দিনের বেলায় রাতের আঁধার

সংগৃহীত ছবি

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

বৈরী আবহাওয়া থাকবে শনিবার পর্যন্ত

দিনের বেলায় রাতের আঁধার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ মে, ২০১৮

রাজধানীর ভোরটা সূর্যের আলোয় আলোকিত হচ্ছে প্রতিদিনই। আকাশটা কখনো থাকে স্বচ্ছ, কখনো বিক্ষিপ্ত কালো মেঘে আচ্ছন্ন। মেঘের ফাঁক গলে কখনো কখনো দেখা যায় সূর্যকিরণ। কিন্তু অল্পক্ষণেই পাল্টে যায় এ দৃশ্য। ভয় জাগানো কালো মেঘে গিলে খায় ঢাকার আকাশ। মাত্র ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যেই সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসে রাজধানীজুড়ে। চলতি বৈশাখের প্রায় প্রতিদিনই এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায়, যা ছিল  বৃহস্পতিবারও।

কালবৈশাখীর প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী বৃহস্পতিবারের মতো আজ শুক্রবারও আবহাওয়ার এমন বিরূপ প্রভাব থাকতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ শুক্রবার রাজধানী ঢাকাসহ রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বা আরো বেশি বেগে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে এসব অঞ্চলে বজ্রবৃষ্টিসহ ভারী বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনাও রয়েছে। এসব অঞ্চলের নদীগুলো স্বাভাবিকের তুলনায় উত্তাল থাকার কারণে নৌবন্দরগুলোকে দুই নম্বর হুশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই রাজধানী ঢাকার আকাশ ছিল কালো মেঘে ঢাকা। সকাল ১০টা থেকে সূর্যের আলো হারিয়ে গিয়ে দিনের বেলায় নেমে আসে রাতের অন্ধকার। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দমকা হাওয়াসহ কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয় বজ্রবৃষ্টি। আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় নেত্রকোনায়, ৪৩ মিলিমিটার।

মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাতে রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদও রাজধানীর ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর, শুক্রবাদ, সোবহানবাগ, মতিঝিল শাপলা চত্বর, আরামবাগ নটরডেম কলেজ, শাহজাহানপুর, বঙ্গভবনের সামনে থেকে গুলিস্তান স্কয়ার মাকের্ট এলাকার রাস্তায় এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত পানি জমে ছিল।

এদিকে, ঝড়ো হাওয়ার কারণে সদরঘাট কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে সকালের অধিকাংশ লঞ্চই ছেড়েছে দুপুর দেড়টার পর। কোকো লঞ্চের ব্যবস্থাপক কিবরিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত যেসব লঞ্চ চাঁদপুর, নোয়াখালী ও বরিশাল রুটে ছেড়ে যায়, তার অধিকাংশই ঝড়ের কারণে দেরিতে ছেড়ে গেছে।

বাংলাদেশের খবরের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটের অধিকাংশ যাত্রীবাহী লঞ্চ ছাড়তে দেয়নি প্রশাসন। নদী উত্তাল থাকায় ফেরি চলাচলও ছিল সীমিত।

আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান খান জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে আজ (শুক্রবার) এবং আগামীকালও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানতে পারে। সেই সঙ্গে বজ্রবৃষ্টিসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগ এবং কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলাগুলোর কোথাও কোথাও দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এসব এলাকায় বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads