বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তায় ‘লাইফস্ট্র’

লাইফস্ট্র ব্র্যান্ডের ‘সাকার’ দিয়ে ময়লা পানি থেকেও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তায় ‘লাইফস্ট্র’

  • ফিচার ডেস্ক
  • প্রকাশিত ৬ জুন, ২০১৮

বিশুদ্ধ পানির জন্য এক রকম যুদ্ধই চলছে সবখানে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীর দুইশ দশ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে লক্ষাধিক মানুষ। এরই মধ্যে একটি সুখবর দিয়েছে একদল গবেষক। তারা বলছেন, লাইফস্ট্র ব্র্যান্ডের ’চোষোক’ দিয়ে  টেনে খেলে সেখানে প্রায় শতভাগ বিশুদ্ধ পানি পান করা সম্ভব।  

গবেষকদের দাবি, লাইফ স্ট্রর চোষক দিয়ে ময়লা পানি থেকে ৯৯.৯ শতাংশ পরজীবী এবং ৯৯.৯৯৯৯ শতাংশ ব্যাকটেরিয়া মুক্ত পানি পাওয়া যাবে।

লাইফ স্ট্রতে ব্যবহার করা হয়েছে এক ধরনের ফাঁপা পর্দাযুক্ত আবরণ। এতে ক্লোরিন বা আয়োডিনের মত কোনো ধরনের কেমিকেল ব্যবহার করা হয়নি। 

 

বিশ্বব্যাপী প্রতিনিয়ত বিশুদ্ধ পানির চাহিদা বাড়লেও বাড়ছে না জোগানের উৎস। দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) মতে, বিশ্বে ৮৮ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জলের সুবিধা থেকে এখনো বঞ্চিত। আমাদের এই পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ পানি হলেও ব্যবহারযোগ্য পানির পরিমান সামান্য। পৃথিবীর মোট পানির প্রায় ৯৭ শতাংশই লবণাক্ত আর মাত্র ১.৫ শতাংশ স্বাদু পানি।

আইএফআরসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূষিত পানি পান করার কারণে প্রতিবছর প্রায় ৩১ লাখ মানুষ মারা যায়। পানিবাহিত রোগে প্রতি মিনিটে অন্তত চার শিশুর মৃত্যু হয়। সাধারণত দূষিত পানিতে থাকা পরজীবী আর ব্যাকটেরিয়ার কারণে কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড জ্বরের মতো ভয়াবহ প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ।


১৯৯৬ সালে ডেনমার্কের উদ্যোক্তা মিখেল ফ্রান্ডসেন আফ্রিকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। তার প্রধান লক্ষ্য ছিল পানিবাহিত রোগ থেকে মানুষের জীবন বাঁচানো। তার তৈরি করা লাইফস্ট্র গিনির মানুষকে পরজীবী কৃমি থেকে রক্ষা করেছে। দূষিত পানির মাধ্যমে এই কৃমি মানুষের শরীরে গিয়ে প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। কিন্তু মিখেলের তৈরি করা লাইফস্ট্র আফ্রিকার দেশ থেকে ভয়াবহ এই পরজীবীকে একপ্রকার সমূলে উৎপাটন করতে সক্ষম হয়েছে।

১৯৮৬ সালে আফ্রিকার দেশগুলোতে সাড়ে ৩৫ লাখ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত থাকলেও এখন তা শূন্যের কাছাকাছি। আফ্রিকার দেশগুলোর বিশেষ এই কৃমির কথা মাথায় রেখেই মূলত এই লাইফস্ট্র তৈরি করা হয়েছিল। এখন এই লাইফস্ট্র’তে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এক একটি স্ট্র দিয়ে ৪ হাজার লিটার পর্যন্ত পানি পরিশোধন করা সম্ভব যা ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য পরজীবী মুক্ত করে পানিকে। হাইতি, ইকুয়েডর, পাকিস্তান এবং থাইল্যান্ডেও ব্যাপক ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত সংস্করণের এই লাইফস্ট্র।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads