বাংলাদেশ থেকে কম দামে বিশ্বমানের পণ্য আমদানির সুযোগ নিতে কম্বোডিয়ার ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন কম্বোডিয়ায় সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে উন্নতমানের পণ্য তুলনামূলক কম দামে রফতানি করছে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা বেড়েই চলছে। কম্বোডিয়া বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক পণ্য, চামড়া ও পাটজাত পণ্য এবং তামাকসহ প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করলে লাভবান হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী কম্বোডিয়ার ফোম প্যান হোটেলে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড, ফাইন্যান্স এ ডেভেলপমেন্ট অব গ্লোবাল ভেলু চেইন শীর্ষক তিন দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
কম্বোডিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী প্যান সোরাসাককে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ যৌথভাবে এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি ও আর্থিক পদ্ধতিতে এশিয়ার দেশগুলোর শক্তিশালী অবস্থান থাকা প্রয়োজন। সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক অসমতা দূর করতে দৃশ্যমান কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন। এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতি শক্তিশালী করতে নীতিগত ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি থাকা একান্ত দরকার। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অবদান রাখার সুযোগ থাকা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ সালে ২৫টি পণ্য ৬৮টি দেশে রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করত ৩৪৮.৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আজ বিশ্বের প্রায় ১৯৯টি দেশে ৭৪৪টি পণ্য রফতানি করে আয় করছে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল মধ্য-আয়ের দেশ। এ সময় রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রফতানি করে আয় হবে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, রেমিট্যান্স আসছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার নিজ অর্থে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রথম ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেতে যে তিনটি বিষয়ে সফলতা অর্জন করতে হয়, সে তিনটিতেই একসঙ্গে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হতে এটি বিরল দৃষ্টান্ত।
কম্বোডিয়ার ন্যাশনাল ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আয়োক মালি কর্মশালায় বৈদেশিক বাণিজ্য এবং এসএমই বিষয়ে কী-নোট উপস্থাপন করেন। কর্মশালায় বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের ১৪০ জন ব্যাংকার্স ও ব্যবসায়ী অংশ গ্রহণ করেন। এরমধ্যে বাংলাদেশের ৫২ জন ব্যাংকার্স রয়েছেন। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উভয় দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী উপস্থিত ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক ঘণ্টাব্যাপী বাণিজ্য বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন। বাণিজ্যমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্য তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতার বিষয় তুলে ধরেন।
কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন কম্বোডিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী প্যান সোরাসাক, স্ক্যাপের মাইক্রোপলিসি অ্যান্ড ফাইন্যান্সিং ফর ডেভেলপমেন্ট ডিভিশনের আলবাতো ইসগুট, সিইও- কা কি ম্যান এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম।