দেশে চালু হলো সিম্ফনির মোবাইল সংযোজন কারখানা

আশুলিয়ায় সিম্ফনির স্মার্টফোন সংযোজন কারখানা উদ্বোধনের পর প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার

সংগৃহীত ছবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

দেশে চালু হলো সিম্ফনির মোবাইল সংযোজন কারখানা

বাজারে আসবে অক্টোবরে

  • শাহাদাত হোসেন
  • প্রকাশিত ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

দেশের মাটিতেই এবার স্মার্টফোন সংযোজন কারখানা চালু করেছে দেশীয় ব্র্যান্ড সিম্ফনি। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গতকাল রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামের এ কারখানাটি উদ্বোধন করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, কারখানা ঘুরে দেখলাম এখানে কর্মরত বেশিরভাগ কর্মীই একেবারে তরুণ। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে এখানে কাজ করতে পেরে তারা বেশ উচ্ছ্বসিত। বিষয়টি আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক। এই কারখানা অবৈধপথে আমদানি করা স্মার্টফোনের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন দেশেই মানসম্মত স্মার্টফোন তৈরি হচ্ছে। গ্রাহকদের আর অবৈধপথে আমদানি করা স্মার্টফোনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।

অবৈধপথে স্মার্টফোন আমদানি বন্ধ করা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিটিআরসিতে (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) অত্যাধুনিক ল্যাব স্থাপিত হচ্ছে। সেখানে খুব সহজেই শনাক্ত করা যাবে কোন হ্যান্ডসেটটি বৈধপথে এবং কোনটি অবৈধপথে আমদানি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অবৈধপথে স্মার্টফোন আমদানি বন্ধ করা সম্ভব হবে।

রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ার জিরাবোতে প্রায় ৫৭ হাজার বর্গফুট এলাকায় স্থাপিত কারখানাটি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এডিসন গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদ বলেন, এ স্মার্টফোন কারখানার মাধ্যমে সরকার ও জনগণ লাভবান হবে। এতে যেমন অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, তেমনি এ খাতের জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করা যাবে। এ ছাড়া বিদেশ থেকে স্মার্টফোন আমদানি কমার পাশাপাশি রফতানিও বাড়বে।

এ সময়  বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বলেন, অনেকেই বলে থাকে দেশ উন্নয়নশীল হচ্ছে। কিন্তু আমি তো মনে করি বাংলাদেশ এখন উন্নত দেশ। উৎপাদনশীলতায় দেশ অনেক এগিয়েছে। তবে কিছু কিছু সমস্যা রয়েছে যা এক দিনে সমাধান হবে না, একটু সময় প্রয়োজন হবে। দেশীয় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কারখানায় মানসম্মত স্মার্টফোন তৈরি করছে কিনা সেটি পরীক্ষার জন্য বিটিআরসিতে একটি গবেষণাগার তৈরি করার জন্যও মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিটিআরসির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ বলেন, দেশের বাজারে অন্তত ২০ শতাংশ স্মার্টফোন অবৈধভাবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানি করা হয়ে থাকে। বিটিআরসি এক্ষেত্রে চাইলেও তেমন কিছু করতে পারে না। এর কারণ হলো শুল্কের বিষয়টি রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন। তবে দেশেই স্মার্টফোন তৈরির মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।

সিম্ফনির এ কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ। এ ছাড়া কারখানা পরিচালনায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের দেশ ও দেশের বাইরে প্রশিক্ষণ নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বর্তমানে চার শতাধিক কর্মী সেখানে কাজ করছে। তাদের মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। কারখানাটিতে প্রোডাকশন লাইনের পাশাপাশি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, মান নিয়ন্ত্রণ ও টেস্টিং ল্যাব রয়েছে। প্রাথমিকভাবে বছরে ৩০ থেকে ৪০ লাখ হ্যান্ডসেট এখানে সংযোজনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সিম্ফনির। স্মার্টফোনের পাশাপাশি ফিচার ফোনও সংযোজন করা হবে এ কারখানা থেকে। কারখানায় সংযোজিত হ্যান্ডসেট আগামী মাস নাগাদ বাজারে আসতে পারে বলেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads