২০১৭ সালেও টাইম ম্যাগাজিনের সেরা ব্যক্তিদের মধ্যে জায়গা করে নেন। গার্লস ফর জেন্ডার ইক্যুইলিটির সিনিয়র ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন বর্তমানে।

 

সোনিয়া ফ্রিডম্যান

একজন ব্রিটিশ নাট্য প্রযোজক। জীবনের সবটুকু সময় ব্যয় করেছেন নাট্য জগতের জন্য। পুরস্কারের ঝুলিও ভরেছে কাজের স্বীকৃতির জন্য। ২০১৭ সালে তৃতীয়বারের মতো দ্য স্টেজ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন প্রযোজক হিসেবে। ২০১৮ সালেও ফ্রিডম্যান ১৮তম অ্যানুয়াল হোয়াট অন স্টেজ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। টিভি প্রোগ্রামের জন্যও বহু পুরস্কার বাগিয়েছেন।

লীনা ওয়াইথ

একজন সফল অভিনেত্রী, প্রযোজক আর গল্পকার হিসেবে আমেরিকায় জনপ্রিয় হয়েছেন লীনা ওয়াইথ। নেটফ্লিক্স সিরিজে লেখক এবং অভিনেত্রী হিসেবে কুড়িয়েছেন অঢেল সম্মান। ১৯৮৪ সালের ১৭ মে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রীর পুরস্কারের সংখ্যাটাও নেহায়েত কম নয়। মাস্টার অব নন কমেডি সিরিজ লেখার জন্য ২০১৭ সালে এমি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

 

ড্যানিয়েলা ভেগা

১৯৮৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন চিলির সান্তিয়াগোতে। একই সঙ্গে সঙ্গীত এবং অভিনয়গুণে পারদর্শী রূপান্তরিত লিঙ্গের এই মানুষটি আলোচনায় আসেন এ ফ্যান্টাস্টিক ওমেন ছবিটি অস্কার জয়ের পর। সেই ছবিতে তিনি মূল চরিত্রে অভিনয় করেন। এ বছর ৯০তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ড উপস্থাপনা করে ফের আলোচনায় ফিরেছেন।

 

গ্রিটা গারউইগ

একসঙ্গে অনেকগুলো পরিচয় তার। অভিনেত্রী, গীতিকার, পরিচালক এবং চিত্রনাট্য লেখক। জন্ম ১৯৮৩ সালের আগস্টে। অস্কারের ইতিহাসে তিনি পঞ্চম নারী যিনি সেরা পরিচালকের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালেই তিনি লেডি বার্ড ছবিটির জন্য এ মনোনয়ন লাভ করেন। ২০১৭ সালে ইসরাইলবিরোধী একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন  আদালাহ নিউইয়র্ক নামে। পরে অবশ্য এজন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads