ফুল চাষে বাংলাদেশের সম্ভাবনা বিপুল

বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষাবাদ হয়

সংরক্ষিত ছবি

কৃষি অর্থনীতি

ডিসিসিআইয়ের ওয়ার্কশপে অভিমত

ফুল চাষে বাংলাদেশের সম্ভাবনা বিপুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ মে, ২০১৮

বিশ্বে বর্তমানে ফুলের চাহিদা ৪০-৫০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু বৈশ্বিক বাণিজ্যে এ খাতে বাংলাদেশের অবদান দশমিক ৩ থেকে দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ফুলের বৈশ্বিক বাজার দাঁড়াবে ২০০ বিলিয়ন ডলারে। পরিবেশ, জলবায়ু, মাটি ফুল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী বিধায় এ খাতে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে  উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, নতুন নতুন চাষাবাদ পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ, কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ, এয়ারকন্ডিশন সুবিধা সংবলিত পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার প্রসারসহ এ খাতকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা দরকার।

গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ফুলের চাষাবাদ খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইউএসএআইডির অ্যাগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রকল্পের সহযোগিতায় ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে এ ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। ডিসিসিআই সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কশপে বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআইয়ের মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চায়না হর্টিকালচার বিজনেস সার্ভিসেসের সভাপতি হেইডি ওয়ারনেট।

ডিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ফুল ব্যবহারের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। পৃথিবীর ১৪৫ দেশ ফুল উৎপাদন ও বাণিজ্যিক চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত।  বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষাবাদ হয় এবং এ খাতের সঙ্গে প্রায় ২ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। তবে এ খাতের উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদানসহ চাষাবাদে আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হলে এ খাতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। 

চলতি অর্থবছর (২০১৭-১৮) বাংলাদেশের ফুল রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ১৩ মিলিয়ন ডলার। অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৮ মিলিয়ন ডলার এ খাত থেকে আয় হয়েছে বলে জানান তিনি।

মূল প্রবন্ধে চায়না হর্টিকালচার বিজনেস সার্ভিসেসের সভাপতি হেইডি ওয়ারনেট বলেন, বাংলাদেশের ফুল চাষকে শিল্প হিসেবে রূপান্তরের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোয় জলবায়ু এবং মাটির উৎপাদন গুণাগুণ অনুযায়ী বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষাবাদে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ফুল চাষাবাদ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বাজারজাতকরণ কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে। বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষাবাদ সফল করার জন্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, স্বল্প সুদে উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন প্রদান এবং নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রবন্ধকার।

ডিসিসিআইয়ের মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির বলেন, বাংলাদেশে ফুল চাষকে কৃষি খাতের একটি উপখাত হিসেবে শিল্পনীতির আওতাভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জলাশয়ে ভাসমান ব্যবস্থায় ফুলের চারা উৎপাদন এবং প্রতিপালন ব্যবস্থা স্থলের বিকল্প সম্ভাবনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলোর গ্রিন হাউজের ন্যায় বাংলাদেশ এ ব্যবস্থার সুযোগ ব্যয় বিবেচনা করে, লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের বিষয়ে গবেষণা প্রয়োজন।  

ডিসিসিআই পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, সাবেক সহ-সভাপতি এম আবু হোরায়রাহ, এভিসি প্রকল্পের চিফ অব পার্টি পল বেনডিক, বাংলাদেশস্থ ইউএসএআইডির কনট্রাকটিং অফিসার অনীরুদ্ধ হোম রয় প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads