দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে আছে ৫ শতাধিক যান

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সংকট, তীব্র স্রোত ও চ্যানেলের দুরত্ব বেড়ে যাওয়ায় এ রুটে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। তেকরে ঘাট এলাকায় আটকা পড়ছে শতশত যানবাহন। ছবিটি শুক্রবার বিকেলে দৌলতদিয়ো এলাকা থেকে তোলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

ফেরি সংকটে পারাপার ব্যাহত

দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে আছে ৫ শতাধিক যান

  • গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৮ জুন, ২০১৯

ফেরি সংকটের কবলে পড়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। সেই সাথে তীব্র স্রোত ও চ্যানেলের দুরত্ব বেড়ে যাওয়ায় এ রুটে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। এতেকরে ঘাট এলাকায় আটকা পড়ছে শতশত যানবাহন। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রী, পরিবহন চালকসহ সংশ্লিষ্টরা।

আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা নাগাদ দৌলতদিয়া প্রান্তে ৫ শতাধিক বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। এর মধ্যে মালবাহী ট্রাকের সংখ্যাই বেশী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে গত এক সপ্তাহ ধরে ফেরি সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। রুটের ২০টি ফেরির মধ্যে ৩টি রোরো (বড়) ও ১টি মাঝারী ফেরির প্রপেলসান সিস্টেম (তলদেশের অংশ) সংস্কারের জন্য এক সপ্তাহ আগে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। ফেরিগুলো হচ্ছে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, ভাষা শহীদ বরকত ও কাবেরী। অপর যে ১৬টি ফেরি চালু আছে এর মধ্যে প্রতিদিনই ১/২টি ফেরি কোন না কোন সমস্যার কারণে বন্ধ থাকছে। বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে যান্ত্রিক সমস্যা রোরো ফেরি শাহ জালাল হঠাৎ বিকল হয়ে পড়লে সেটিকে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতিতে নেয়া হয়। শুক্রবার সকালের দিকে বিকল হয় কেটাইপ ফেরি হাসনা-হেনা। শুক্রবার দুপুরের নাগাদ হাসনা হেনা চালু হলেও বিকেল ৪টা পর্যন্তও শাহ জালাল চালু হয়নি।

এদিকে পদ্মা-যমুনা নদীতে গত কয়েকদিনে অত্যাধিক পানি বেড়ে তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ফেরি চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। প্রচণ্ড স্রোতের কারণে পাটুরিয়া ঘাট সোজাসুজি চ্যানেলে পলি পড়ে চ্যানেলটি সরু ও নাব্যতা কমে গেছে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই চ্যানেলের পাশে অগভীর পানিতে আটকে যায় রোরো ফেরি আমানত শাহ। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ফেরিটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। একইভাবে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ চ্যানেলে আটকে যায় রোরো ফেরি শাহ মখদুম। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ফেরিটিকে উদ্ধার করা হয়। চ্যানেলের এ সমস্যার কারণে দুপুরের পর থেকে পাটুরিয়ার ৫নং ঘাটের ভাটিতে নতুন করে তৈরী করা চ্যানেলটি খুলে দেয়া হয়েছে। ওই চ্যানেল দিয়ে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহন প্রবেশ করছে এবং পাটুরিয়া ঘাট থেকে সোজা ওয়ানওয়ে চ্যানেল দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ফেরি ছেড়ে যাচ্ছে। প্রায় ১ কিমি ভাটির চ্যানেলটি ঘুরে পাটুরিয়া ঘাটে পৌছাতে প্রতিটি ফেরির ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় বেশী লাগছে।

শুক্রবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারী পর্যন্ত প্রায় ৩ কিমি জুড়ে দুই সারিতে অন্তত ৫ শতাধিক যানবাহন নদী পারের অপেক্ষায় আটকে আছে। এর মধ্যে অন্তত সাড়ে ৩শ যানবাহন রয়েছে বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ট্রাক। শতাধিক গাড়ী রয়েছে গত দুই দিন ধরে আটকা।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রণি জানান, রুটের ৪টি ফেরি সংস্কারে গেছে। সেগুলো দ্রুত সংস্কার হয়ে আসা দরকার। যে ১৬টি ফেরি চালু আছে তারমধ্যে প্রায় প্রতিদিনই ১/২টি ফেরি কোন না কোন কারণে বন্ধ থাকছে। সাথে তীব্র ¯্রােত ও পাটুরিয়া নতুন চ্যানেল ঘুরে চলাচল করায় যানবাহন পারাপার কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে ঘাট এলাকায় যানবাহন আটকে পড়ার ঘটনা ঘটছে।

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নাজমুল হোসেন জানান, ঘাটে যানবাহনের বাড়তি চাপ থাকায় আমরা অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আটকে রেখে যাত্রীবাহী বাস ও পচনশীল পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে নদী পার করছি। এর মধ্যে সুযোগ মতো আটকে থাকা ট্রাকগুলোকে পার করছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads