জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন পিস ক্যাফের প্রত্যয়ী প্রজেক্ট কর্তৃক আয়োজিত Sexual Reproductive Health & Rights ওয়ার্কশপটি অত্যন্ত জাঁকজমক ও বর্ণিল সমারোহে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।গুগল মিটে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন রুছাফা হোসাইন, ফিন্যান্স ম্যানেজার, পেপার ক্র্যানস অফ ভেনাস, হালিমা হাসিন,প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর, পেপার ক্র্যানস অফ ভেনাস, মাশাইক হাসান টিম ম্যানেজার, পেপার ক্র্যানস অফ ভেনাস। প্রোগ্রামটি অত্যন্ত তথ্যবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি আলোচিত হয়েছে। ওয়ার্কশপে প্রত্যয়ী প্রজেক্টের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর প্রবীণ ত্রিপুরা উনার মহামূল্যবান বক্তব্য উপস্থাপন করেন। আদিবাসীদের সুস্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তার কথাও বলা হয়েছে।
প্রথমেই রুছাফা হোসাইন অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থা ও মাতৃত্বকালীন সেবার কথা উপস্থাপন করেছেন।একজন নারীর গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার, বিশ্রাম, পরিমিত ঘুম সহ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন। অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থায় একজন নারীকে বিভিন্ন জটিলতার শিকার হতে হয়।এমনি মৃত্যুও হতে পারে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানইজেশন সংখ্যা দেখায় যে, প্রায় ৮৩০ জন মহিলা প্রতিদিন গর্ভাবস্থা এবং শিশুদের সম্পর্কিত প্রতিরোধযোগ্য কারণে মারা যায়৷ এই মৃত্যুর বেশিরভাগই ৯৯% উন্নত দেশগুলিতে ঘটে।ইউনিসেফ জানিয়েছে যে, প্রতি বছর মারা যাওয়া ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যা ৫.৯মিলিয়ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে জীবনের প্রথম ২৮ দিনের মধ্যে নবজাতক শিশুর মৃত্যুর সংখ্যা ২.৭ মিলিয়ন।
হালিমা হাসিন নারীদের ঋতুচক্রকালীন স্বাস্থ্য ও সচেতনতা বিশ্লেষণ করেছেন।এ সময়ে নারীদেরকে সুষম খাবার,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা,পরিমিত পানি পান করা ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর কথা বলা হয়েছে।
মাশাইক হাসান বাল্যবিবাহ ও নারী -পুরুষের সমতা নিয়ে চমৎকার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে গেলে,"কোনো কালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি, প্রেরণা দিয়াছো,শক্তি জুগিয়েছো বিজয় লক্ষ্মী নারী।"পৃথিবীতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অবদান অপ্রতুল ও অনন্য।বিশ্বের সভ্যতার উন্নত শিখরে নারীদের পদচারণা প্রায়শই দেখা যায়।এর পাশাপাশি আমাদের সমাজে বাল্যবিবাহের রীতি এখনো অনেক জায়গায় প্রচলিত। এতে একটি কিশোরীর শায়িত স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে পড়ে।বাল্যবিবাহ একটি কুসংস্কার। সমাজ থেকে এই কুসংস্কার দূরীকরণে সকলকে সম্মুখে এগিয়ে আসতে হবে। নারীকে তার যথোপযুক্ত আসনে অধিষ্ঠিত করতে হবে, তবেই তো এ সমাজ তথা দেশ সভ্যতার উন্নত শিখরে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।
প্রত্যয়ী প্রজেক্টের প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর সানজিদা ইসলাম ইরা ভলান্টিয়াদের উদ্দেশ্যে উনার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উদ্দীপ্ত তারণ্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন।অনুষ্ঠানটি অসংখ্য সজীব, নবীন ও তরুণ পার্টিসিপ্যান্ট নিয়ে অত্যন্ত বৈচিত্র্যের মাধ্যমে সুন্দরভাবে সফল হয়েছে।