দৌলতদিয়ার ৩নম্বর ফেরি ঘাট নদী গর্ভে বিলীন

৩নম্বর ঘাট চালু করতে বিআইডব্লিউটিএ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে

ছবি : বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

দৌলতদিয়ার ৩নম্বর ফেরি ঘাট নদী গর্ভে বিলীন

  • গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৬ অক্টোবর, ২০১৯

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকায় আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়ার ৩নম্বর ফেরি ঘাটসহ ওই এলাকার অন্তত ২শ ফুট এলাকা নদীতে বিলীন হওয়ায় ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। এর আগে ভাঙনের কারণে ১ ও ২ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে যায়।

বর্তমানে ছয়টির মধ্যে মাত্র তিনটি ঘাট চালু রয়েছে। ঘাট সংকটের কারণে অলসভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে ৪টি ফেরি। এতে যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে গাড়ির চাপ পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট অফিস জানায়, পদ্মা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় এবং বুধবার বিকেল থেকে হালকা ও মাঝারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদী উত্তাল হয়ে উঠে। ভাঙতে শুরু করে নদীর পাড় ও তীরবর্তী এলাকা। বৃহস্পতিবার ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনের নীচের অংশসহ ওই এলাকার অন্তত ২শ ফুট হঠাত করে দেবে যায়। ইতিপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও তা নিমিষেই ৩০-৪০ ফুট গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় ফেরিঘাটটি। বর্তমানে ৪, ৫ ও ৬নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরিতে যানবাহন ওঠানামা করছে। এরমধ্যে ৬ নম্বর ঘাটটি শুধুমাত্র ছোট ফেরির জন্য হওয়ায় সেখানে কোন বড় ফেরি ভিড়তে পারছে না। এর আগে ভাঙন তীব্র হওয়ায় ৪ অক্টোবর ১নম্বর এবং পরদিন ৫ অক্টোবর ২নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়ক বিলীণ হওয়ায় ঘাট দুটি বন্ধ হয়ে যায়। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও এখন পর্যন্ত ওই দুটি ঘাট চালু করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিন শনিবার দুপুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার ছয়টি ঘাটের মধ্যে শুধুমাত্র ৪, ৫ ও ৬নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। ১, ২ এবং ৩নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে। ৩নম্বর ঘাট চালু করতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে।

এ সময় বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচার নির্বাহী প্রকৌশলী নিজামউদ্দিন পাটোয়ারী জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আমরা ঘাটটি দ্রুত সচল করার লক্ষে পূণরায় জিও ব্যাগ ফেলে পন্টুন স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছি। নদীর তীরবর্তী এলাকা অনেক গভীর ও খাড়া হওয়ায় কাজটি করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। পন্টুনের নীচের অংশ সম্পন্ন করার পর পাশের ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলানো শুরু করা হবে। শনিবার বিকেল নাগাদ ৩২শ ব্যাগ বালু ফেলা হয়েছে। তিনি দাবী করেন।

এদিকে দৌলতদিয়ায় মাত্র ৩টি ফেরিঘাট চালু থাকায় ঘাট সংকটে শুক্রবার হতে বসিয়ে রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এ রুটের ৪টি ফেরিএগুলো হচ্ছে রোরো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, কেরামত আলী, শাহ জালাল ও ইউটিলিটি ফেরি বনলতা। শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ ৭টি ইউটিলিটি (বড়) ও ৬টি ছোট মিলিয়ে চলছিল মাত্র ১৩টি ফেরি। ফেরি কমে যাওয়ায়

গাড়ি দ্রুত পার হতে না পেরে বেলা বাড়ার সাথে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঢাকাগামী গাড়ির দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার ৫টা নাগাদ দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় প্রায় ৩কিলোমিটার জুড়ে ৩ শতাধিক যানবাহন আটকে থাকতে দেখা যায়। এদের মধ্যে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যাই বেশি। পাটুরিয়া ঘাটেও একইভাবে লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি দেখতে শুক্রবার বিকেলে দৌলতদিয়া ঘাট পরিদর্শনে আসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সচিব ও বিআইডব্লিউটিসি’র জিএম (বাণিজ্য) মো. আশিকুজ্জামানসহ উর্দ্বতন কর্মকর্তারা।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, পদ্মায় দ্রুত পানি কমে পাড় খাড়া হয়ে যাওয়ায় এবং দুই দিনের বৃষ্টির সাথে বাতাস থাকায় নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করে। যে কারণে নদী তীরবর্তী ঘাট এলাকার বেশকিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের কারণে ৩নম্বর ঘাট বৃহম্পতিবার সন্ধ্যায় বিলীন হয়ে গেছে। এর আগে ১ ও ২নং ঘাট বিলীন হওয়ায় চালু আছে মাত্র ৩টি ঘাট। ঘাট সমস্যায় বসিয়ে রাখা হয়েছে ৪টি ফেরি। এ সকল কারণে মহাসড়কে শতশত যানবাহন নদী পার হতে না পেরে আটকা পড়ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads