ছোট্ট শহর হলেও রাজশাহীতে বিনোদনের জায়গার অভাব নেই। এসব জায়গার মধ্যে অন্যতম পদ্মার পাড়। রাজশাহীর সবকিছুই যেন পদ্মাকে ঘিরে। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা সব ঋতুতেই পদ্মার পাড়ে ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। আম পর্যটনে গিয়ে তাই এই পদ্মার পাড়ে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন। শেষ বিকালে সেখানে জড়ো হয় অসংখ্য পর্যটক। নগরীর বুলনপুর থেকে বড়কুঠি ও পঞ্চবটি হয়ে সাতবাড়িয়া দীর্ঘ প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মার পাড় এখন রাজশাহীবাসীর বিনোদনের সেরা ঠিকানা।
জলরাশির পাশে শান্তির সুবাতাস। সারাদিন হইচই, আনন্দে মাতামাতি, ছোট ছোট নৌকায় পাড়ি দেওয়া- এসব নিয়ে এখন মুখরিত পদ্মা নদীর পাড়। পদ্মার ধার ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াক ওয়ে। উন্নতমানের এ সড়ক দিয়ে সহজেই বিনোদনপিপাসুরা হেঁটে পদ্মার অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পারেন।
এখানে নদী ভ্রমণে আগ্রহীদের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকে ছোট আকারের নৌকা। এসব নৌকায় চড়ে পদ্মার বুকে ভেসে বেড়ানো স্থায়ী স্মৃতি হয়ে যাবে। রাতের আঁধারে রঙিন আলোয় পদ্মার পাড় যেন অন্যরূপ। ‘বহির্নোঙ্গর’ আর ‘সীমান্ত নোঙ্গর’ পেরিয়ে সামান্য হাঁটা পথ পেরুলেই চোখে পড়ে সুদৃশ্য গ্যালারির মুক্তমঞ্চ। এটি লালন শাহ পার্ক। আঁকাবাঁকা সিঁড়ির মতো সাজানো-গোছানো গ্যালারিতে বসে অনায়াসে দেখা যায় পদ্মার রূপ, পাল তোলা নৌকার ছুটে চলার অনুপম দৃশ্য। রাজশাহী সিটি করপোরেশন এ পার্কের দেখাশোনা করে। লালন শাহ পার্ক পেরিয়ে অদূরেই রয়েছে হজরত শাহ মখদুম (র.)-এর মাজার। নদীর পাড় ঘেঁষে এ মাজারের অবস্থান।
মাজার শরিফ থেকে সোজা পূর্বদিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় তরুণ-তরুণীদের হইচই, আড্ডা। পাখির কিচিরমিচির শব্দও কানে ভেসে আসে। এটি পদ্মা গার্ডেন। মিনি পার্কও বলা যায় এটিকে। এখানেও রয়েছে ফাস্টফুডের দোকান। পদ্মা পাড়ের বড়কুঠি ঘিরে গড়ে উঠেছে আধুনিক মানের কয়েকটি হোটেল। চা-কফি কিংবা স্ন্যাকস সবই মেলে হাতের কাছে। কফির কাপে চুমুক আর উঁচু থেকে নদী দেখার সুযোগ মিস করতে না চাইলে সেখানেই রয়েছে পাঁচতলা কফি বার।
রাজশাহীর বাস অথবা রেলস্টেশন থেকে যেকোনো স্থানীয় বাহনে চড়ে পদ্মার পাড়ে যাওয়া যায়। এ ছাড়া রাজশাহী ছোট শহর হওয়ায় আপনাকে কোনো জায়গা খুঁজে বের করতে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। স্থানীয় বাহনের চালকদের বললেই নিয়ে যাবে নির্ধারিত স্থানে।