ধর্ম

নামাজ যাদের ওপর ফরজ

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ৫ নভেম্বর, ২০১৮

একজন মানুষ ঈমান আনার পর যে কাজটি তার জন্য প্রথম ফরজ হয়ে যায়, তা হচ্ছে নামাজ পড়া। নামাজ এমন এক ইবাদত, যা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর প্রতিদিন পাঁচবার আদায় করা আবশ্যক। যতক্ষণ একজন ব্যক্তির হুশ থাকে, ততক্ষণ তাকে নামাজ আদায় করতেই হবে; তা সে যতই অসুস্থ থাকুক না কেন। দাঁড়িয়ে না পারলে বসে, বসে না পারলে শুয়ে, শুয়ে না পারলে ইশারা-ইঙ্গিতে হলেও নামাজ অবশ্যই পড়া চাই। ইসলামের অন্যান্য ইবাদত অসুস্থতার কারণে ছাড়া যায়; এই ক্ষেত্রে শুধু নামাজই ব্যতিক্রম। ওজুর পানি ব্যবহারে অসমর্থ হলে মাটি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করে হলেও নামাজ পড়তে হবে। ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে জিহাদ বা যুদ্ধ। এই যুদ্ধ চলাকালীনও নামাজ কাজা করার সুযোগ দেয়নি ইসলাম। যুদ্ধ করার সময় শক্তির প্রয়োজন হয়। তাই ইসলামে জিহাদের সময় রোজা ভঙ্গ করার সুযোগ নয় শুধু, এর ওপর তাগিদও দেওয়া হয়েছে। নামাজকে মুমিন ও কাফেরের মাঝে পার্থক্যকারী হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে, বান্দা এবং কুফরির মধ্যকার পার্থক্য হলো নামাজ (মুসলিম)। আর কোনো আমলের ব্যাপারে বলা হয়নি যে, তা আদায় না করলে কাফের হয়ে যাবে। শুধু নামাজের ব্যাপারেই বলা হয়েছে, যে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ ত্যাগ করল, সে কুফরি করল। একজন মানুষকে মুসলিম হিসেবে গণ্য করার জন্য নামাজকেই চিহ্ন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যে আমাদের নামাজের মতো নামাজ আদায় করবে, আমাদের কিবলাকে কিবলা মানবে এবং আমাদের জবাইকৃত পশুর গোশত আহার করবে, সেই মুসলিম; তার জন্য আল্লাহ এবং তার রসুলের জিম্মা রয়েছে, তোমরা আল্লাহর জিম্মায় হস্তক্ষেপ করবে না। অর্থাৎ যখন দেখবে একজন মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছে, তখন বুঝবে সে মুসলিম, তার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া যাবে না, তার জানাজায় শরিক হবে; তার মনে ইমান আছে কি নেই, সেটা দেখার মালিক আল্লাহ, তার নামাজ দেখেই তাকে মুসলিম গণ্য করা হবে।

ইসলামের সব বিধানের মধ্যে নামাজই ব্যতিক্রম। কম-বেশি সব ইবাদতই ছাড়া যায়। কিন্তু নামাজ ছাড়ার কোনো বিধান নেই। কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলেও তাকে নামাজ পড়তে হবে। এমনকি যদি কেউ বেহুশ থাকে তাহলেও তাকে সেই সময়ের নামাজ আদায় করতে হবে। যখন সে সুস্থ হয়ে উঠবে।

সেই সঙ্গে নামাজ শুধু আদায় করলেই হবে না, বরং মাসায়েল মোতাবেক নামাজের রোকনগুলো আদায় করার পাশাপাশি অন্তরের ইখলাস ও খুশু-খুযূ এবং নামাজের প্রতি মুহাব্বত এর পূর্ণাঙ্গতার জন্য অপরিহার্য। এই পূর্ণাঙ্গ নামাজের মাধ্যমে স্রষ্টার সঙ্গে সৃষ্টির নিকটতম সম্পর্ক তৈরি হয়। আল্লাহর নৈকট্য ও মুহাব্বত লাভের এবং প্রেমাষ্পদের সঙ্গে যোগাযোগ ও কথোপকথনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম নামাজ। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘আমাকে স্মরণ করার জন্য নামাজ পড়।’ (সুরা ত্বহা : ১৪)

 

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads