সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতায় ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা

পানিতে ডুবে যাওয়া জমির ধান কেটে নৌকায় করে নিয়ে আসছে এক কৃষক

ছবি- মহিউদ্দিন আল আজাদ

কৃষি অর্থনীতি

ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতায় বড় ক্ষতির শঙ্কা

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ মে, ২০১৮

টানা কয়েকদিনের ঝড়বৃষ্টির কারণে চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জলাবদ্ধতার কারণে দ্রুত ফসল ঘরে আনার চেষ্টা করছে কৃষক। তবে দিনমজুরের অভাবে সেটাও করা যাচ্ছে না। আর অধিকাংশ ফসল আনতে হচ্ছে নৌকায়  করে।  এতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে অনেক বেশি।

চলতি মৌসুমে মাঠে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করলেও প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে সব আশা পণ্ড হতে বসেছে। 

শুক্রবার সরজমিনে সেচ প্রকল্পের গিয়ে দেখা যায়,  পাকা ও আধাপাকা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে কৃষকরা। এছড়া পানিতে ডুবে ভুট্টার গাছ মরে গেছে। 

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,  এ মৌসুমে ১ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে ভূট্টা এবং ৯ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

তালতলী গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান বেপারীর বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে নৌকা দিয়ে জমিতে ধান কেটে ডাঙ্গায় নিয়ে যাই। এতে আমাদের পরিশ্রম ও খরচ হচ্ছে অনেক বেশি।'

ঘনিয়ারপাড় গ্রামের ভুট্টা চাষি রহিম উদ্দিন মোল্লা (৪০) বলেন, ‘দুলাল কান্দি বিলে তিনি ১শ ১০ শতক জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। জলাবদ্ধতার কারণে জমিতে পানি আটকে থাকায় ভুট্টা গাছ ও ফলন নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।’

মরাধন বিলের কৃষক আরিফ উল্যাহ মাষ্টার বলেন, ‘১৩ শতক জমিতে ধান হয়েছে মাত্র ১০ কেজি।’

অলিপুর নয়াকান্দি গ্রামের কৃষক শাহালম লস্কর বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে বাধ্য হয়ে আধাপাকা ধান কাটছি। ধান যদি না পাই গো-খাদ্য তো হবে।’

মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবস্থাপনা অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক সরকার আলা উদ্দিন জানান, কালীপুর, উদ্দমদী পাম্প মেশিনগুলো দিন রাত পানি টানছে। তবে ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে পাম্প মেশিন বন্ধ থাকে।

এ বিষয়ে মেঘনা ধনাগোদা (পাওর) বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অকারণে পাম্প মেশিন বন্ধ থাকে না। ঝড় বৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ না থাকলে হয়তো বন্ধ থাকতে পারে।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালা উদ্দিন বলেন, এ মৌসুমে বোরো ধানের ফলন অনেক ভালো। বড় ধরনের প্রাকৃৃতিক দুর্যোগ না হলে উৎপাদন লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে। তিনি জানান, এ মৌসুমে বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার ৮শ ২৯ মেট্রিক টন। ভুট্টার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৩শ মেট্রিক টন।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, এ মৌসুমে বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষক ঠিক মতো ফসল ঘরে তুলতে পারলে ন্যায্য মূল্য পাবে। ধনাগোদা সেচ প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মাঠে পানি জমে আছে। তবে তিনি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব ব্যাপারে যোগাযোগ রাখছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads