বরিশাল সিটি করপারেশন নির্বাচনে বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সিপিবির মেয়র প্রার্থীরা ভোট বর্জনের ঘোষনা দিয়েছেন। সোমবার দুপুরে পৃথক পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম,ব্যালট পেপার ছিনতাই, কারচুপি সিলমারাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন মেয়র প্রাথীরা।
সোমবার দুপুর ১২টার সময় বরিশাল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব ও ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষনা প্রদান করেন। একই সাথে তিনি নির্বাচন অফিস ঘেরাও করার কথাও জানান।
এসময় সরোয়ার অভিযোগ করে বলেন, ভোট শুরুর আগেই ৭০-৮০টি কেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষ হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র থেকে তাদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করা সহ নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়।
সরোয়ার আরো বলেন, সরকার ইচ্ছে করলে বরিশালে সুষ্টু নির্বাচন করতে পারতো। আওয়ামীলীগের নগ্ন হস্তক্ষেপে পুলিশ ও প্রশাসন যেভাবে বরিশাল সিটি নির্বাচনে ব্যালট ছিনিয়ে নিযেছে, এবং ব্যাপক কারচুপি অনিয়ম, করছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং লজ্জাজনক। আমি এরকম ভোট গ্রহন কখনো দেখি নাই। আজকে ভোটের দিন বাসদের মেয়র প্রার্থী মই মার্কার ডাঃ মনীষাকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র অন্ধ্যকারে চলে যাচ্ছে। মানুষেরর মৌলিক অধিকার ও ভোটাধিকার হরণ করা হচ্ছে। বরিশালবাসী ও জনগন আওযামীলীগকে এজন্য একদিন কাঠগড়ায় দাড় করাবে। আমি ভোট স্থগিতের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন দিয়েছি। তারা এব্যপারে এখনো কিছু জানায়নি। একই সাথে আমি আজকের এ ন্যাক্কার জনক একতরফা নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করি ও নিন্দা জানাই। সেই সাথে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষনা দিলাম। এসময় সংবাদ সম্মেণলনে কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন, উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি ও ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের নির্বাচনী সমন্বয়কারী এবায়েদুল হক চান,সহ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতা কমৃীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সরোয়ারের নেতৃত্বে পেসক্লাব আগরপুর রোড থেকে সদর রোড অশ্বিনী কুমার টাউন হল প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মীরা এ সময় নির্বাচন কশিমনারের পদত্যাগ দাবী করে। এসময় বিভিন্ন শ্লোগান দেয় নেতা কর্মীরা। নির্বাচনে দায়িত্বরাত পুলিশ, বিজিবিসহ অন্রান্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসময় অনেকটা অসহায়ের মত দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ওবাইদুর রহমান মাহবুব সোমবার সকাল ১১টায় সদর রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সমম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন। তিনি জানান, আজকের এ নির্বাচনটি হচ্ছে প্রহসনের নির্বাচন। আওয়ামীলীগ সরকার ভোট চুরি করেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই তাই একতরফার এ নির্বাচন থেকে সড়ে এসে ভোট বর্জনের ঘোষনা দিচ্ছি। পরে হাতপাখার প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ওবাইদুর রহমান মাহবেবর নেতৃত্বে নগরীর সদররোডে বিক্ষাভ মিছিল বের করে। মিছিলটি সিটি কলেজ মোড় অশ্বিনী কুমার হল প্রাঙ্গন থেকে সদররোড বিবির পুকুর পশ্চিম পাড় দিয়ে অতিক্রম করে।
অপরদিকে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের মই প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ডাঃ মণীষা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তার সমর্থকরা সদর রোডে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি ও তাকে লাঞ্চিত করার প্রতিবাদে। অন্যদিকে বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি সিপিবির কাস্তে প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ সোবার দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন। নজিরবিহীন ব্যাপক অনিয়ম ভোট কারচুপির প্রতিবাদে তিনি নির্বাচন বর্জন করার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানান।
অন্যদিকে জাতীয়পার্টি থেকে বহিস্কৃত লাঙ্গল প্রতীক্রে মেযর প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বরিশাল সিটির নির্বাচন স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশনে অবেদন করেছেন। ব্যাপক কারচুপি, অনিয়ম ভোট ডাকাতির জন্য তিনি এ নির্বাচন স্থগিত চান।