হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া ইউনিয়নের মুড়ারআব্দা হাওরে সম্প্রতি আকর্ষণীয় পদ্মবিলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই পদ্মবিল পর্যটকদের যেন মায়াবী হাতছানি দিয়ে ডাকছে। জেলায় রেমা কালেঙ্গা, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, বিথঙ্গলের আখড়া, পাঁচ শতাধিক বছরের পুরনো শংকরপাশা মসজিদ, চা বাগান, লক্ষ্মী বাঁওড় জলাবন, বিখ্যাত কমলারানীর দিঘিসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনেক স্থান রয়েছে। এগুলোর সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন সন্ধান পাওয়া পদ্মবিল।
সম্প্রতি জেলা শহর থেকে মাত্র প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া ইউনিয়নের মুড়ারআব্দা হাওরে প্রায় ১ কিলোমিটার বিস্তৃত এই পদ্মবিলের সন্ধান মেলে। হবিগঞ্জসহ আশপাশ এলাকা থেকে লোকজন আসছেন এই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য। তবে সংরক্ষণ এবং জনসচেতনতার অভাবে এই সৌন্দর্য ধরে রাখা যাবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশবাদীরা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল পদ্মবিলের সন্ধান পাওয়ার ব্যাপারে জানান, আমি যতটা না আনন্দিত তার চেয়ে বেশি বিরক্ত এই ফুল ছেঁড়ায়। এটি অবশ্যই ভালো মানসিকতা নয়। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
স্থানীয় লোকজন জানান, কয়েক মাস ধরেই মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে পদ্মবিলের নাম। প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে সব বয়সের লোকজনই বিকালবেলা পদ্মবিল দেখতে আসছেন। শুধু সৌন্দর্য দর্শন নয়, কেউ ছিঁড়ে নিয়ে আসছেন ফুল। আবার মেয়েরা খোঁপায় বাঁধছেন এই ফুল।
পদ্মবিলটি ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে ছোট-বড় নৌকা। পুরো বিলটি ঘুরতে ছোট নৌকা ভাড়া নিচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, আর বড় নৌকায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা
এদিকে পদ্মবিলের কথা শুনে গত সোমবার দুপুরে বিলটি পরিদর্শনে যান হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। এ সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান এবং সংস্কৃতি, পরিবেশকর্মী ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনকালে ওই বিলটি সংরক্ষণের ব্যাপারে কাজ করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
সংবাদকর্মী শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, জেলাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এরই মধ্যে সম্প্রতি সন্ধান পাওয়া গেছে পদ্মবিলের, যা পর্যটকদের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। একবার এই পদ্মবিলে গেলে বারবার যেতে ইচ্ছা করবে।
সরকারি বৃন্দাবন কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র দেব জানান, পদ্মফুল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। পদ্মফুলের মধু চোখের অসুখের মহৌষধ। এর স্কন্ধ শ্বেতী ও হূদরোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মে অনেক মিথলজি আছে এই পদ্মফুল নিয়ে। তিনি আরো জানান, এই ফুল আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে।