পূর্বধলায় লাইব্রেরি ব্যবসায় ধস!

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

পূর্বধলায় লাইব্রেরি ব্যবসায় ধস!

  • পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ অগাস্ট, ২০২১

পূর্বধলায় লাইব্রেরি ব্যবসায় ধস নেমেছে। করোনাভাইরাস এ ব্যবসায়ীদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী তাদের বইয়ের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। বই ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো আর্থিক সংকটে পড়েছে। দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলা পর্যন্ত তাদের ব্যবসা সচল হবে না। বেচাকেনা না থাকায় স্টেশন রোডে প্রতিভা লাইব্রেরি, খাদ্যগুদাম রোডে চারু লাইব্রেরি, বড় বাজার মিনার লাইব্রেরিতে বই বিক্রির পাশাপাশি কনজুমার, কসমেটিকস, মনোহারীসহ নিত্য পণ্যের ব্যবসা করছেন।

পুস্তক ব্যবসায়ীরা জানায়, প্রায় ১৮ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এরপর ব্যবসায়ীদের কপালে শনির দশা ভর করে। দোকানগুলোতে পাঠ্যপুস্তক বিক্রি বন্ধ রয়েছে। সরকার স্কুল কলেজে অনলাইন ক্লাস ও ক্লাসভিত্তিক অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শুরু করে। অ্যাসাইনমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সহায়ক গাইডের প্রয়োজন পড়ছে না। শিক্ষার্থীরা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে সহজেই উত্তরপত্র খুঁজে পাচ্ছে এবং তা লিখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমা দিচ্ছে। তবে করোনার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অনলাইনের দিকে বেশি ঝুঁকেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট নিদের্শনা না থাকায় পরীক্ষা হবে কি হবে না তা এখনও অস্পষ্ট।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আরো সময় বন্ধ থাকলে এই সংকট আরো বেড়ে যাবে। এছাড়া অন্যান্য বছরগুলোতে এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বইয়ের বাজারে ব্যবসা জমজমাট হয়। এ বছর সেটিও বন্ধ। ব্যবসা বন্ধ থাকলেও দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী খরচ, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন খরচ দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসায় টিতে থাকা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন পুস্তক বিক্রেতারা। ছোট-বড় দোকানগুলোতে পড়ে আছে হাজার হাজার টাকার বই। গুদামগুলোতেও অবহেলা-অযত্নে গড়াগড়ি খাচ্ছে সহায়ক বইয়ের স্তুপ ও অন্যান্য সামগ্রী।

প্রতিভা লাইব্রেরীর পরিচালক মাসুদ পারভেজ বলেন, করোনাকালীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না থাকায় বই ব্যবসায় ধস নেমে এসেছে। দোকানভাড়াসহ অন্যান্য ব্যয় পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যান্য পেশাজীবিদেরকে প্রণোদনা দিলেও আমরা পুস্তক বিক্রেতাদেরকে কোন সহযোগিতা করা হয়নি। আমরা সরকারের কাছে ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুপ করার অনুরোধ জানাই।

পূর্বধলা পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ৫০টি ছোট-বড় লাইব্রেরী রয়েছে। পুস্তক বেচাকেনা নেই। কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ, দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করছেন এবং কেউ কেউ ব্যবসাও ছেড়ে দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, দেশে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সরকার। এর মধ্যে টিভি, রেডিও ও মোবাইল বা অনলাইনে ক্লাস চালু রাখা হয়। কিন্তু করোনার প্রকোপ না কমায় পর্যায়ক্রমে কয়েক দফায় বাড়ানো হয় স্কুল-কলেজের ছুটি। সর্বশেষ এখন আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই ছুটি বলবৎ রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads