বিক্রি বাড়ছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির

ছবি : সংগৃহীত

পণ্যবাজার

বিক্রি বাড়ছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির

  • নাজমুল হুসাইন
  • প্রকাশিত ৩০ অগাস্ট, ২০১৮

এক সময় দেশে চাহিদার ৯৫ শতাংশ যানবাহন ছিল পুরনো বা রিকন্ডিশন। তখন প্রতিবছর দেশে গড়ে ৩২ থেকে ৩৩ হাজার রিকন্ডিশন গাড়ি বিক্রি হতো। কিন্তু ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে হঠাৎ পুরনো গাড়ির ওপর শুল্কবৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় এ খাতে মন্দা তৈরি হয়। পরবর্তী দুই অর্থবছরে বিক্রি নেমে আসে এক-চতুর্থাংশে।

এরপর থেকে ক্রমেই বাড়ছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বিক্রি। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) তথ্য থেকে জানা গেছে, গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) দেশে ২৩ হাজার ১০২টি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বিক্রি হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে (২০১৬-১৭) দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বিক্রি ছিল ২০ হাজার ১৪৯টি।

সংগঠনটির দেওয়া তথ্য মতে, এখন প্রতিবছর আমদানিকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ির মধ্যে ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রাইভেটকার। বাকিটা অন্যান্য যানবাহন। বর্তমানে দেশে গাড়ির বাজার রয়েছে ৪ হাজার কোটি থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার।

মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে গাড়ি বিক্রি বেড়েছে বলে দাবি করেন বারভিডার সাবেক সভাপতি আবদুল হামিদ শরীফ। তিনি বাংলাদেশের খবরকে বলেন, নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় কষ্ট করে হলেও একটি মধ্যবিত্ত পরিবার একটি গাড়ি কিনছে। আর দেশের মানুষের সক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় এটা সম্ভব হচ্ছে।

সরকার থেকে কোনো সুবিধা না পাওয়ার কথা জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, উল্টো গত বাজেটে পুরনো গাড়ি আমদানি নিরুৎসাহিত করতে অবচয় সুবিধা বছরভিত্তিক ৫ শতাংশ হারে কমানো হয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম সিসি ভেদে এক লাখ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

রাজধানীর আরো কয়েকজন পুরনো গাড়ি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বাজেটে অবচয় সুবিধা কমানোর কারণে এখন নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্কবৈষম্য তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ইয়েলো বুকের নতুন মূল্য হতে ডলার বা ট্রেড ডিসকাউন্ট বাবদ ১০ শতাংশ বিয়োজনের কারণে গাড়ির দাম বাড়ছে।

গাড়ি ব্যবসায়ীরা জানান, গাড়ি বিক্রির দিক থেকে নতুনের চেয়ে পুরনো অনেক বেশি এগিয়ে। দেশে এখন পর্যন্ত নতুন গাড়ির চাহিদা ২ থেকে আড়াই হাজারে সীমাবদ্ধ রয়েছে। আর পুরনো গাড়ির বাজার প্রতিবছর শতকরা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। দেশে দুই ডজন বড়সহ মোট ৪ শতাধিক আমদানিকারক রয়েছেন। আর এসব গাড়ি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিনশর বেশি শোরুমে, যার অর্ধেকই ঢাকায়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, গাজীপুর, কুমিল্লাসহ অন্যান্য বড় শহরে গাড়ির শোরুম রয়েছে।

গাড়ির বাজার বড় হচ্ছে এমন প্রমাণ মেলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্যেও। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, দেশে গত সাত বছরে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত যেখানে দেশে যানবাহনের সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ ৯৮ হাজার, তা এখন ২৮ লাখ ২৩ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের পরেই বেড়েছে প্রাইভেটকারের সংখ্যা। এ ছাড়া জিপ, মাইক্রোবাস, মিনিবাসের মতো গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে, যা রিকন্ডিশন্ডই বেশি।

বিআরটিএ বলছে, সারা দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত মোটরযানের মধ্যে ৩ লাখ ৪১ হাজার ৮০৭টি প্রাইভেটকার। পাশাপাশি জিপের সংখ্যা ৫৬ হাজার ৩৯৩টি। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে প্রায় ১১ হাজার ৩০৭টি প্রাইভেটকার নিবন্ধন নিয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads