খুলনার মেয়ে তাসলিমা তানিয়া। বাবা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ায় পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা দেশের বিভিন্ন জেলায়। তার উদ্যোক্তা হবার গল্পটা খানিক লম্বা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশের পর এক্সিম ব্যাংকে চাকরি জীবন শুরু করেন। জুনিয়র অফিসার হিসেবে পদোন্নতিতে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় কোলের বাচ্চাকে সময় দিতে হিমশিমে পড়ে যান। বাচ্চাকে টেককেয়ার করার মতো কেউ না থাকায় সিদ্ধান্ত নেন জব ছেড়ে দেওয়ার। যেই ভাবনা সেই কাজ। ছেড়ে দিলেন ব্যাংকের চাকরি। এরপর ঘরে বসে বাচ্চা নিয়ে কিছুটা অলস সময় পার করতে লাগলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে ব্লক, ড্রেস সেলাই করতেন। সবসময় ফ্যাশন নিয়ে কাজ করাটা শখ ছিল বলে শাড়ি বা ড্রেসকে একটু ভিন্নভাবে তুলে ধরতে চাইলেন। ভাবলেন পোশাক নিয়ে কিছু একটা শুরু করার। পরিবার ও স্বজনদের অনুপ্রেরণায় পোশাক নিয়ে ২০১৮ সালে নিজ বাসাতেই শুরু করেন নিজের উদ্যোগ। তারপর ফেসবুক পেজ খুলে শুরু করলেন নতুনভাবে যাত্রা। উদ্যোগের পেজের নাম দিলেন ‘মন রাঙিয়ে’।
নিজের কাছে জমানো ৮ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন তিনি। অনলাইন বিজনেসের লভ্যাংস দিয়ে অফলাইনে একটা শপ দেবার ইচ্ছা রয়েছে তার। দেশ ছাড়াও দেশের বাহিরে অনেক প্রোডাক্ট তিনি সাপ্লাই দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় পোশাক পাঠানোর অনুপ্রেরণা থেকে মোহাম্মদপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় আউটলেট দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রথমত তিনি নিজ হাতে সবকিছু সামলে নিলেও ব্যবসার পরিধি বাড়ার সাথে সাথে বেশ কয়েকজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি প্রথমে নিজের ডিজাইনে দেশীয় কুর্তি, সেলোয়ার কামিজ, শাড়ি নিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন ইন্ডিয়ান এক্সক্লুসিভ লিনেন, কাতান, জামদানি, গাদোয়াল, এক্সক্লুসিভ কিছু ব্রাইডাল কালেকশন, লেহেঙ্গাসহ বিভিন্ন পোশাক নিয়ে কাজ করছেন।
দেশীয় পণ্যকে বেছে নেওয়ার বিষয়ে তাসলিমা তানিয়া বলেন, পোশাক নিয়ে সবসময় কাজ করতে ভালো লাগত, সবসময় নিজেই অন্যরকম ডিজাইন করে একটু ফ্যাশনেবল কিছু পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতাম। আমার পছন্দের ডিজাইনের পোশাক অন্যরাও পরুক সেই চাওয়া থেকেই এই পোশাক নিয়ে কাজ শুরু করা।
অনলাইনে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তার পণ্য পাবার পাশাপাশি অফলাইনে পাওয়া যাবে। সেজন্য যেতে হবে মনসুরাবাদ হাউজিং আদাবর মোহাম্মদপুর।