বাস চলছে, সংখ্যায় কম

পরিবহন মালিক শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘট শেষে রাস্তায় বাস নামতে শুরু করলেও তা সংখ্যায় কম

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

বাস চলছে, সংখ্যায় কম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৭ অগাস্ট, ২০১৮

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে টানা তিন দিন অঘোষিত ধর্মঘট পালনের পর গতকাল সোমবার থেকে রাজধানীতে চলা শুরু করেছে নগর পরিবহন, ছাড়ছে দূরপাল্লার বাস। সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হলেও তা ছিল খুবই কম। এ কারণে এ দিনও যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

নিরাপত্তার অজুহাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘট শেষে বাস চলা শুরু করলেও সকালে তাতে উঠতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় অফিসগামী যাত্রীদের। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় অধিকাংশ বাস সড়কে নামেনি। আবার লাইসেন্স ছাড়া কোনো গাড়ির চালক স্টিয়ারিংয়ে বসেননি। গুলিস্তান, নতুনবাজার, মতিঝিল, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর, মিরপুর, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুরে কিছু বাস চলাচল করতে দেখা গেলেও মগবাজার, মহাখালী, গুলশান এবং রামপুরা, বাড্ডার রাস্তায় বাস ছিল অতিনগণ্য। এ দিন গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচলও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘সড়ক নিরাপদ রয়েছে, এমন আশ্বাসে নিশ্চিত হয়ে সড়কে গাড়ি নামিয়েছি। আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকেও দূরপাল্লার গাড়ি ছাড়ছে। সকাল থেকে যাত্রীর চাপ রয়েছে।’ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, ‘মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে ভোর ৫টায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। ভোর থেকে যাত্রীরা আসছেন। ভরে গেলেই গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। অন্যান্য জেলা থেকেও ঢাকার পথে আসছে গাড়ি।’

সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘গাড়ি চলাচল শুরুর খবর অনেকেই এখনো জানে না। এ কারণে বাস ছাড়ছে কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী বাড়বে। বাস চলতে মহাসড়কের কোথাও সমস্যা হচ্ছে না।’ গাবতলীতে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব রুটের টিকেট বিক্রি করছি। গাড়িও ছাড়ছে।’

গত রোববার রাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জানিয়েছিলেন, পুরো দেশের পরিস্থিতি এখন তাদের কাছে নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে। এ কারণে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সোমবার সকাল থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে বাস চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। গত ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কের এমইএসে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহতের পর রাজপথে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিন তাদের বিক্ষোভের মধ্যে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর থেকে ফিরে এলেও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় মালিক-শ্রমিকরা। বিভিন্ন স্থানে পরিবহন শ্রমিকদের সড়কে অবস্থান নিয়ে গাড়ি আটকাতেও দেখা যায়।

গত আট দিন রাজধানীতে বিক্ষোভ-সংঘাতের পর গতকাল সোমবার রাজপথে শিক্ষার্থীদের দেখা যায়নি। তবে বিভিন্ন মোড়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে। নিকেতনের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, ‘কাল (রোববার) রাতে খবর পড়ছিলাম, আজ সড়কে বাস চলবে। কিন্তু বাসের সংখ্যা তো খুবই কম।’ লাব্বায়েক পরিবহনের একটি বাসে করে সকালে শনির আখড়া থেকে ফার্মগেটে আসেন ইয়াসিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ কইরা বাসে উঠছি। সড়কে ম্যালা মানুষ খাড়ায়া আছে। বাস পাইতাসে না।’

এদিকে ঢাকা থেকে আন্তঃজেলা বাসগুলো নিয়মিত ছাড়ছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোরসহ প্রায় সব জেলা থেকেই ঢাকার উদ্দেশে বাস ছাড়ছে বলে আমাদের ব্যুরো ও প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত সড়ক পরিবহন আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধানের বিরোধিতা করে নারায়ণগঞ্জে সড়কে নামে পরিবহন শ্রমিকরা। বেলা ৩টার দিকে সড়ক অবরোধ করে তারা। প্রায় এক ঘণ্টা পর শ্রমিক নেতা ও পুলিশের চেষ্টায় সড়ক থেকে উঠে যায় সাজা কমানোর দাবি জানানো শ্রমিকরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads