ধর্ষণের পর ইটের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে পাঁচ বছরের শিশু তাফানুন্ম তাহিকে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তাহির মা আবিদা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে হঠাৎ আমার মেয়ে তাহিকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বিকালে কাশবনে ওর মরদেহ পাই। তখন ভাবছিলাম কোনো শত্রুও কি এমন করে? ওইটুকু বাচ্চাকে ধর্ষণের পর ইটের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এমন ঘটনা যেন আর কারো সন্তানের বেলায় না ঘটে।’
তাহি খুবই ট্যালেন্ট ছিল উল্লেখ করে আবিদা আরো বলেন, অন্য বাচ্চারা যখন টিভিতে কার্টুন দেখত আমার মেয়ে তখন ক্রাইম প্রোগ্রাম ‘সিআইডি’ দেখত। ওর মতো মেয়েকে এভাবে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা মানা যায় না।
এ সময় আবিদা সুলতানার পাশে বসা ছিলেন তার স্বামী মো. হুমায়ুন কবির। সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার আদরের বাচ্চা হারাইছি। সরকারের কাছে আমার আবেদন, ওই ঘাতকের যেন ফাঁসি নিশ্চিত করা হয়। গত ২৭ জানুয়ারি গাজীপুর গাছা থানার শরিফপুর এলাকায় একটি কাশবন থেকে তাহির বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব। টঙ্গী বোর্ডবাজার এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. রিফাত (১৬) নামে এক তরুণকে আটক করে র্যাব-১-এর একটি দল।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত জানায়, স্থানীয় এক মাদরাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে রিফাত। তাহির বাবার টার্কি মুরগির ফার্মে চাকরি করত রিফাত। সে সুবাদের তাহিদের বাসায় থাকত সে। তাহি সম্পর্কে রিফাতের খালাতো বোন। ফার্ম থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাহির সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয় রিফাতের। তাহি নানিকে খুঁজছে বললে রিফাত নানির সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে পাশের কাশবনে নিয়ে যায় তাহিকে। সেখানে ধর্ষণ করে ইটের আঘাতে মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করে রিফাত। পরে পালিয়ে যায় সে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ান বিন কাশেম বলেন, রিফাত এ বয়সে যে বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে তা সত্যিই উদ্বেগের। তার মোবাইলে পর্নোগ্রাফির ভিডিও পাওয়া গেছে। র্যাবের কাছে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে রিফাত। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।