বরিশালে হবে দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

সরকার

বরিশালে হবে দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র : প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৯ অক্টোবর, ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র দক্ষিণাঞ্চলে নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ২৪০০’ মেগাওয়াট পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি রূপপুরে। ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগের কয়েকটি দ্বীপ সার্ভে করেছি। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে বরিশালের এই দ্বীপগুলোর একটিকে বেছে নিয়ে ভবিষ্যতে আরেকটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র আমরা করব।’ গতকাল সোমবার বিকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের (বিএসএমসি) সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বরিশালসহ সারা দেশে তার সরকার একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। ভোলা থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বরিশালে যেন গ্যাস আসে তার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা ইতোমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বলে জানান তিনি। এই অঞ্চলে কিছু শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা একান্তভাবেই প্রয়োজন এবং আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নিচ্ছি বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এ সময় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তৃতা দেন। আর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিক গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

তার সরকারের গবেষণায় প্রণোদনা দানের ফলে দেশীয় বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যেই লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধানবীজ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলমগ্ন ধান উৎপাদনেরও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, আর আমাদের গোপালগঞ্জের ধাপের ওপর করা সবজির চাষ বা ফ্লোটিং চাষ পদ্ধতি আমরা এ অঞ্চলসহ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছি। এক সময় শস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত বরিশালে যেন আবার সুদিনে ফিরতে পারে, সেজন্যও আমরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি।

জনগণের দোরগোড়ায় সব ধরনের সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তার সরকার ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে তাদের পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং শিক্ষা-দীক্ষা সব দিক থেকে মানুষ যেন আরো উন্নত হয়, সমৃদ্ধিশালী হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং যার উন্নয়নের ছোঁয়াটা দেশের মানুষ পাচ্ছে। জিনিসপত্রের দামও আমরা নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, তেমনি মানুষের মাথাপিছু আয়ও বৃদ্ধি করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীগুলো ড্রেজিং করে নৌপথগুলোকে আমরা পুনরায় চালু করছি। তার ফলে অল্প খরচে ব্যবসা-বাণিজ্যেও আরো সম্প্রসারণ হতে পারবে। যোগাযোাগের ক্ষেত্রে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। বরিশালসহ পুরো দক্ষিণ জনপদটিই তার সরকারের শাসনামলে আর অবহেলিত নয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি পায়রা সমুদ্রবন্দরের কথা উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে ওটা গভীর সমুদ্রবন্দরে রূপান্তরিত হবে এবং ইতোমধ্যেই সেখানে ১৩০০’ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এক হাজার বেডের করাসহ সরকারের অন্যান্য পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাশাপাশি আমাদের একটা পরিকল্পনা রয়েছে- প্রত্যেক বিভাগে আমরা একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করব। ইতোমধ্যে ৪টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমরা করেছি। এ অঞ্চলেও করব।

‘তবে, একটি কথা আমি স্পষ্ট বলে দেই, কোনো মেডিকেল কলেজকে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করব না। বিশ্ববিদ্যালয় হবে সম্পূর্ণ আলাদা। আর বিশ্ববিদ্যালয় হবে গবেষণামূলক, বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেবল পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন এবং গবেষণা থাকবে এবং সেখানে শুধু নার্সিং ট্রেনিয়ের ব্যবস্থাটা থাকবে, এটা সম্পূর্ণ আলাদাভাবে করব। সব মেডিকেল কলেজ সেখানকার স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এফিলিয়েটেড থাকবে.’ যোগ করেন তিনি।

পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর দয়াগঞ্জ ও ধলপুর সিটি কলোনিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য নির্মিত ৪টি বহুতল আবাসিক ভবনে ৩৪৫টি আবাসিক ফ্ল্যাটের উদ্বোধন করেন। বাসস

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads