দিল্লিতে আজ লর্ড কার্লাইলের সংবাদ সম্মেলন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবী লর্ড কার্লাইল

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

কঠোর গোপনীয়তা

দিল্লিতে আজ লর্ড কার্লাইলের সংবাদ সম্মেলন

  • রেজাউল করিম লাবলু
  • প্রকাশিত ১২ জুলাই, ২০১৮

কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবী লর্ড কার্লাইল আজ লন্ডন থেকে ভারতে পৌঁছাবেন। এরপর দিল্লিতে তিনি সংবাদ সম্মেলনে হাজির হবেন। খালেদা জিয়াকে যে মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সেটাই তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবেন। বিএনপির একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ওই সূত্র জানায়, সংবাদ সম্মেলনের স্থান কৌশলগত কারণে গোপন রাখা হয়েছে। কারণ এর আগে একটি ভেন্যু বাতিল করা হয়েছে। হঠাৎ করেই সংবাদ সম্মেলন স্থলে পৌঁছাবেন লর্ড কার্লাইল। সঙ্গে থাকবে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। সংবাদ সম্মেলনে ভারতের সাংবাদিকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা থাকবেন। পুরো অনুষ্ঠান আয়োজনে এরই মধ্যে ভারতের একটি কনসালট্যান্ট কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লর্ড কার্লাইলের ভারত সফরের বিষয়টি লন্ডনে বসে দেখভাল করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে সহযোগিতা করতে লন্ডন যান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও আরেক নেতা হুমায়ুন কবির। আর ভারতের উদ্দেশে গতকাল ঢাকা ছেড়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

ঢাকা ছাড়ার আগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, লর্ড কার্লাইলের ভারত সফর ও সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি দেখভাল করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদিন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, তাদের ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও, যেতে পারছেন না। তবে দলের প্রতিনিধিদল যাবে সেখানে।

লর্ড কার্লাইল চেয়েছিলেন ১৩ জুলাই দিল্লির ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবে (এফসিসি) সংবাদ সম্মেলন করতে। সে উদ্দেশ্যে ওই ক্লাবের মিলনায়তনটি বুক করাও হয়েছিল। কিন্তু একই দিনে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতও ক্লাবে আসছেন, এই যুক্তিতে শেষ মুহূর্তে এফসিসি তার বুকিং বাতিল করে দেয়। এমনকি তার ভিসা পাওয়ার বিষয়টিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। কারণ এ খবর জানাজানি হওয়ার পরই ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন দিল্লির কাছে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। এমনকি, দু-তিন দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম স্বয়ং ভারত সফরে গিয়ে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর এবং রাম মাধবের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যে যুক্তি তুলে ধরা হয়েছিল তা হলো, লর্ড কার্লাইল খালেদা জিয়ার হয়ে মামলা লড়তে আর্থিকভাবে চুক্তিবদ্ধ। ফলে দিল্লিতে তিনি যেসব কথা বলতে আসছেন, সেগুলো একটা ‘পেইড রাজনৈতিক ক্যাম্পেইন’র অংশ, যার নিশানা হলো বাংলাদেশ সরকার। ঢাকার পক্ষ থেকে এমন কথাও বলা হয়েছে, এখন বাংলাদেশ যেভাবে তাদের ভূখণ্ডকে ভারতবিরোধী কাজে ব্যবহূত হতে দেয় না, একইভাবে ভারতেরও উচিত নয়, দিল্লির মাটিকে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারের জন্য ব্যবহূত হতে দেওয়া।

বাংলাদেশ সরকারের এমন তৎপরতার মধ্যেই ভারতে অবস্থান করছিলেন তারেক রহমানের এক প্রতিনিধি। তিনি ভারত সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। শুধু তা-ই নয়, লর্ড কার্লাইলের সংবাদ সম্মেলনের সার্বিক বিষয় দেখভাল করছেন তিনি।

তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ ওই নেতা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, লর্ড কার্লাইল দিল্লি পৌঁছাবেন আজ। তার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল মিন্টু উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে জুন মাসে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল ভারত সফর করে। এর নেতৃত্ব দেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও হুমায়ুন কবির। তাদের এ সফর নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের গণমাধ্যমে বেশ আলোচনা হয়।

ফেব্রুয়ারি মাসে খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার কিছুদিন পরই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন, লর্ড কার্লাইলকে তাদের নেত্রীর আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads